দেশ বিভাগে ফিরে যান

এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রিতেও মোদী সরকারের দুর্নীতি! হাইকোর্টে অভিযোগ দায়ের বিজেপি এমপির

January 5, 2022 | 2 min read

কিছুদিন আগেই তিনি বলেছিলেন, ‘আমি তিনটি সরকার বদলের কারিগর। কী আছে চতুর্থ সরকারের ভাগ্যে?’ তখনই বিজেপি এবং মোদি সরকার কিছুটা হলেও শঙ্কিত হয়েছিল… আবার কী প্ল্যান করছেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী? অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান। এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ এনে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বিজেপির রাজ্যসভার এমপি। তাঁর দাবি, এয়ার ইন্ডিয়ার বিলগ্নিকরণ প্রক্রিয়ায় একঝাঁক অনিয়ম ও দুর্নীতির যোগ রয়েছে। সেই রহস্য ফাঁস হতে পারে সিবিআইয়ের তদন্তে। তাই দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। পাশাপাশি স্বামী অবশ্য এই ইস্যুতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবিও তুলেছেন। হাইকোর্ট এই ইস্যুতে জবাব দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও টাটা গোষ্ঠীকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছে। আগামী কাল, বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট এই বিষয়ে তাদের মতামত জানাবে।

স্বামীর রুজু করা মামলায় টুজি দুর্নীতি থেকে কমনওয়েলথ গেমস—সর্বত্র অনিয়মের বিরাট ইস্যু তৈরি হয়েছিল। তাই বিজেপির অন্দরে অস্বস্তির মেঘ ঘনিয়ে আসাটা অস্বাভাবিক নয়। এবার স্বামীর ইস্যু এয়ার ইন্ডিয়া। এই বিমান সংস্থা কিনেছে টাটা গোষ্ঠী। এখনও চলছে হস্তান্তর পর্ব। আর্থিক লেনদেন প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে আরও এক মাস। সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর অভিযোগ, এয়ার ইন্ডিয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ শুধু নয়, কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি এবং অনিয়ম রয়েছে এর পিছনে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে টাটার হাতে এয়ার ইন্ডিয়া তুলে দেওয়ায় কারা লাভবান হল? প্রশ্ন তুলেছেন স্বামী। বিজেপির এই এমপি দীর্ঘদিন ধরেই নানাবিধ ইস্যুতে মোদি সরকারের সমালোচনা করে আসছেন। ভারতের জমি চীন দখল করে চলেছে এবং সে ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নীরব দর্শক মোদি সরকার—এই অভিযোগে তিনি বারংবার সরব হয়েছেন। তাঁর প্রধান রাজনৈতিক টার্গেট অবশ্য গান্ধী পরিবার তথা কংগ্রেস। ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকা নিয়ে তাঁর করা মামলায় এখনও নাজেহাল সোনিয়া গান্ধীরা। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে, স্বামী ততই খড়্গহস্ত হচ্ছেন মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। চীনের অনুপ্রবেশ ইস্যুতে তাঁর অবস্থান মিলে যাচ্ছে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে। কিন্তু টুইটে সমালোচনা এক, আর কোর্টে যাওয়ার তাৎপর্য আর এক। বিশেষত সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে স্বামী মামলা করলেই তার অভিঘাত গুরুতর হয়ে ওঠে। আর তা বারবার প্রমাণিত।

সরকারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার আদালতকে বলা হয়, এয়ার ইন্ডিয়ার লোকসান এবং তার জন্য বাড়তে থাকা ঋণের বোঝা সরকারের পক্ষে বহন করা আর সম্ভব হচ্ছিল না। তাই বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত। এখানে নিয়ম মেনেই টাটাকে এয়ার ইন্ডিয়ার ভার দেওয়া হয়েছে। সুব্রহ্মণ্যম স্বামী কিন্তু বলেছেন, গোটা প্রক্রিয়ায় এয়ার ইন্ডিয়া নেওয়ার দৌড়ে ছিল মাত্র দু’টি সংস্থা। টাটা গোষ্ঠী এবং স্পাইস জেট নেতৃত্বাধীন কয়েকটি কোম্পানির জোট। মাদ্রাজ হাইকোর্টে চলা একটি মামলার প্রেক্ষিতে এয়ার ইন্ডিয়া কেনার জন্য দরপত্রই জমা দিতে পারেনি স্পাইস জেট। সুতরাং দৌড়ে টাটা ছাড়া আর কেউ ছিল না। এভাবে কি এয়ার ইন্ডিয়ার মতো সংস্থার বিলগ্নিকরণ সঙ্গত? এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কেন্দ্রের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তাঁর দাবি, স্পাইস জেট কোনও কনসর্টিয়ামের সদস্য ছিল না। কিন্তু কারা এয়ার ইন্ডিয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় যুক্ত? কোন কোন সরকারি দপ্তর, অফিসার এবং কর্তৃপক্ষ? সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বলেছেন, এই সব প্রশ্নের উত্তর পেতেই তদন্ত হওয়া দরকার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#air india, #bjp, #Subramanian Swamy, #Modi Government

আরো দেখুন