রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার পদ তুলে দিচ্ছে রাজ্য সরকার
রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার বা ‘আরএমও’ পদ তুলে দিচ্ছে রাজ্য। এভাবে স্বাস্থ্যদপ্তরে শিক্ষক চিকিৎসকদের চাকরির নিয়োগ নীতিতে ঐতিহাসিক পরিবর্তন আনল রাজ্য। এবার থেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিসে চিকিৎসকরা যোগ দেবেন সরাসরি সহকারী অধ্যাপক বা অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসার পদে। ‘আরএমও’ কাম ক্লিনিক্যাল টিউটর বা ডেমনস্ট্রেটর পদে নয়। আর ‘আরএমও’ নিয়োগ করবে না সরকার। ওয়ার্ডমাস্টারদের মতোই এটিও হতে চলেছে ‘ডায়িং ক্যাডার’। তবে বর্তমানে চাকুরিরত ‘আরএমও’রা ওই পদেই থাকছেন। নতুন নিয়োগ নীতিতে একটি শর্ত রাখছে রাজ্য। সিনিয়র রেসিডেন্ট বা ‘এসআর’ পদে ন্যূনতম একবছর সরকারকে সার্ভিস দিলে, তবেই এমডি-এমএস পাশ ডাক্তাররা সহকারী চিকিৎসক হিসেবে ইন্টারভিউতে বসার অন্যতম শর্ত পূরণ করবেন।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে ‘আরএমও’ নিয়োগ নিয়ে মুখ পোড়ে রাজ্যের। বেশকিছু প্রভাবশীল পরিবারের চিকিৎসক শুধু এমবিবিএস পাশ করে এই পদে সরকারি চাকরি যোগ দেন। তোলপাড় পড়ে যায়। সে দুর্নীতি যাতে ভবিষ্যতে না-হয়, সে-কথাও মাথায় ছিল আমাদের। জানান এক পদস্থ স্বাস্থ্যকর্তা।
রবিবার স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, আমরা ‘আরএমও’ পদ তুলে দিচ্ছি। বর্তমানে কর্মরতরা অবশ্য থাকছেন। নতুন নিয়োগ হবে না। বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, অত্যন্ত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি) তাই বলছে।
ওয়াকিবহাল মহল সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যশিক্ষার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনএমসির নিয়ম অনুযায়ী, মেডিক্যাল শিক্ষায় ‘আরএমও’ বলে কোনও পদ নেই। তাদের নিয়মে দু’ধরনের পদ আছে। রেসিডেন্ট চিকিৎসক এবং ফ্যাকাল্টি বা স্থায়ী শিক্ষক চিকিৎসক। রেসিডেন্ট চিকিৎসক আবার সিনিয়র রেসিডেন্ট (এসআর) ও জুনিয়র রেসিডেন্ট (জেআর)।
বাংলায় মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিসে এতদিন ‘এসআর’ পদে বন্ড সার্ভিস ছিল। তিনবছরের চুক্তি বা বন্ডে চাকরি কাজ করেন এমডি-এমএস পাশ চিকিৎসকরা। চুক্তি ভঙ্গ করলে প্রতি বছরের জন্য দিতে হয় ১০ লক্ষ টাকা। মেয়াদ শেষ হলে তবেই তাঁরা সরকারি চাকরিতে ‘আরএমও’ পদে যোগ দেওয়ার যোগ্য হন। বিভিন্ন মেডিক্যালের অধ্যক্ষদেরও প্রয়োজন অনুযায়ী অস্থায়ীভাবে ছ’মাস, ছ’মাস করে চুক্তি নবীকরণের শর্তে ‘এসআর’ নেওয়ার ক্ষমতা আছে। নিয়োগ নীতির পরিবর্তনে সর্বোচ্চ সিলমোহর পড়ায় এবার থেকে মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিসের প্রথম পদ হচ্ছে সহকারী অধ্যাপক। তারপর ধাপে ধাপে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি হবে।
‘আরএমও’ উঠে যাওয়ায় সহকারী অধ্যাপদ হিসেবে চাকরিতে ঢোকার সর্বোচ্চ বয়স কত হবে? চাকুরিরত শুধু এমবিবিএস পাশ ‘আরএমও’দের ভবিষ্যৎ কী হবে? এক শীর্ষ কর্তা বলেন, সময়ে এমডি পাশ করলে ওঁদের পদোন্নতি হবে। না-হলে সাধারণ এমও হিসেবে থেকে যাবেন। আরও খুঁটিনাটি বিষয় শীঘ্রই ঠিক করব।