সবলা মেলায় ভালো বিক্রি, হাসি ফুটল মহিলাদের মুখে
কাটোয়া শহরে সাতদিনের সবলা মেলায় মাত্র তিনদিনেই সাত লক্ষ টাকারও বেশি সামগ্রী বিক্রি হল। ক্রেতাদের চাহিদা দেখে দীর্ঘ করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে মুখে হাসি ফুটেছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মুখে। বাংলার হস্তশিল্পীদের তৈরি নানা শিল্পকর্ম দেদার বিক্রি হচ্ছে। এতে খুশি প্রশাসনের আধিকারিকরাও।
এব্যাপারে কাটোয়ার মহকুমা শাসক জামিল ফতেমা জেবা বলেন, মেলা যেভাবে আয়োজন করা হয়েছিল, তাতে প্রতিটি স্টল থেকেই ভালো বিক্রি হয়েছে। মাত্র তিনদিনেই সাত লক্ষ টাকার বেশি জিনিসপত্র বিক্রি হয়েছে। শিল্পীরা তাঁদের হাতের তৈরি জিনিস বিক্রি করতে পারছেন। তাতে আমরাও খুব খুশি।
কাটোয়া কাশীরাম দাস বিদ্যায়তনের মাঠে ২৩ থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট সাতদিনের সবলা মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিন নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও চলছে। শীতের আমেজে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। গ্রামের মহিলাদের হাতে তৈরি কাঁথাস্টিচ, তাঁতশিল্পীদের তৈরি জামদানি সহ বিভিন্ন প্রকার সিল্কের শাড়ি, পোড়ামাটির শো-পিস, পাটশিল্পের নানা রংবেরঙের শো-পিস, কাঠের কাজের নানা স্টল দিয়েছেন হস্তশিল্পীরা। পাশাপাশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের তৈরি করা নানা জিনিসের স্টল রয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার চারটি পুরসভা সহ মোট ২২টি ব্লক থেকে ৭১টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী মেলায় ৫৯টি স্টল দিয়েছেন। ২৩ থেকে ২৫ডিসেম্বর পর্যন্ত কাটোয়া সবলা মেলায় মোট ৭লক্ষ ১৭হাজার ৪৮৫টাকার জিনিসপত্র বিক্রি হয়েছে। এখনও মেলার চারদিন বাকি রয়েছে। প্রত্যেকেই আশা করছেন এবার মেলায় বিক্রি সর্বকালের রেকর্ড ছুঁতে পারে। কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, সবলা মেলায় এরকম বিক্রি হবে তা ভাবা যায় না। শিল্পীদের আয় হলে তার থেকে আনন্দের আর কিছু নেই। জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে কালনা শহরে সবলা মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেবার ৬৫টি স্টল দিয়েছিল স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। তাতে ৬ লক্ষ ৫৭ হাজার ১১৫ টাকার জিনিসপত্র বিক্রি হয়েছিল। ২০১৯ সালে গলসিতে ৬৪টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের স্টল নিয়ে সবলা মেলা আয়োজিত হয়। সেবার ৯ লক্ষ ২৪ হাজার ৪০০ টাকার জিনিসপত্র বিক্রি হয়েছিল। ২০২০ সালে বর্ধমান শহরে আয়োজিত সবলা মেলা থেকে মোট ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯৮৬ টাকার জিনিসপত্র বিক্রি হয়। এবার কাটোয়া শহরে মাত্র তিনদিনেই রেকর্ড বিক্রি হয়েছে।কেতুগ্রাম থেকে তসর, সিল্ক নিয়ে সবলা মেলায় স্টল দিয়েছে একটি গোষ্ঠী। গোষ্ঠীর এক শিল্পী ওয়াসমিন বেগম বলেন, প্রতিটি শাড়িতে হাতের সূক্ষ্ম কারুকার্য করা আছে। কাঁথাস্টিচের কাজও রয়েছে। সেগুলির দাম দুই থেকে আট হাজারের মধ্যে রয়েছে। তাই ক্রেতারা আকর্ষিত হচ্ছেন। ভালো বিক্রি হচ্ছে। ভাতার ব্লকের এক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য সুজাতা সাঁতরা বলেন, একদিনেই আমাদের স্টল থেকে ১৮ হাজার টাকার শাড়ি বিক্রি হয়েছে। বাকি স্টলগুলিতেও ভালো বিক্রি হচ্ছে। আর এক গোষ্ঠীর সদস্য রেহানা সুলতানা বলেন, আমরা গ্রামের বধূদের হাতের তৈরি কাঁথাস্টিচের কাজ নিয়ে এসেছি। ভালোই বিক্রি হচ্ছে।