রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

গেরুয়া শিবিরে মতুয়া বিদ্রোহ! শান্তনুসহ একাধিক বিধায়ককে নিয়ে বিপাকে রাজ্য বিজেপি

January 6, 2022 | 2 min read

বিজেপির রাজ্য কমিটিতে মতুয়া প্রতিনিধি না থাকা নিয়ে যে ‘বিদ্রোহ’ তৈরি হয়েছে, সেই কোন্দল নিয়ে নদিয়ার মতুয়া অধ্যুষিত এলাকার বিধায়করা কার্যত দু-ভাগ। সূত্রের খবর, বেশিরভাগ বিধায়করাই কেন্দ্রীয় জাহাজ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের ভূমিকার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের ডাকা বৈঠকে নদিয়ার দু’জন বিধায়ক যোগ দিয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজন অবস্থান স্পষ্ট করলেও অন্যজন নিজের ফোন সুইচ অফ করে রেখেছেন। ওই বৈঠকের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই নাম না করে শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে নিজের মত প্রকাশ করছেন মতুয়া সম্প্রদায়ের বাকি বিধায়কেরা।

শান্তনু ঠাকুরের নাম না করে রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেছেন, “এটা নিয়ে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে।” বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল এখন এতটাই স্পষ্ট যে তা সামাল দেওয়া যথেষ্টই কঠিন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অবশ্য ‘বিদ্রোহ’ চাপা দিতে রাজ্য কমিটিও কঠোর অবস্থান নিতে চলেছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। ফলে বর্তমানে দলের অন্দরেই যথেষ্ট কোনঠাসা শান্তনু ঠাকুর। যদিও এবিষয়ে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। মতুয়া সম্প্রদায়ের অন্যতম নেতা বলে পরিচিত রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারীকেও বারবার ফোন এবং মেসেজ করা হলেও তিনি প্রতিক্রিয়া দেননি। ফলে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে ‘বিদ্রোহ’ যে জারি থাকছেই, তা বলাই বাহুল্য।

কল্যাণী ও হরিণঘাটা-সহ নদিয়া জেলার রানাঘাট দক্ষিণ, রানাঘাট উত্তর-পূর্ব, কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় মতুয়া সম্প্রদায়ের বিধায়ক রয়েছেন। এছাড়া রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে রয়েছেন মতুয়া সম্প্রদায়ের সাংসদ জগন্নাথ সরকার। বিজেপির রাজ্য কমিটিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি কেন রাখা হয়নি, তা নিয়ে বিজেপি দলের মধ্যে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। তা নিয়ে দলের মধ্যেই তৈরি হয়েছে দু’টি গোষ্ঠী। এদিকে বিদ্রোহ দমন করতে রাজ্য কমিটি কিছুটা কঠোর অবস্থানের আভাস দিয়েছে। এদিকে বৈঠকে যোগ দেওয়া বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী, অসীম সরকার বর্তমানে কী অবস্থায় নিচ্ছেন, তা স্পষ্ট নয়।

মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতা হিসেবে পরিচিত মুকুটমণি অধিকারীকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার প্রায় সারাদিন ফোন সুইচ অফ করে রেখেছেন। দলীয় সূত্রে খবর, তিনি রাজ্য কমিটির সঙ্গে কথা বলেই ‘দূত’ হয়ে ওই বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। এবং ফিরে রাজ্য কমিটিতে সমস্ত কিছু জানিয়েও দিয়েছেন। ওই বৈঠকে কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায় গিয়েছিলেন বলে খবর থাকলেও বুধবার তিনি তা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমি ওই বৈঠকে যাইনি। গিয়েছিলেন মুকুটমণি অধিকারী।” কেন যাননি, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “সাংগঠনিক বিতর্ক সংবাদমাধ্যমের সামনে আনাকে আমি সমর্থন করি না। সাংগঠনিক স্তরে বসেই মিটিয়ে ফেলা যেত। কিন্তু সেটা করা হচ্ছে না।”

অম্বিকা রায় আরও বলেন, “রাজ্য কমিটিতে জগন্নাথ সরকার রয়েছেন। এটা ঠিক,আরও দু-একজনকে নেওয়া যেত। সেটা সাংগঠনিক বিষয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। অন্যান্য পদও তো রয়েছে। তাছাড়া আমি মনে করি, মতুয়াদের মধ্যে যে যে ক্ষোভ রয়েছে, সেই ক্ষোভ অন্যভাবে মেটানো যায়।” জগন্নাথ সরকার অবশ্য বলেছেন, “‘মতুয়াদের মধ্যে থেকে একাধিক বিধায়ক রয়েছেন। আমি সাংসদ রয়েছি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রয়েছেন। এরপরও দল যেটা করেছে, সেটা নিয়ে ব্ল্যাকমেল করা ঠিক নয়।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #Shantanu thakur

আরো দেখুন