ত্রিস্তরের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ‘দুয়ারে প্রশিক্ষণ’ শুরু রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তরের
করোনার কারণে দু’বছর পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গ্রামীণ এলাকার ত্রিস্তরের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ‘দুয়ারে প্রশিক্ষণ’ শুরু করল রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তর। ডিসেম্বর মাস জুড়ে রাজ্যের সব ব্লকে এই প্রশিক্ষণ হবে। লক্ষ্য হল গ্রামীণ কাজের মানোন্নয়ন। সেই প্রশিক্ষণ শিবিরে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষ, জেলা পরিষদের সদস্য, সভাধিপতি, সহ সভাধিপতিরা উপস্থিত থাকছেন। এই প্রশিক্ষণ শিবিরে ১০০ দিনের কাজ, বাংলার আবাস যোজনা, মিশন নির্মল বাংলা, গ্রাম পঞ্চায়েত সশক্তিকরণ কর্মসূচি, আনন্দধারা সহ সব পাইলট প্রজেক্টের কাজ সম্পর্কে অবহিত করা হবে। এই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন পঞ্চায়েত দপ্তরের সিনিয়র অফিসাররা।
এই ধরনের প্রশিক্ষণ আগেও হয়েছে। তবে তা হতো কল্যাণীতে। বিভিন্ন জেলা থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সেখানে আসতে হতো। আসা যাওয়ার সমস্যার কথা ভেবে ব্লকে ব্লকে এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পঞ্চায়েত দপ্তর। এর ফলে দিনভর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা কী করে আরও ভালো করে পরিষেবা দিতে পারেন, তা শিখতে পারবেন। জানতে পারবেন গ্রামীণ স্তরে চলা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের নানা ধরনের প্রকল্প সম্পর্কে, যে প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। এই প্রশিক্ষণ শিবিরে পঞ্চায়েত সচিব এম ভি রাও সহ সিনিয়র অফিসাররা থাকছেন। নিজের এলাকাতে একটি প্রশিক্ষণ শিবিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী পুলক রায়।
তবে শুধু পঞ্চায়েতের কাজকর্ম নয়, এই প্রশিক্ষণ শিবিরে যুক্ত হয়েছে জলস্বপ্ন প্রকল্প। কারণ, এই প্রকল্পের কাজ হয়, গ্রামীণ এলাকায়। তাই পঞ্চায়েতকেও খুবই দরকার। সমন্বয় রেখেই কাজ করতে হবে দুই দপ্তরকে। ২০২৪ সালের মধ্যে রাজ্যের প্রত্যেক বাড়িতে জলের সংযোগ করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জলস্বপ্নকে মিশন হিসেবে নিয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর। তাই প্রশিক্ষণ শিবিরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের অফিসার ও ইঞ্জিনিয়াররা উপস্থিত থাকছেন। কোনও কোনও শিবিরে থাকছেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের প্রধান সচিব সুরেন্দ্র গুপ্তাও।
ডিসেম্বর মাস জুড়ে এই প্রশিক্ষণ শিবির শেষ হওয়ার পরে জানুয়ারি মাসে রাজ্যের সব বিডিও অফিসে পঞ্চায়েত স্তরের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। যাতে জনপ্রতিনিধিদের জেলার বাইরে বেরতে না হয়, তার জন্য বাড়ির কাছে প্রশিক্ষণ শিবির করা হচ্ছে। কাজের মানোন্নয়ন করতেই এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে পঞ্চায়েত দপ্তরের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সংস্থা (স্টারপার্ড)। যার দায়িত্বে রয়েছেন আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর। রাজ্যের ৩৩২টি ব্লকের ১৬ হাজার ৩৬৪ জনপ্রতিনিধি এই প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশগ্রহণ করবেন। বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ, পঞ্চায়েতের বিভিন্ন আইন সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে শিবিরে।