পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যগুলিকে নোটিস শীর্ষ আদালতের
লকডাউনে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? কেন্দ্র এবং সব রাজ্য সরকারকে দু’ দিনের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট৷ শীর্ষ আদালতের তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন এই নির্দেশ দিয়েছে৷
দিন দশেক আগেই অবশ্য সু্প্রিম কোর্টেরই অন্য একটি ডিভিশন বেঞ্চ পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখভালে কেন্দ্রীয় সরকার কী পদক্ষেপ করছে, সে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে রাজি হয়নি৷ সেবার ডিভিশন বেঞ্চের এক বিচারপতি বরং আবেদন খারিজ করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘পরিযায়ী শ্রমিকরা রাস্তায় হাঁটলে আদালত কীভাবে তাঁদের আটকাবে?’
বিচারপতি অশোক ভূষণের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য এ দিন জানায়, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন খবর এবং অন্যান্য মাধ্যমে তাঁদের কাছে আসা তথ্যের ভিত্তিতেই স্বতোঃপ্রণোদিত হয়ে এই পদক্ষেপ করছে আদালত৷ প্রাথমিক নির্দেশে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, অবিলম্বে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিনা পয়সায় খাবার, থাকার জায়গা এবং যাতায়াতের ব্যবস্থার করতে হবে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলিকে৷
ডিভিশন বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কল এবং বিচারপতি এম আর শাহ জবাব দেওয়ার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছে৷ পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য সরকারি তরফে উদ্যোগের কথা স্বীকার করলেও তাতে গাফিলতি এবং ঘাটতি রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতিরা৷
দু’ পাতার নির্দেশনামায় ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা বলেছেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে পরিস্থিতির উন্নতি করতে একসঙ্গে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ করা প্রয়োজন৷’ একই সঙ্গে কেন আদালত এই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হলো, লিখিত নির্দেশে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিচারপতিরা৷ আদালতের নির্দেশনামায় আরও বলা হয়েছে, হেঁটে এবং সাইকেলে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে বাড়ি ফিরতে গিয়ে ‘শ্রমিকদের কী ধরনের দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি এবং দুর্দশার মধ্যে পড়তে হচ্ছে’, সংবাদমাধ্যমে তা নিয়মিত উঠে এসেছে৷
লিখিত নির্দেশনামায় আরও বলা হয়েছে, ‘শ্রমিকরা বার বারই অভিযোগ করেছেন, যেখানে তাঁরা আটকে ছিলেন বা বাড়ি ফেরার পথে যেখানেই তাঁরা থেমেছেন, সেখানে তাঁদের জন্য স্থানীয় প্রশাসন খাবার বা জলের কোনও ব্যবস্থা করেনি৷ এর পর হেঁটে, সাইকেলে বা অন্য কোনও যানবাহনের সাহায্যে তাঁরা বাড়ি ফিরেছেন৷’ সমাজের এই অংশের মানুষের যে সরকারের থেকে আরও সহযোগিতা এবং ত্রাণের প্রয়োজন, তাও নির্দেশ দিতে গিয়ে উল্লেখ করেছে আদালত৷