নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে হারিয়ে চার ম্যাচ পর জয়ের মুখ দেখল মোহনবাগান
শেষ ৪ ম্যাচে মাত্র ২ পয়েন্ট। ডার্বির পর থেকে সবুজ মেরুন ঝড় উধাও। কোচের পদত্যাগ। নতুন কোচ হুয়ান ফেরান্ডোর হাত ধরে মঙ্গলবার মাঠে নেমেছিল এটিকে মোহনবাগান। প্রতিপক্ষ খালিদ জামিলের নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি। খেলা শুরুর ২ মিনিটের মধ্যে পিছিয়ে পরে জয় ৩-১ গোলে। জোড়া গোল হুগো বোমাসের। একটি গোল লিস্টন কোলাসোর। ৭ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে আবার প্রথম চারের লড়াইয়ে ঢুকে পরল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। আজ শুধু তিন পয়েন্ট নয়, দলের মধ্যে তৈরি হওয়া গুমোট পরিবেশটাও কাটলো। কিন্তু বাগান ডিফেন্সের রোগ সারাতে যে অনেকটা সময় খরচ করতে হবে নতুন কোচকে সেটাও পরিস্কার করে দিল মঙ্গলবারের ম্যাচ।
তখনও গুছিয়ে বসতে পারেনিন কেউ। প্রাক্তন মোহনবাগান স্ট্রাইকার ভিপি সোহেরের ফ্লিক হেড বাগান গোলকিপার অমরিন্দরকে পাশে রেখে জালে জড়িয়ে গেল। এটিকে মোহনবাগানের (ATK Mohun Bagan) নতুন কোচের যাত্রা শুরু গোল হজম করে। বাগান ডিফেন্ডাররা তখন একে অপরের দিকে তাকিয়ে। গোল খেয়ে যদিও গুটিয়ে যায়নি বাগান। হুয়ান ফেরান্ডো (Juan Ferrando) টোটাল ফুটবল পছন্দ করেন। ৪-২-৩-১ ছকে দল নামিয়ে সেটা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। তাই প্রতিপক্ষ এগিয়ে থাকলেও, বারবার আক্রমণে গিয়ে গোলের সুযোগ তৈরি করা শুরু করেন রয় কৃষ্ণা, মনবীর সিংরা। তবে সমস্যা অন্য জায়গায়, অক্রমণে উঠতে গিয়ে যে ডিফেন্সে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। খালিদ জামিল (Khalid Jamil) বরাবরই পছন্দ করেন কাউন্টার অ্যাটক। তাই কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেও মাঝেমাঝে বাগান ডিফেন্সে ধাক্কা দিতে শুরু করেন তাঁর ছেলেরা।
খালিদ সুন্দর ফুটবলের পেছনে ছোটেন না। বরং প্রতিপক্ষকে আটকে রেখে এক বা তিন পয়েন্টেই পাখীর চোখ করেন। নিজের প্রাক্তন ক্লাবের বিরুদ্ধেও সেটাই পরিকল্পনা ছিল তাঁর। প্রথমার্ধে খালিদ সফল। বল দখলের লড়াই হোক বা পাস খেলা, কোনটাতেই হুয়ানের দলকে পাল্টা দিতে পারেনি নর্থইস্ট (North East United FC), কিন্তু গোল হজম করেনি তারা। বারাবর মোহনবাগান আটকে গেল আর এক প্রাক্তনী গোলকিপার সঞ্জীবন ঘোষের সামনে। তবে প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে এসে বাগানকে সমতায় ফেরালেন লিস্টন কোলাসো (Liston Colaco)। রয় কৃষ্ণার সেন্টার হেড। প্রথমার্ধ শেষে স্কোরলাইন ১-১।
বাগানকে চাপে রেখে দ্বিতীয়ার্ধেটাও শুরু করে খালিদের দল। তংদম্বা, মাপুইয়া, ধানমাইওয়ারা লিড নেওয়ার মরিয়া চেষ্টা শুরু করেন। খেলার গতির বিরুদ্ধেই ২-১ করে দিলেন সবুজ মেরুনের হুগো বোমাস। কাউন্টার অ্যাকাটা তাঁকে বলটা সাজিয়ে দিয়েছিলেন শুভাশিস। ঠাণ্ডা মাথায় বল গোলে পাঠালেন বোমাস। এরপর থেকে ম্যাচে মূলত দাপট সবুজ মেরুন ব্রিগেডের। একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করে ফেরান্ডোর দল। ৭৫ মিনিটে তিন পয়েন্ট পাকা করে দিলেন হুগো বোমাস। কাউকোর পাস থেকে নিদের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোল বোমাসের। চার ম্যাচ পর জয়ের মুখ দেখল এটিকে মোহনবাগান। পাঁচ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার দৌড়ে ঢুকে পরলেন হুগো বোমাস। কিন্তু বাগান ডিফেন্সের রোগ সারবে কবে? খেলা শেষের তিন মিনিট আগে আবার গোল হজম করল বাগান। হাল না ছাড়া ফুটবলের উদাহরণ রেখে ৩-২ করলেন মাসুর শরিফ।