খেলা বিভাগে ফিরে যান

আইএসএলে চেন্নাইয়ের সঙ্গে ড্র করল ইস্টবেঙ্গল

December 3, 2021 | 2 min read

অবশেষে এস সি ইস্ট বেঙ্গল শুধু হারলই না, মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়ল। শুক্রবার ভাস্কোর তিলক ময়দানে ইস্ট বেঙ্গল হয়তো ম্যাচ জিততে পারেনি, গোলও করতে পারেনি। কিন্তু শেষ দুটো ম্যাচে নয় গোল খাওয়ার পরে টিমটার মনোবল যখন তলানিতে ঠেকেছিল, সমর্থকদের গ্রাস করেছিল সীমাহীন হতাশা তখন ইস্ট বেঙ্গলের এই পারফরম্যান্স কিন্তু বেশ ভাল। গোল করার সুযোগ যে তারা পায়নি তা নয়। খেলা শেষ হওয়ার আগে আমিরের ফ্রি কিক থেকে রাজু গায়কোয়াড় গোল করার মতো বল পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর হেডে নিয়ন্ত্রণ ছিল না। বল বারের উপর দিয়ে চলে যায়। এই সুযোগ ছাড়া ইস্ট বেঙ্গল কিন্তু গোল করার কোনও সুযোগ পায়নি। কিন্তু তাদের গোলকিপার, ডিপ ডিফেন্স এবং মাঝ মাঠ যা খেলেছে তাতে সমর্থকদের মধ্যে হতাশা কাটতে বাধ্য। এই ভাবে যদি তারা খেলতে পারে এবং ড্যানিয়েল চিমারা যদি গোলের দেখা পান তাহলে ম্যাচ জেতা অসম্ভব হবে না লাল হলুদের। তবে ক্রমাগত কোণঠাসা হতে হতে ইস্ট বেঙ্গলের এই ঘুরে দাঁড়ানো অবশ্যই তারিফযোগ্য।

প্রথম তিনটে ম্যাচেই বিরতির আগে গোল খেয়েছিল ইস্ট বেঙ্গল। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে তারা নব্বই মিনিটে কোনও গোল খায়নি। এর জন্য সব কৃতিত্ব শুধু গোলকিপার শুভম সেনকে দেওয়া যাবে না। প্রথম পনেরো মিনিটের মধ্যে শুভম অন্তত তিনটে নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছেন। কিন্তু গোল না খাওয়ার জন্য লাল হলুদের ডিফেন্স এবং মাঝ মাঠের প্রশংসাও করতে হবে। মোহনবাগান এবং ওড়িশা ম্যাচে ইস্ট বেঙ্গলের মাঝ মাঠে কোনও প্রতিরোধ ছিল না। শুক্রবার কিন্তু স্লোভেনিয়ার আমির ডেরভিসেভিচের নেতৃত্বে মাঝ মাঠে ভাল রকমের ব্লকিং হল। তাঁর পাশে মহম্মদ রফিক এবং অমরজিৎ নিজেদের কর্তব্যে অবিচল থাকায় চেন্নাই কিন্তু আক্রমণে ঝড় তুলতে পারেনি। লাল হলুদ কোচ ম্যানুয়েল দিয়াজ রক্ষণের উপর জোর দেওয়ার চেষ্টা করার পাশাপাশি গোল  করার জন্য নির্ভর করতে চেয়েছিলেন দুই বিদেশি হল্যান্ডের ড্যারেন সিডোয়েল এবং নাইজিরিয়ান ড্যানিয়েল চিমার উপর। এই দুজনই ওড়িশার বিরুদ্ধে গোল পেয়েছিলেন। কিন্তু এদের দুজনের মধ্যেই তেমন ভেদশক্তি নেই। তাই চেন্নাই-এর গোলকিপার বিশাল কাইথকে তেমন কঠিন পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়নি।

মাঝ মাঠের পাশাপাশি ইস্ট বেঙ্গলের ডিফেন্স লাইনও বেশ ভাল। এদিনের অধিনায়ক অস্ট্রেলিয়ার টমিস্লাভ মার্সেলার নেতৃত্বে ড্যানিয়েল গোমস, জয়নার এবং হীরা মণ্ডল বেশ ভাল ট্যাকলিং এবং কভারিং করায় চেন্নাই তেমন সুযোগ পায়নি। দুর্দান্ত ডিফেন্স করার জন্য ম্যাচের সেরা হীরা মণ্ডল। ময়দান থেকে হারিয়ে যেতে বসা প্রায় বাতিল হীরা ম্যাচের সেরা বঙ্গ সমর্থকদের কাছে এটা বড় পাওনা। চেন্নাইয়ের টিমেও কিন্তু গোল করার লোকের অভাব ছিল না। অনিরুদ্ধ থাপা, ছাংতে, রহিম আলিদের সঙ্গে লুকাস পিরিউইচরা মিলে চেন্নাইয়ের অ্যাটাকিং লাইন কিন্তু বেশ ভাল। তাদের টিমে ছিলেন হাঙ্গারির কোমান যিনি দেশের হয়ে ৩৭টি ম্যাচ খেলেছেন। তারা প্রথম দুটো ম্যাচ জিতে ইস্ট বেঙ্গলের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল। শেষ পর্যন্ত তাদের আটকে দিয়ে একটা পয়েন্ট ছিনিয়ে নেওয়া যথেষ্ট কৃতিত্বের।

বিরতির পর ইস্ট বেঙ্গল ডিফেন্সে দুটো পরিবর্তন করে। আদিল খান এবং রাজু গায়কোয়াড়কে নামানো হয় ড্যানিয়েল গোমস এবং জয়নারের বদলে। এতে ইস্ট বেঙ্গলের ডিফেন্স আরও শক্তিশালী হয়। তবে রাজু প্রথম দিকে একটু নড়বড়ে ছিলেন। তাঁর ঘাটতি পুষিয়ে দেন টমিস্লাভ। কিন্তু ইস্ট বেঙ্গলের কোচ চেয়েছিলেন গোল করতে। তাই একটু পরেই নামানো হল আন্তোনিও পেরোসেভিচ ও বিকাশ জাইরুকে। আন্তোনিওর টাচ ভাল। কিন্তু বল বাড়ানোর দক্ষতা আও ভাল না হলে চিমা গোল পাবেন কী করে? তবে একেবারে নতুন একটা দল খেলতে খেলতে তৈরি হবে। ইতিমধ্যেই ডিফেন্সের টমিস্লাভ এবং মাঝ মাঠের আমিরকে নিয়ে ভরসা করা যায়। আগের দুটো ম্যাচে সেট পিসে পাঁচটা গোল খাওয়া দলটা এদিন চেন্নাইয়ের তেরোটা কর্নার রুখে দিয়েছে। তাই ইস্ট বেঙ্গলের এই একটা পয়েন্ট পড়ে পাওয়া নয়। এর পিছনে অনেক ঘাম এবং পরিশ্রম আছে। এরকম ভাবে খেলতে পারলে লাল হলুদের কাছ থেকে ভাল কিছু প্রত্যাশা করাই যায়।  

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#ISL, #SC East Bengal, #chennai fc

আরো দেখুন