বিজেপি বিধায়ক হিরণ চ্যাটার্জি আবারও কটাক্ষ করলেন দিলীপ ঘোষকে
ফাটল যেন ক্রমশ চওড়া হয়েই চলেছে! একদিকে মেদিনীপুরের সাংসদ তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। অন্যদিকে খড়্গপুর সদরের অভিনেতা বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় (হিরণ)। দিলীপ ঘোষকে বিঁধে হিরণের তির্যক মন্তব্য, “আমি হোর্ডিং পোস্টারে নেই। আমি মানুষের জন্য নিরন্তর কাজ করে চলি।”
এর আগে বিভিন্ন ইস্যুতেই পরস্পরের বিরোধিতা সামনে এসেছে। এবার বৃহস্পতিবারের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পর তা আরও একবার সামনে এল। ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার দলীয় সমর্থকদের একটি হোর্ডিং লাগানোকে কেন্দ্র করে।যারপরই ‘ক্ষোভ’ উগরে কটাক্ষের সুরে দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা খড়্গপুর সদরের প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপ ঘোষকে বিঁধলেন বর্তমান বিধায়ক হিরণ। হোর্ডিংয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষকে অভিবাদন জানিয়ে তাঁকে মধ্যমণি করা হয়েছে। হোর্ডিংয়ে সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, অমিত মালব্যর ছবিও রয়েছে। এমনকি হোর্ডিংয়ে রয়েছেন জেলা সভাপতি সৌমেন তিওয়ারিও। কিন্তু, হিরণ নেই!
এরপরই এই নিয়ে হিরণের তির্যক মন্তব্য, “আমি হোর্ডিং পোস্টারে নেই। নিরন্তর মানুষের জন্য কাজ করে চলি। গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলে। জনতাই জনার্দন, ভগবান। আমি জনগণের পূজারি। যারা হোর্ডিং পোস্টারে আছেন, তাঁরা ভোট দিয়ে জেতাতে পারবেন না। শেষ কথা বলবে মানুষই।” নাম না করলেও, তিনি যে মূলত দিলীপ ঘোষ ও তাঁর অনুগামীদের উপরই ক্ষুব্ধ তা বলাই বাহুল্য।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনে গোটা রাজ্যের পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। তবে, ভরাডুবির মধ্যেও জেলায় দুটি আসন পেয়েছে বিজেপি। তারমধ্যে একটি খড়্গপুর সদর। ঘাসফুল থেকে পদ্মশিবিরে নাম লিখিয়ে খড়্গপুর সদরে জিতেছেন হিরণ। এখন এই খড়্গপুর সদরেরই প্রাক্তন বিধায়ক ছিলেন দিলীপ ঘোষ। এই এলাকা তাঁর গড় হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু এবার সেই হিসেব যেন বদলে দিতে বদ্ধপরিকর হিরণ। ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই তাই নানান কর্মসূচিতে ব্যস্ত তিনি। বিভিন্ন প্রয়োজনে খড়্গপুরের মানুষের কাছে ছুটে গিয়েছেন।
এদিকে বিজেপির সঙ্গে হিরণের ‘মধুচন্দ্রিমা’ পর্বে ফাটলের আভাস পেতেই মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের যেন উচ্ছ্বাসের অন্ত নেই। জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা আবার ‘হিরণ’কে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, “বিজেপি-তে কোনও ভালো লোকই বেশিদিন টিকতে পারবে না।” পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি মন্তব্য করেছেন, “হিরণের বিলম্বিত বোধোদয় হয়েছে। সত্য কথা বলার জন্য ও বুঝতে পারার জন্য তাঁকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।”