কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

পর্যটনে জোয়ার আনতে নয়া উদ্যোগ, বেলুড়ের গঙ্গা থেকে এবার উড়বে সি-প্লেন

January 4, 2022 | 2 min read

গঙ্গার বুক চিরে যাত্রী নিয়ে আকাশে উড়বে প্লেন। টলটলে জলই এখানে রানওয়ে। সি-প্লেন এবার অন্যতম হাতিয়ার হতে চলেছে এ রাজ্যের পর্যটনে। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, বেলুড় মঠের সামনে গঙ্গায় ওঠা-নামা করবে এই সি-প্লেন। শুধু বেলুড় নয়, আগামী দিনে রাজ্যের আরও ছ’টি জায়গায় এমন প্লেন চালানোর কথা ভাবা হয়েছে।

পর্যটন শিল্পকে আরও আকর্ষিত করতে দেশজুড়ে সি-প্লেন ওড়ানোর পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এরাজ্যে সি-প্লেন কেন্দ্রিক পর্যটনের নকশা সাজিয়েছে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পোর্ট (এসএমপি) কর্তৃপক্ষ। এই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে জায়গা চিহ্নিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষকে। সংস্থার চেয়ারম্যান বিনিত কুমার জানিয়েছেন, জাহাজ মন্ত্রক তাদের ‘প্রি-ফিজিবিলিটি স্টাডি’ করার দায়িত্ব দিয়েছে। সেই রিপোর্ট পাঠানো হবে জাহাজ মন্ত্রকের কাছে। পুরো বিষয়টি দেখবে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। সি-প্লেন চলাচল শুরু হলে দেশের পর্যটন মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্ব আরও বাড়বে বলেই আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। সম্প্রতি কলকাতায় এক বৈঠকে জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর সি-প্লেন চালানো সহ আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে বৈঠক করেন।

বেলুড় মঠ ছাড়া যে সব জায়গায় সি-প্লেন ওড়ানোর কথা ভাবা হয়েছে, সেগুলি হল কল্যাণী, গোসাবা, সাগরদ্বীপ, মুর্শিদাবাদ, মুকুটমণিপুর ও দীঘা। জামশেদপুরের ডিমনা লেককেও এই কাজের জন্য চিহ্নিত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। আসলে যে সব জায়গায় পর্যটকরা সাধারণত যান, সেই সব কেন্দ্রের আকর্ষণ বাড়াতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সি-প্লেন থেকে গোসাবায় নেমে পর্ষটকরা সুন্দরবন ঘুরতে পারবেন। সাগরদ্বীপ অন্যতম তীর্থস্থান, পর্যটক বা তীর্থযাত্রীরা সি-প্লেনে করে সেখানে যেতে পারবেন। এই কারণে মুকুটমণিপুর ও দীঘাকে বাছাই করা হয়েছে। কল্যাণীতে গঙ্গায় অবতরণের পর মায়াপুর-নবদ্বীপে যেতে পারবেন পর্যটকরা। দীঘাতে অবশ্য সমুদ্রের বুকে নামবে না এই বিমান। সমুদ্রের ঢেউয়ের এক্ষেত্রে অন্তরায়। তাই এখানে রানওয়ে হবে সুবর্ণরেখা নদী। সি এরোড্রোম তৈরির উপযুক্ত পরিবেশ যাচাই করেই সি-প্লেন ওঠানামার জায়গাগুলি ঠিক করা হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর ধরেই সি-প্লেন চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে। নীতীন গাদকারি জাহাজ মন্ত্রী থাকাকালীন এই সংক্রান্ত প্রস্তাব আসে। দীঘায় সি-প্লেন চালানোর ব্যাপারে রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও প্রস্তাব এসেছিল।

দেশজুড়ে বিভিন্ন রুটে সি-প্লেন চালাতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। প্রাথমিকভাবে একশোটির বেশি রুটের কথা ভাবা হয়েছে। এরমধ্যে ২৮টি রুটকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। আমেদাবাদ থেকে স্ট্যাচু অব ইউনিটি পর্যন্ত সি-প্লেন পরিষেবার উদ্বোধন হয়েছে। তবে নিয়মিত পরিষেবা এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। আন্দামান ও লাক্ষাদ্বীপেও এই পরিষেবা চালু করতে চাইছে কেন্দ্র।

এদিকে, সি প্লেন ছাড়াও রাজ্যে আরও কয়েকটি প্রকল্প রূপায়ণের কথা পর্যালোচনা করছে এসএমপি। এর মধ্যে রয়েছে জলপথে যাত্রী পরিবহণের জন্য জেটি নির্মাণ, ইছামতী নদীতে পণ্য পরিবহণের জন্য রোরো পরিষেবা, এক নম্বর জাতীয় জলপথে জলযান মেরামতির ব্যবস্থা প্রভৃতি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Belur, #Sea plane, #Ganga

আরো দেখুন