মেয়েদের বিয়ের বয়স বৃদ্ধি – বিল গেল সংসদের কমিটিতে
সংসদে পেশ হল বটে। তবে বিরোধীদের দাবির সঙ্গে সহমত হয়ে ‘দ্য প্রহিবিশন অব চাইল্ড ম্যারেজ (সংশোধনী) বিল ২১’ সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠাতে বাধ্য হল মোদী সরকার। লোকসভায় বিলটি পেশের সময় প্রবল হট্টগোল হয়। কেন্দ্রীয় নারী কল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানির মুখের সামনে এসে বিরোধী দলের এমপিরা স্লোগান দিতে থাকেন। এতে ক্ষুব্ধ হন মন্ত্রী। বিলটিকে ঐতিহাসিক বলে দাবি করেন তিনি বলেন, একজন মহিলার সঙ্গে এই আচরণ মোটেই শোভা পায় না। কেন এই ঐতিহাসিক বিল আনা হচ্ছে, তা মন দিয়ে বিরোধীরা শুনলে সরকারের সঙ্গে সহমত হতেন। নারী-পুরুষের বিবাহের বয়স একসূত্রে বেঁধে (২১ বছর) সমানাধিকার দেওয়া হচ্ছে। জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে এই আইন কার্যকর হবে। এবং সেটি মেয়েদের ভালোর জন্যই। তাহলে আপত্তি কোথায়?
বিল পেশ করতে গিয়ে স্মৃতি ইরানি আরও বলেন, ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রায় ২০ লক্ষ বাল্যবিবাহ আটকানো গেলেও সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে বিয়ের বয়স না হওয়া সত্ত্বেও ১৫-১৮ বছর বয়সি মেয়েদের ৭ শতাংশ গর্ভবতী হয়েছে। অনূর্ধ্ব ১৮দের ২৩ শতাংশ বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে ১০ শতাংশের আবার গর্ভপাতও হয়ে গিয়েছে। তাই সামাজিক ও পারিবারিক নিরাপত্তার লক্ষ্যেই এই সংশোধনী। এটি সব ধর্মের ক্ষেত্রেই কার্যকর হবে। যদিও মন্ত্রীর কথা শুনতে নারাজ হন বিরোধী দলের এমপিরা। বিলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের প্রশ্ন, তা নিয়ে এত তাড়াহুড়ো কেন? প্রশ্ন তুলে সরব হন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। বিলটি যে মঙ্গলবার সংসদে আনা হবে, তা কেন গতকাল রাত পর্যন্ত জানানো হয়নি? লোকসভার কার্যবিবরণীতেই বা কেন ছিল না? কেন সাপ্লিমেন্টারি লিস্ট অব বিজনেসের মাধ্যমে এই বিল আনা হচ্ছে? বিলটির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ তথা রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কি?এমনই একের পর এক প্রশ্নবাণে বিলটিকে সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানোর দাবি করেন অধীরবাবু। সেই সুরেই সরব হন তৃণমূলের সৌগত রায়ও।
সৌগতবাবুর বক্তব্য, এই বিল নিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আপত্তি আছে। আর সেকথা ভেবেই বিলের বিরোধিতা করছি। আপত্তি তোলেন শিবসেনা, এনসিপির মতো বিরোধী দলের এমপিরাও। আর বিরোধীদের সম্মিলিত চাপের মুখে পড়ে ক্ষুব্ধ স্মৃতি ইরানি জানিয়ে দেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমি বিলটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করছি। সভার অন্দরে সম্মিলিত প্রতিবাদের পাশাপাশি মঙ্গলবার লখিমপুর খেরি ইস্যুতে সংসদের বাইরে প্রতিবাদী মিছিল করল বিরোধীরা। দাবি একটাই, মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য অজয় মিশ্র টেনিকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করতে হবে। কারণ, তাঁর পুত্র গরিব কৃষকদের গাড়ি চাপা দেওয়ার মতো নৃশংস ঘটনায় জড়িত।