ভাইরাস মুক্ত আলু বীজ ‘বঙ্গশ্রী’-র বৃদ্ধি পেয়েছে তিনগুণ
রাজ্যের কৃষিদপ্তরের উদ্যোগে উৎপাদিত ভাইরাস মুক্ত আলু বীজ ‘বঙ্গশ্রীর’ ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মরশুমে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় ১০০ টন এই বীজ আলু ব্যবহার করা হয়েছে। গতবারের তুলনায় এর উৎপাদন তিনগুণ বেড়েছে। খাদ্য দপ্তরের এই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সায়ন্তন দে জানিয়েছেন, আগামী বছর এই আলু বীজের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে। ২০২৪ সালের মধ্যেই বঙ্গশ্রী আলু বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪০ হাজার টনে নিয়ে যাওয়া হবে। এবারই প্রথম বঙ্গশ্রী ‘ব্র্যান্ডনেম’-এই বীজ আলু বাজারে ছাড়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, কোনও রাজ্যে এভাবে সরকারি উদ্যোগে আলু বীজ উৎপাদন করা হয় না। এই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গই পথ দেখিয়েছে দেশকে।
মেদিনীপুরে কৃষিদপ্তরের নিজস্ব গবেষণাগারে ও কেশপুরের আনন্দপুর ফার্মে কয়েক বছর আগেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। চলতি বছর কৃষ্ণনগরের গবেষণাগার ও ফার্মে কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দিনে উত্তরবঙ্গেও এই কাজ হবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।
অত্যাধুনিক টিস্যু কালচার প্রযুক্তি ব্যবহারে গবেষণাগারে প্রথমে টেস্ট টিউবের মধ্যে আলুর চারাগাছ তৈরি করা হয়। তারপর ফার্ম ও বাইরের জমিতে বিশেষভাবে তৈরি নেট হাউসে বীজ উৎপাদন হয়। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, নেট হাউসের বিস্তার ক্রমশ বাড়ছে। এ বছরে তা ছিল ৪০ হাজার বর্গফুট। আগামী বছর দ্বিগুণ করা হবে।
রাজ্যের আলুচাষিরা মূলত পাঞ্জাবের বীজ ব্যবহার করেন। সেই বীজ ভাইরাস মুক্ত নয়। তাও চড়া দরে তা কিনতে হয় চাষিদের। এবার প্রতি কেজি পাঞ্জাবের বীজ বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়। সেখানে কৃষিদপ্তর পূর্ব বর্ধমান ও বীরভূমের খামার থেকে ২২ টাকা কেজি দরে বঙ্গশ্রী বিক্রি করেছে। জলপাইগুড়ি, নদীয়া, হুগলি সহ কয়েকটি জেলায় এই বীজ আলু চাষিদের কাছে বিক্রি করছে ৩৭টি সংস্থা। এই সংস্থাগুলি প্রজেক্ট পার্টনার হিসেবে কাজ করছে কৃষিদপ্তরের সঙ্গে। সরকার তাদের বিক্রয়মূল্য নির্দিষ্ট করে না দিলেও প্রতি কেজিতে ভর্তুকি দিচ্ছে ১০ টাকা। যাতে এখানকার চাষিরা পাঞ্জাবের বীজের তুলনায় কম দামে তা পান। ভাইরাস মুক্ত আলু বীজ হলে সংক্রমণ হলেও ফলন মার খাওয়ার আশঙ্কা কমে থাকে। ভাইরাস মুক্ত আলু বীজ থেকে উৎপাদিত আলু বিদেশে রপ্তানি করা যাবে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।