২৮৪ কোটি নগদ টাকা উদ্ধার! গ্রেপ্তার কানপুরের ব্যবসায়ী পীযূষ জৈন
মোট ২৮৪ কোটি নগদ টাকা। দুবাইয়ে দু’টি বিলাসবহুল বাড়ি। এ ছাড়াও মুম্বই, কানপুর দিল্লি-সহ দেশের নানা জায়গায় সম্পত্তি রয়েছে তাঁর। ১২০ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে সোমবার গ্রেপ্তার করা হল কানপুরের সেই ব্যবসায়ী পীযূষ জৈনকে। সোমবারই তাঁকে আদালতে তোলা হয়। তাঁর ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় আয়কর দপ্তর জানিয়েছে, কোনও এক জন ব্যক্তির কাছ থেকে ইতিহাসে সব চেয়ে বেশি নগদ উদ্ধার করল আয়কর দপ্তর। এর মধ্যে পীযূষকে নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের অভিযোগ, পীযূষ সমাজবাদী পার্টির ঘনিষ্ঠ। সমাজবাদী পার্টির তরফে অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী যোগীর জমানায় সব ধরনের দুর্নীতি বেড়ে গিয়েছে। কংগ্রেসও নাম না করে মোদীকে দুষেছে। টুইটে লিখেছে, ‘উনি বলেছিলেন ৫০ দিন দাও। ৫ বছর কেটে গিয়েছে। নোটবন্দি আসলে ছিল বিপর্যয়।’
আয়কর দপ্তর সূত্রে খবর, নগদ ২৮৪ কোটি টাকা ছাড়াও হদিশ পাওয়া গিয়েছে দেশে-বিদেশে বহু সম্পত্তির। যার মধ্যে কানপুর এবং কনৌজ মিলিয়ে পীযূষের সাতটি সম্পত্তি রয়েছে। মুম্বইয়ে দু’টি বাড়ি, দিল্লিতে একটি এবং দুবাইয়ে দু’টি সম্পত্তি রয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁর কাছ থেকে মিলেছে ৫০ কিলো সোনা এবং ৬০০ কিলো চন্দন কাঠ।
সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, মোট ১২০ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এর পর পীযূষকে ৫০ ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয়েছে। তার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তল্লাশি এখনও শেষ হয়নি। গত সপ্তাহে পীযূষের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। প্রথম দিন ১৫০ কোটির নোট উদ্ধার করে আয়কর বিভাগ। কানপুরের আয়কর বিভাগ যে ছবি প্রকাশ করে, তাতে দেখা যায়, আধিকারিকেরা মাটিতে নোটের স্তূপের মধ্যে বসে মেশিনের সাহায্যে টাকা গুনছেন। মোট তিনটি টাকা গোনার মেশিন এনে প্রায় দু’দিন ধরে টাকা গোনা হয়। একই সঙ্গে বিভিন্ন শহরে তাঁর সংস্থাতেও তল্লাশি করা হয়।
কনৌজে তাঁর পৈতৃক বাড়িতে ১৮টি আলমারির হদিশ পান তদন্তকারীরা। সেই সঙ্গে ৫০০টি চাবির থোকাও পেয়েছেন তাঁরা। সেই চাবিগুলি দিয়ে ওই আলমারি খুলে তল্লাশির চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন তাঁরা এত সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও পীযূষ অত্যন্ত সাধারণ পুরনো একটি গাড়ি ব্যবহার করতেন। তদন্তকারীদের অনুমান, তাঁর উপর যাতে কারও সন্দেহ না হয়, সে জন্যই তিনি এটা করতেন। বেশিরভাগ সময় তিনি একটি স্কুটার চাপতেন। সুগন্ধি দ্রব্যের ব্যবসা ছাড়াও পেট্রল পাম্প, পানমশলা-সহ একাধিক ব্যবসা ছিল তাঁর।