এখনই শুরু হচ্ছে না ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডের টোকেনাইজেশন প্রক্রিয়া
একেবারে শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। নয়া বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে না ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডের টোকেনাইজেশন প্রক্রিয়া। তার ফলে এখন যেভাবে অনলাইনে লেনদেন করতে পারছেন, তা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত করতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে, কার্ডের তথ্য মুছে ফেলার জন্য প্রাথমিকভাবে চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্থাকে (মার্চেন্ট) সময় দেওয়া হয়েছিল। পরে তা বাড়িয়ে করা হয়েছিল ৩১ ডিসেম্বর। এবার তা বাড়িয়ে নয়া বছরের ৩০ জুন করা হয়েছে। ৩০ জুন পর্যন্ত কার্ডের তথ্য রাখা যাবে। তারপর সংস্থাকে (মার্চেন্ট) টোকেনাইজেশন প্রক্রিয়ায় সরে যেতে হবে।
কার্ডের টোকেনাইজেশন কী?
কার্ডের পুরো তথ্য দেওয়ার পরিবর্তে টোকেনাইজেশনের মাধ্যমে একটি বিশেষ কোড বা টোকেন তৈরি হবে। যা তৈরি করবে একটি অ্যালগরিদম। সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বারবার কার্ডের তথ্য না দিয়েই অনলাইনে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারবেন।
যখন আপনি লেনদেনের জন্য ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন, তখন আপনার কার্ডের নম্বর, এক্সপায়ারি ডেট, সিভিভি (CVV) এবং ওটিপি (OTP) বা পিন লাগে। কোনও লেনদেনের ক্ষেত্রে আপনি যদি সেইসব তথ্য সঠিকভাবে দেন, তবেই সম্পূর্ণ হবে লেনদেন। টোকেন তৈরির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদতে আপনার আসল কার্ডের তথ্যের পরিবর্তে একটি বিশেষ কোড (দ্বিতীয়বার থেকে সেটা হবে) দিচ্ছেন। প্রতিটি কার্ড, সংস্থার ক্ষেত্রে সেই টোকেনের কোড ভিন্ন হবে।
আগামী মাস থেকে কার্ড গ্রহীতাদের কী করতে হবে?
১) কোনও সংস্থার থেকে কোনও সামগ্রী কেনার প্রক্রিয়া শুরু করবেন।
২) আপনার অনুমতি চেয়ে ওই সংস্থার তরফে টোকেন তৈরির কাজ শুরু করা হবে।
৩) অনুমতি দিলে সেই টোকেন তৈরির জন্য আপনার কার্ডের নেটওয়ার্কের কাছে একটি আবেদন যাবে।
৪) কার্ডের নম্বরের প্রক্সি হিসেবে একটি টোকেন তৈরি করবে ওই কার্ডের নেটওয়ার্ক। তারপর তা ওই সংস্থার কাছে পাঠিয়ে দেবে।
৫) পরবর্তী লেনদেনের জন্য সেই টোকেন রেখে দেবে ওই সংস্থা।
৬) তবে সিভিভি (CVV) এবং ওটিপি (OTP) দিলে তবেই লেনদেন হবে।
৭) অপর কোনও সংস্থা বা অপর কোনও কার্ড দিয়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে আবার নতুন করে টোকেন তৈরির প্রক্রিয়া হবে।
টোকেনের মাধ্যমে লেনদেন কি সুরক্ষিত?
এনক্রিপটেড আকারে সেই কার্ডের তথ্য সংগ্রহ করে রাখা হয়। তার ফলে জালিয়াতির আশঙ্কা কমে যায়। তথ্য চুরি হওয়ার আশঙ্কাও অনেকটা কেটে যাবে। অর্থাৎ টোকেনের মাধ্যমে আপনি কার্ডের তথ্য জানাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সম্প্রতি বিভিন্ন সংস্থার কাছে থাকা তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার অভিযোগ হয়ে উঠেছে। যে তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে জালিয়াতির শিকার হবেন মানুষ। সেই ঝুঁকির মাত্রা কম করতেই টোকেনের প্রক্রিয়া চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে আরবিআই।