ভোট শেষ হতেই প্রচার বর্জ্য সরাতে সক্রিয় তৃণমূল
পুরভোটে পাড়ায় পাড়ায় দেদার লেগেছে প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার। লম্বা লম্বা কাট আউট থেকে শুরু করে বড় পতাকায় ছেয়ে গিয়েছে শহর। ভোটের পর কী হবে এই প্রচার বর্জ্যের? প্রশ্নও তুলতে শুরু করেছিলেন পরিবেশ কর্মীরা। ভোট শেষ হতেই সেই বর্জ্য সরাতে সক্রিয় তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার সাফাই অভিযানে নামেন ১১ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী অতীন ঘোষ। তাঁর বিধানসভা এলাকা কাশীপুর-বেলগাছিয়াতেও একাধিক ওয়ার্ডে হয়েছে খুলে ফেলা হয়েছে প্রার্থীদের পতাকা, ফেস্টুন। তবে, কয়েকটা জায়গায় শুরু হলেও শহরের অন্যত্র বহাল তবিয়তে রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির পতাকা, ব্যানার। শহরকে দৃশ্যদূষণ মুক্ত করতে হঠাতে হবে সব প্রচার বর্জ্য, দাবি পরিবেশ কর্মীদের। বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্র নিবাস হলের দলীয় বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, দ্রুত কাউন্সিলারদের এলাকা সাফাই করতে হবে। তাঁর বার্তা, পোস্টার, ব্যানার, পতাকা খুলে তুলে রাখুন। আগামী রবিবারের মধ্যে সেই কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিও।
বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ হাতিবাগানের মোহনবাগান লেনে দলীয় কর্মীদের নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন অতীন। নিজ উদ্যোগে ফল ঘোষণার পরদিনই এলাকার অলিগলিতে লাগানো ফ্লেক্স, ব্যানার, পতাকা খোলার কাজ শুরু করেন তিনি। অতীনের কথায়, আমি নিজে বিজয় মিছিলে যেতে গিয়ে দেখেছি অনেক বাড়ির সামনেই পতাকা, হোর্ডিং লাগানো থাকায় মানুষ ঠিকমতো দেখতে পারছেন না। তাঁদের অসুবিধা হচ্ছে। বড় বড় পতাকা ফ্লেক্স ঢেকে গিয়েছে এলাকা। প্রতিবার ভোটের পরেই এই কাজ করে থাকি। কিন্তু এবার ভোটে কর্মীরা একটু বেশি উৎসাহী ছিলেন। তাই শহরের অনেক জায়গাতেই বেশি মাত্রায় পতাকা, ব্যানার, হোর্ডিং লাগানো হয়েছে। তাই দ্রুত প্রতিটি পাড়ায় সেগুলি খুলে ফেলতে বলেছি। আমার বিধানসভা এলাকায় আটটি ওয়ার্ডে সর্বত্র প্রচার বর্জ্য সরানো হবে।
তৃণমূল শুরু করলেও বিজেপি কিংবা বামেদের তরফ থেকে তেমন কোনও উদ্যোগের দেখা মেলেনি। প্লাস্টিকের ব্যানার, পোস্টার বিপুলভাবে লাগানোর জন্য প্রত্যেকটি ওয়ার্ড থেকে অন্তত ১০ হাজার টাকা জরিমানার আর্জি জানিয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। এই মর্মে তিনি নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন। যদিও ডান-বাম সব পক্ষই জানাচ্ছে, আগামী একসপ্তাহের মধ্যে সমস্ত পোস্টার, ব্যানার, পতাকা খুলে ফেলা হবে। তবে সেই উদ্যোগ বাস্তবে কতটা দেখা যাবে তা নিয়ে সন্দিহান পরিবেশ কর্মী সোমেন্দ্রমোহন ঘোষ। তিনি বলেন, এমন প্রতিশ্রুতি প্রতি ভোটেই শোনা যায়। অনেক জায়গায় খোলা হয় সেটাও ঠিক। কিন্তু বহু জায়গায় ভাঙাচোরা অবস্থায় ফ্লেক্স পড়ে থাকে। প্লাস্টিকের ব্যানার মাটিতে পড়ে নষ্ট হয়। যা পরিবেশের পক্ষে যথেষ্ট ক্ষতিকারক। এই ব্যাপারে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলকেই যথাযথ দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দিতে হবে।