এবার গোবর, গোমূত্রে ভরসা রাখতে ডাক মোদীর
লেজেগোবরে হয়ে প্রত্যাহার করতে হয়েছে তিন কৃষি আইন। এবার জৈব ও প্রাকৃতিক চাষ কতটা উপযোগী, তা বোঝাতে গিয়ে করে বসলেন আজব দাবি। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, কৃষি গবেষণাকে রাসায়নিক ল্যাবের বাইরে এনে ‘প্রকৃতির পরীক্ষাগারে’র সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। এজন্য ‘গোবর’ ও ‘গোমূত্রে’ ভরসা রাখার ডাক দিলেন তিনি। এক্ষেত্রে ‘গোমাতা’র ভূমিকা কতটা তাৎপর্যপূর্ণ, কার্যত সেকথাও তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন গুজরাতের আনন্দে আয়োজিত ন্যাশনাল কনক্লেভ অন ন্যাচারাল ফার্মিংয়ে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। মঞ্চে তখন উপস্থিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল। ঘটনাচক্রে, সবুজ বিপ্লবের মাধ্যমে খাদ্যশস্য উৎপাদনে ‘আত্মনির্ভর’ হয়েছিল ভারত। সবুজ বিপ্লবে রাসায়নিক ও সার যে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ভূমিকা নিয়েছিল, এদিন তা মেনে নেন মোদী। তবে, চাষের প্রথাগত পদ্ধতিগুলির ‘ভুলভ্রান্তি’ শুধরে নিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ‘বিকল্প’ খোঁজার ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী। আর তা করতে গিয়েই ‘গোবর’ ও ‘গোমূত্রে’র পক্ষে সওয়াল করে বসেন তিনি। মোদির যুক্তি, ‘কৃষিকে রাসায়নিক ল্যাব থেকে বাইরে এনে প্রকৃতির পরীক্ষাগারের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। প্রাকৃতিক চাষও বিজ্ঞান নির্ভর। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, জৈব চাষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে গোরু। কারণ, গোবর ও গোমূত্রকে সার ও কীটনাশক— উভয় প্রয়োজনেই ব্যবহার করা যেতে পারে। এর ফলে চাষের খরচ কমবে।’ এদিন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (আইসিএআর) ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ‘ল্যাব টু ল্যান্ড’ নীতি গ্রহণের আর্জি জানান মোদী। এই নীতি মেনেই কৃষি গবেষণাকে ‘নতুন দিশা’ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। যাতে ‘গোবর’ ও ‘গোমূত্র’ নির্ভর প্রাকৃতিক চাষের মাধ্যমে কৃষকরা ‘লাভবান’ হতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর যুক্তি, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক চাষের খরচ বাড়ায়। দাম বাড়ে খাদ্যশস্যেরও। মোদীর কথায়, ‘ফসলের গোড়া পোড়ানো ও রাসায়নিক চাষের ব্যবহারের মতো চাষের প্রথাগত ভুলগুলি শুধরে নেওয়ার সময় এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, নাড়া পোড়ালে বাস্তবে জমির উর্বরতা কমে। সেকথা জানা সত্ত্বেও কৃষি জমিতে নাড়া পোড়ানো আমাদের দেশের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। রাসায়নিক সার ছাড়া শস্যের ভালো উৎপাদন সম্ভব নয়, এই ধারণা ভুল।’
এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রাকৃতিক চাষকে ‘গণ-আন্দোলনে’ পরিণত করার ডাক দেন সব রাজ্যের কাছে। তাঁর আবেদন, প্রাথমিকভাবে সব পঞ্চায়েতে অন্তত একটি করে গ্রামে জৈব পদ্ধতিতে চাষ করানো হোক। কৃষকরা তাঁদের জমির ছোট অংশ দিয়ে এই কাজ শুরু করতে পারেন। ফলাফল খতিয়ে দেখার পর এই চাষের পরিধি বৃদ্ধি করা যেতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, এই নয়া পদ্ধতিতে চাষ করলে লাভ বাড়বে কৃষকদের। পাশাপাশি, এদিনের অনুষ্ঠান থেকেই বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংস্থাকে জৈব চাষে বিনিয়োগের আবেদন জানান তিনি। তাঁর কথায়, ‘গোটা বিশ্বের বাজার আপনাদের অপেক্ষায়।’এই মুহূর্তে