অতিমারীকালে ভোটের প্রচারে ভার্চুয়াল সভার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
করোনার তৃতীয় ঢেউ ও ওমিক্রনের (Omicron) সংক্রমণ বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে জনসমাবেশের বদলে জোর দেওয়া হোক ভারচুয়াল সভায় (Virtual Campaigning)। এমনই প্রস্তাব দেশের স্বাস্থ্যমহলের একটা বড় অংশের। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ, নীতি আয়োগ (স্বাস্থ্য) সদস্য ডা. বিনোদ পল, আইসিএমআর-এর ডিজি ডা. বলরাম ভার্গব, এইমস ডিরেক্টর ডা. রণদীপ গুলেরিয়ারা। সেখানে পাঁচ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এই প্রস্তাব দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের তরফে।
গত মাসে এই ধরনেরই একটি বৈঠকে করোনার তৃতীয় তরঙ্গ সংক্রান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। সেই সময় বলা হয়েছিল, সংবিধান মেনে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কিছু বলার নেই। কিন্তু কমিশনের জন্য তাদের পরামর্শ ছিল, নির্বাচন প্রক্রিয়া যেন হয় কড়া কোভিড (COVID-19) বিধিনিষেধ মেনে। প্রাথমিকভাবে অবশ্য সেই ‘পরামর্শ’ কানেই তোলেনি কোনও দল। যদিও এখনও নির্বাচনীবিধি লাগু হয়নি, তবু হয়েছে একের পর এক মেগা প্রচার। সেখানে পথে নেমেছে মানুষের ঢল। এমনকী বিনা মাস্কে সমাবেশ করতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন দলের হেভিওয়েট সব নেতাদের। তেমনই এক সভার পর কোভিড আক্রান্ত হন দিল্লি মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির সর্বভারতীয় সচেতক অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal)।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সংক্রমণ। দেশে জাঁকিয়ে বসা শুরু করেছে ওমিক্রনও। একে একে আপাতত জনসভা বাতিলের কথা ঘোষণা করে কংগ্রেস, সমাজবাদি পার্টি, আম আদমি পার্টি। ফেব্রুয়ারি থেকে উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, গোয়া ও মণিপুরে হওয়ার কথা বিধানসভা নির্বাচন। গত সপ্তাহে সর্বদল বৈঠকের পর মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র জানিয়েছিলেন, নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচন চাইছে প্রতিটি দল। তাই নির্বাচন হবে যথাসময়েই। বিশেষজ্ঞরা আবার প্রায় সেই সময়ই তৃতীয় তরঙ্গ সর্বাধিক থাকার ভবিষ্যৎবাণী করে রেখেছেন। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী জনসভাগুলি সুপার স্প্রেডারের কাজ করতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই আবহেই এদিন কমিশনের সঙ্গে হল স্বাস্থ্য আধিকারিকদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক।
সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনকে (Election Commission) স্বাস্থ্য আধিকারিকরা কিছুতেই কোনও দলকে জমায়েত বা সভা করার অনুমতি না দিতে সুপারিশ করেন। বদলে বেশি করে ভার্চুয়াল র্যালি করতে উৎসাহিত করার কথাও বলেন তাঁরা। একইসঙ্গে রাজ্য প্রশাসনগুলিকে টিকাকরণের গতি বাড়ানোর দিকে জোর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, নীতি আয়োগ (স্বাস্থ্য) সদস্য ডা. বিনোদ পল কমিশনকে বলেন, দেশে এই মুহূর্তে র্যালি বা জনসভা করার পরিবেশ নেই। তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে। শোনা যাচ্ছে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, নির্দেশিকা পাঠিয়ে অবশ্য কোনও কাজ হবে না। রাজনৈতিক দলগুলিকেও সমাজের প্রতি সচেতন হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কিছুতেই জনসমাবেশ করতে দেওয়া যাবে না।