তিন দিনের প্যাকেজ ট্যুর আনল রাজ্য পর্যটন উন্নয়ন নিগম
গঙ্গার বুকে বোটে চড়ে কলকাতা ও শহরতলি দেখার অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। এক-আধ বেলার জন্য এমন মনোরম পর্যটনের আয়োজন এর আগে করেছে রাজ্য পর্যটন দপ্তর। কিন্তু এবার তারা একটু অন্যপথে হাঁটল। কলকাতা সংলগ্ন এলাকায় গঙ্গার ধারে যা-কিছু দ্রষ্টব্য, এবার সেসব দর্শনের জন্য তিন দিনের প্যাকেজ আনল রাজ্য পর্যটন উন্নয়ন নিগম। কখনও গঙ্গাবক্ষে ভেসে, আবার কখনও নিগমের নিজস্ব অতিথিশালায় থেকে ওই পর্যটনের অংশীদার হতে পারবেন পর্যটকরা। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে বহু মানুষ বেশি দূর বেড়াতে যেতে চাইছেন না। বাড়ির কাছেই চেনা এলাকায় ঘুরে তাঁরা পর্যটনের স্বাদ নিতে চাইছেন। সেইসব ভ্রমণ পিপাসুদের জন্যই এই নতুন প্যাকেজ, জানাচ্ছে পর্যটন উন্নয়ন নিগম। দিন দুই-তিনেকের সে-সব ট্যুরের তালিকায় আছে ঝাড়গ্রাম ও সুন্দরবনও। করোনা সংক্রমণের পর থেকে এই প্রথম এমন প্যাকেজ ট্যুর শুরু হল, জানাচ্ছেন নিগমের কর্তারা।
গঙ্গাবঙ্গে ভ্রমণের প্যাকেজটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘এক্সপেরিয়েন্স গ্যাঞ্জেস’। সেই তালিকায় কী কী থাকছে? নিগম কর্তারা বলছেন, কলকাতা থেকে কখনও বিলাসবহুল লঞ্চ, আবার কখনও বাতানুকূল বাসে চড়ে বারাকপুর, চন্দননগর, ব্যান্ডেল, দক্ষিণেশ্বর, বেলুড় প্রভৃতি জায়গায় ঘুরবেন পর্যটকরা। এই এলাকাগুলিতে মন্দির, চার্চ বা মসজিদের পাশাপাশি যে-সব ঐতিহাসিক জায়গা আছে, সেগুলি দর্শন করবেন তাঁরা। সবটুকুই হবে করোনা সংক্রান্ত নিয়ম মেনে। তিনদিন-দু’রাত্রির এই প্যাকেজে রাত্রিবাসের ব্যবস্থা থাকছে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের নিজস্ব লজে। সঙ্গে থাকছে খাওয়াদাওয়ার রাজকীয় ব্যবস্থা। আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে এই ট্যুর শুরু হবে। খরচ মাথাপিছু ৮ হাজার ৫৯৯ টাকা।
ঝাড়গ্রামকে কেন্দ্র করে যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছে নিগম, সেটিও তিনদিন-দু’রাত্রির জন্য। খরচ ৭ হাজার ৭৯৯ টাকা। প্যাকেজে থাকছে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়িতে থেকে কনকদুর্গা মন্দির, সাবিত্রী মন্দির, চিল্কিগড় রাজবাড়ি দর্শন। এছাড়াও তারাফেনি নদী, ঘাগরা ঝর্ণা, কাঁকড়াঝোর, কেতকী ঝর্ণা, আদিবাসী মিউজিয়াম প্রভৃতি ঘুরিয়ে দেখানো হবে পর্যটকদের। কলকাতা থেকে ঝাড়গ্রাম যাওয়া এবং ফেরার ব্যবস্থা এসি বাসে।
সুন্দরবন বেড়ানোর জন্য স্পেশাল প্যাকেজ প্রতিবারই করে রাজ্য পর্যটন উন্নয়ন নিয়ম। করোনার কারণে তা বন্ধ ছিল। এবার শীতে ফের তা চালু হচ্ছে। এক্ষেত্রে তিনদিন-দু’রাত্রি থাকার খরচ ৯ হাজার ৬০০ টাকা। ভেসেল ও এসি বাসে সুন্দরবন ভ্রমণের প্যাকেজে থাকবে সুন্দরবনের জল-জঙ্গলের বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখার সুযোগ। নিগম কর্তারা বলছেন, তাঁরা ঝাড়গ্রাম এবং সুন্দরবনের বুকিংও নিতে শুরু করেছেন। তবে একসঙ্গে অনেক পর্যটককে নিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী নন তাঁরা। তাঁদের কথায়, যাঁরা বেড়াতে যাবেন, তাঁদের নিরাপত্তা এবং স্বাচ্ছন্দ্য দেখাও আমাদের কর্তব্য। সেই কারণেই করোনা বিধি মেনে এবং সবাইকে আনন্দে রেখে যাতে ট্যুরগুলি সম্পন্ন করা যায়, সেই দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে। শীতে একাধিকবার এই প্যাকেজগুলি চালু থাকবে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।