ছ’মাস অন্তর কাজের রিপোর্ট নেবেন মুখ্যমন্ত্রী, চাঙ্গা কলকাতা পুরসভা
রাজ্য প্রশাসনিক বৈঠকের মতো এবার কলকাতা পুরসভাতেও হবে রিভিউ বৈঠক। বিভাগীয় কাজকর্মের ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন হবে। কিন্তু, কীভাবে সেই মূল্যায়ন হবে, তাই নিয়েই জোর চর্চা পুরসভার অলিন্দে। কর্তৃপক্ষ বলছে, বরো চেয়ারম্যান, মেয়র পারিষদ থেকে শুরু করে একাংশের আধিকারিকরা এর ফলে চাপে থাকবেন। দূর হবে গয়ংগচ্ছ মনোভাব। কাজ এগবে দ্রুত।
মহারাষ্ট্র নিবাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, ছ’মাস অন্তর কাজের রিপোর্ট নেবেন তিনি। কাজ করতে না পারলে সরে যেতে হবে। ফলে চর্চা শুরু হয়েছে, তাহলে কি এবার মন্ত্রিসভায় রদবদলের মতো মেয়র পারিষদেও হবে অদলবদল? সেই বিষয়টি স্পষ্ট না করলেও ফিরহাদও জানিয়ে দিয়েছেন, মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েই প্রথম বৈঠকে কাজের ভিশন তৈরি করবেন তিনি। সময় বেঁধে করতে হবে উন্নয়নের কাজ। সেই মোতাবেক তৈরি হবে ষাণ্মাসিক রিভিউ রিপোর্ট। কীভাবে হবে এই মূল্যায়ন? তাই নিয়ে জোর আলোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে। একটি সূত্র বলছে, তৃণমূল স্তর থেকে ধাপে ধাপে হবে মূল্যায়ন। মোটামুটি ঠিক হয়েছে, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে যে কাজগুলি হবে, সেটা কতদূর হল, কোন বিভাগ কাজ কেমন করছে, কোথায় কী সমস্যা, ছ’মাস অন্তর সেই সবকিছু বিস্তারিত লিখিত রিপোর্ট কাউন্সিলাররা, বরো চেয়ারম্যানদের কাছে জমা দেবেন। তাঁরা সেখানে নিজেদের মতামত যুক্ত করে রিপোর্ট জমা করবেন মেয়রকে। তারপর সমস্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখে মেয়র নিজস্ব রিপোর্ট বানাবেন। বিভিন্ন বিভাগ থেকে শুরু করে বরো চেয়ারম্যানদের কাজ, সব বিষয়ে নিজের পৃথক মতামত দেবেন মেয়র। সেই রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমা পড়বে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, যার উপর নির্ভর করবে মেয়র পারিষদের ভাগ্য।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন সকলেই। দক্ষিণ তল্লাটের এক নেতা বলেন, শুধু মেয়র পারিষদ নয়। বরো চেয়ারম্যানদেরও ষাণ্মাসিক কাজের মূল্যায়ন প্রয়োজন। কাউন্সিলার কিংবা অনেক বরো চেয়ারম্যানই গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ান। সেই মানসিকতা বদলাতে বাধ্য হবেন তাঁরা। কাউন্সিলারদের তো সরানো সম্ভব নয়, কিন্তু বরো চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে নিষ্ক্রিয়দের সরানো যেতেই পারে। আবার, এর ফলে আধিকারিকদের একাংশের ফাইল আটকে রাখার প্রবণতাও কমবে। অনেক সময় আর্থিক বরাদ্দ হতে দেরি হয়, ষাণ্মাসিক রিভিউ হলে এই ধরনের সমস্যা নিয়ে বলারও জায়গা থাকবে। পুরসভার এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, এই ধরনের উদ্যোগ প্রথম। পুরো সিস্টেম নড়েচড়ে বসবে। রাজ্য প্রশাসনের মত, বার্ষিক কাজের রিপোর্ট তৈরি হলে আরও ভালো হয়।