ভোটের আগে যোগীরাজ্যে ৩৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প মোদীর, নির্বাচনে হারা বাংলা ব্রাত্য

উত্তরপ্রদেশকে ঢালাও প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি এবং অর্থবরাদ্দ এখন অবশ্য বিরোধীদেরও গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।

December 17, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

ছিল যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে। তাজ এক্সপ্রেসওয়ে। কিছুদিন আগেই উদ্বোধন করা হল পূর্বাঞ্চলীয় এক্সপ্রেসওয়ের। লখনউ থেকে ঝাঁসি—ন’টি জেলাজুড়ে সম্প্রতি ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর প্রকল্পের অধীনে একের পর এক স্কিম চালু করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এবার আগামী কাল, শনিবার শাজহানপুরে গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের শিলান্যাস হচ্ছে। করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই একটি এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে বরাদ্দ কত? ৩৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

লক্ষ্য একটাই, উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। একদিকে যোগীর কুর্সি ধরে রাখতে ভোটের আগে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্প উপহার। আবার অন্যদিকে, বিহারকে স্পেশাল স্টেটাস পাইয়ে দেওয়ার উদ্যোগ। তার জন্য ইতিমধ্যেই নীতীশ কুমারের রাজ্যকে আর্থিক প্যাকেজ দেওয়া নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করে দিয়েছে নীতি আয়োগ। বিজেপি এবং এনডিএ শরিকদের সরকারকে হাত উপুড় করে পাইয়ে দেওয়ার এই রাজনীতি নিয়েই বিতর্ক উস্কে উঠেছে। আরও একবার প্রকাশ্যে এসেছে বাংলাকে দুয়োরানি করে রাখার কেন্দ্রীয় প্রবণতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ এবং গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের দাবি দীর্ঘদিনের। অথচ, ন্যায্য এই দাবিকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনই মনে করছে না মোদী সরকার।

 বাংলার প্রতি বঞ্চনার পরিমাণ আরও বেড়েছে মে মাসে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বারবার ঘনিষ্ঠ মহলে প্রশ্ন তুলেছেন, ভোটে হারার জন্যই কি আমাদের সঙ্গে বঞ্চনার রাজনীতি অব্যাহত?


উত্তরপ্রদেশকে ঢালাও প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি এবং অর্থবরাদ্দ এখন অবশ্য বিরোধীদেরও গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। এবার তাতে সংযোজন বিহার এবং তার বিশেষ প্যাকেজ। নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার নিজেই এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘গত কয়েক বছরে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়েছে বিহার। তবে এর আগে সামগ্রিক উন্নয়নের বিচারে পিছিয়ে থাকার জন্য দ্রুত অন্য রাজ্যগুলিকে স্পর্শ করতে আরও সময় লাগবে। এই পরিস্থিতিতে স্পেশাল স্টেটাসের দাবি নিয়ে অবশ্যই নীতি আয়োগ চিন্তাভাবনা করছে।’

রাজীব কুমারের এই মন্তব্যের পরই এনডিএর বাইরের রাজ্যগুলির প্রতি মোদী সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে। তালিকায় সবার আগে অবশ্যই বাংলা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি বারবার নাকচ হয়েছে। উপরন্তু বাংলার প্রাপ্য টাকাই আটকে রাখা হয়েছে। ভোটের পর কেন্দ্রের তরফ থেকে কার্যত কিছুই জোটেনি। টেক্সটাইল থেকে বিদ্যুৎ। পরিকাঠামো থেকে শিল্পোন্নয়ন। নিয়ম করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা নানাবিধ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বাংলার ভাঁড়ার শূন্য। নীতি আয়োগের কাছে নবীন পট্টনায়ক সরকারও বৃহস্পতিবার দাবি করেছে, স্পেশাল স্টেটাস দিতে হবে। ওড়িশা সফরের পর দিল্লি ফিরে সে বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে নীতি আয়োগ। ২০২১ সালের বাজেটে কলকাতা থেকে  শিলিগুড়ি করিডর নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ভোটের সময়ও প্রচারে এসে ঘোষণা করা হয়েছিল একঝাঁক সড়ক নির্মাণ ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের। সেই উদ্যোগে ভাটা পড়েছে। অর্থাৎ উপসংহার দু’কথায়—কেন্দ্রের বঞ্চনা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen