ষাটোর্ধ্ব কো-মরবিড রোগীদের ‘বুস্টার’ ডোজের জন্য ডাক্তারি সার্টিফিকেট নেওয়ার প্রয়োজন নেই: কেন্দ্র
শংসাপত্রের শর্ত থেকে সরে এল কেন্দ্র। সরকারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার জানিয়ে দেওয়া হল, ষাটোর্ধ্ব কো-মরবিড রোগীদের ‘বুস্টার’ ডোজের জন্য ডাক্তারি সার্টিফিকেট নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে তৃতীয় ডোজ নেওয়ার আগে অবশ্যই গ্রহীতাকে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে বলেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। আরও একটি বিষয়ে আগের ভাবনা থেকে সরে এসেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ‘হেটারোলোগাস’ অর্থাৎ ভিন্ন ব্র্যান্ডের নয়, বুস্টার ডোজটি হবে আগের ব্র্যান্ডেরই। এ ব্যাপারে আপাতত কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না মোদি সরকার। এ কথা জানিয়েছেন ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অব ইমিউনাইজেশন (এনট্যাগি) প্রধান ডাঃ নরেন্দ্র কুমার অরোরাও। তিনি বলেন, ‘যিনি আগের দু’টি ডোজ কোভিশিল্ড নিয়েছেন, তাঁকে কোভিশিল্ডই নিতে হবে। কোভ্যাকসিন যিনি নিয়েছেন, তাঁকে কোভ্যাকসিন। মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ, অর্থাৎ ভিন্ন ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক ডেটা এলে পরে প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত বদলানো হবে। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ৩৯ সপ্তাহ পরেই তৃতীয়বার টিকা নেওয়া যাবে।’
মন্ত্রক সূত্রে খবর, ভিন্ন ব্র্যান্ডের ভ্যাকসিন দিতে গেলে প্রথমত জোগানের সমস্যা। দ্বিতীয়ত, গ্রহীতার মনেও ধন্দ থাকতে পারে। তাই আপাতত একই ব্র্যান্ড। তবে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের কোভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও খানিক সংশয় রয়েছে। কারণ একটাই, কোভিশিল্ডের তুলনায় কোভ্যাকসিনের উৎপাদন কম। তাই প্রশ্ন উঠছে, জোগানে টান পড়বে না তো? কেন্দ্র অবশ্য এই বিতর্কের আশপাশ দিয়েও যাচ্ছে না। বরং এদিন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছেন, প্রাপ্তবয়ষ্কদের যেখানে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, সেখানে বয়ঃসন্ধিদের টিকার ব্যবস্থা না করাই ভালো। রাজ্যগুলিকে তাঁর পরামর্শ, আলাদা টিকাকেন্দ্রের ব্যবস্থা করুন। যাঁরা টিকা দেবেন, সেই স্বাস্থ্যকর্মীও পৃথক হলে ভালো। দেশের ৭ কোটি ৪০ লক্ষ ৫৭ হাজার তরুণ-তরুণী ৩ জানুয়ারি থেকে এই টিকা পাবেন।
এছাড়াও সরকারি হিসেবে জানা যাচ্ছে, গোটা দেশে ২ কোটি ৭৫ লক্ষ ১৪ হাজার ষাটোর্ধ্ব কো-মরবিড নাগরিক বুস্টার পাবেন। কো-মরবিড ষাটোর্ধ্বের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রত্যক্ষ কোভিড যোদ্ধাদের জন্যও প্রিকশন ডোজের ব্যবস্থা থাকছে। আগামী বছর পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুরে বিধানসভা ভোট। তাই স্বাস্থ্যকর্মী না হলেও এই পাঁচ রাজ্যে যাঁরা ভোটের কাজে যুক্ত হবেন, তাঁরা বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে এই ডোজ দেওয়া হবে।
মঙ্গলবারই আরও দু’টি কোভিড ভ্যাকসিন ও একটি ওষুধকে নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)। ১৮ ঊর্ধ্বদের জন্য সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি ‘কোভোভ্যাক্স’ এবং বায়োলজিক্যাল-ই’র তৈরি ‘করবিভ্যাক্স’ টিকার অনুমোদন মিলেছে। দু’টিই ডবল ডোজ ভ্যাকসিন। কোভোভ্যাক্সের দু’টি ডোজের সময়ের অন্তর তিন সপ্তাহ। করবিভ্যাক্সের অন্তর চার সপ্তাহ। করোনা রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র মিলেছে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ‘মনলুপিরাভির।’ পরপর পাঁচদিন ৮০০ মিলিগ্রামের এই ওষুধ দিনে দু’টি খেতে হবে। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে।