‘আমি এবার সময় চাইনি’ সোনিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গে বার্তা মমতার
তৃণমূল (TMC) ও কংগ্রেসের (Congress) দূরত্ব কি আরও বাড়ছে? জোর জল্পনা দিল্লির রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চলতি দিল্লি সফরে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসের দুই প্রাক্তন সাংসদ। উপরন্তু এই সফরে কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎও হয়নি মমতার। ফলে বাড়ছে গুঞ্জন। যদিও তৃণমূল নেত্রীর দাবি, “আমি এবার সময় (সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের) চাইনি।” পরে তাঁর সংযোজন, “ওঁরা পাঞ্জাবের ভোট নিয়ে ব্যস্ত আছেন। দলের কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছে। দলের কাজ করতে দিন।”
বাংলার বিধানসভা ভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরই বিজেপি বিরোধী ঐক্য গড়ার ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। এমনকী, ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেও সর্বভারতীয় স্তরে ঐক্যের বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই সময় দিল্লি এসে একান্তে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখাও করেছিলেন তিনি। কথাও হয় বিজেপি বিরোধিতা নিয়ে। কিন্তু এবারের ছবিটা একটু আলাদা। কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রশ্নে মমতার সাফ জবাব. “প্রত্যেকবার দিল্লি এলেই কি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে হবে? এটা কি বাধ্যতামূলক? সংবিধানে এরকম লেখা আছে নাকি?” পরে অবশ্য জানান, সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের ভোট নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সাক্ষাতের সময় চাননি তিনি।
তবে বিরোধী ঐক্য গড়ার কাজে সামান্যতম ঢিলেমি দিতেও যে তৃণমূল নেত্রী রাজি নন, তাও দিল্লিতে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করে দিলেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীরর সঙ্গে সাক্ষাতের পরই তিনি বার্তা দেন, বিজেপিকে হারাতে যে তৃণমূলের সাহায্য চাইবে তাকেই সাহায্য করবে তাঁর দল। বাদ পড়বে না উত্তরপ্রদেশও। তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, “উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে হারাতে অখিলেশ যদি তৃণমূলের সাহায্য চায় তাহলে নিশ্চয়ই যাব। আমরা গোয়া, হরিয়ানাতে সংগঠন তৈরি করছি। কিন্তু কিছু জায়গায় আঞ্চলিক দলগুলি লড়াই করুক। তারা চাইলে আমরা তাদের হয়ে প্রচার করতেই পারি।” কিন্তু সেই বিরোধী জোটে কংগ্রেস থাকবে কি না, সেটা অবশ্য স্পষ্ট হয়নি।
গত কয়েকদিন একাধিক কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আবার দলীয় মুখপত্রে সরাসরি কংগ্রেসের সমালোচনা করেছে তৃণমূল। এমনকী, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও কংগ্রেসের নিন্দা শোনা গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমোর দেখা না হওয়ায় জল্পনা যে আরও বাড়ল তা আলাদা করে বলার দরকার পড়ে না।
তবে দলবদল নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, “আমরা কাউকে ডাকিনি, যদি কেউ আমাদের দলে যোগ দিতে আসেন তাহলে সেটা তাঁর বিষয়। আমরা কোনও দল ভাঙানোর চেষ্টা করি না। কেউ যদি মনে করেন যে তৃণমূল কংগ্রেস দেশের জন্য ভাল লড়াই করে, তাই তৃণমূল কংগ্রেসে আসব, তাহলে তো তাঁকে আমরা বাধা দিতে পারি না।”