করোনা আবহে সচেতনতার অভিনব বার্তা পবনপুত্রের, মাস্কহীনদের করছেন ‘গদাঘাত’
সেযুগ না এযুগ, তফাৎ বোঝা দায়! ত্রাতার ভূমিকায় ফের অবতীর্ণ পবনপুত্র হনুমান। করোনার সময়ে জীবন রক্ষার ব্রত নিয়ে রবিবার মধ্য হাওড়ার কালীবাবুর বাজারে তিনি ‘আবির্ভূত’ হলেন। সচেতনতার বার্তা দিলেন, মাস্কহীন ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে পরিয়ে দিলেন মাস্ক। তবে তার আগে ছিল নিয়ম ভাঙার দায়ে মাথায় ‘গদাঘাত’।
রাজ্যজুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার রেখচিত্র। কখনও এক একদিনে সংক্রামিত হয়েছেন পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ। সবচেয়ে করুণ পরিস্থিতি কলকাতার। সংক্রমণ তালিকার প্রথম দিকেই রয়েছে সংলগ্ন হাওড়াও। রাজ্য সরকারের হেল্থ বুলেটিন অনুযায়ী, একদিনে এই জেলায় আক্রান্ত প্রায় দেড় হাজার মানুষ। মৃত্যুও হয়েছে বেশ কয়েকজনের। তা সত্ত্বেও হুঁশ ফেরেনি মানুষের। বাজারে অনেকেই মাস্ক ‘ভুলে’ চলে আসছেন। অনেকেই আবার টাকার মতো সযত্নে তা রেখে দিচ্ছেন বুক পকেটে। পুলিসের হাতে ধরা পড়লেই অজুহাত, ‘এই তো সবেমাত্র খুললাম’ কিংবা ‘ভুলে গিয়েছি’। সবকিছু জেনেশুনেও মানুষ যেন কড়া নাড়ছে মৃত্যুর দুয়ারে। ব্যতিক্রম হয়নি রবিবাসরীয় বাজারেও। তাই অগত্যা মানুষকে বাঁচাতে মধ্য হাওড়ার কালীবাবুর বাজারে অবতীর্ণ হলেন পবনপুত্র হনুমান। মাস্ক নেই এমন ব্যক্তি দেখলেই নির্দ্বিধায় ‘প্রহার’ করেছেন হাতের গদা দিয়ে। পরে অবশ্য বুঝিয়ে হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন মাস্ক। সবশেষে মাস্কহীন মানুষদের দিয়ে প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিয়েছেন, যেন ভবিষ্যতে এমন ভুল আর না হয়।
হনুমানের ছদ্মবেশের পিছনে থাকা মধ্য হাওড়ারই বাসিন্দা শৌভিক দাস বলেন, সকাল দশটায় বাজারে বেরিয়েছিলাম। তখন বহু মানুষ মাস্ক ছাড়াই ঘুরছিলেন। ১০০০ মাস্ক সঙ্গে নিয়ে বেরিয়েছিলাম। তার মধ্যে প্রায় সাতশো বিলি করতে হয়েছে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, কত মানুষ এখনও অসচেতন। এখনও মানুষ যদি না বোঝে, তাহলে সমূহ বিপদ। সচেতনতার পাঠ দিতে এমন উদ্ভাবনী কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন হাওড়ার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলার তথা স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী মল্লিকা রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, এই সময়ে মাস্ক পরা কতটা জরুরি, তা নতুন করে বলে দিতে হয় না। কিন্তু তা সত্ত্বেও অনেক মানুষ অসচেতন। জিজ্ঞাসা করলেই তাদের উত্তর, মাস্ক পকেটে রয়েছে, কিংবা ভুলে গিয়েছেন। তাই একটু অন্যভাবে সচেতন করার চেষ্টা। পাশাপাশি যাঁরা এদিন মাস্ক পরে বাজারে এসেছিলেন তাঁদেরকেও আমরা সচেতন থাকার জন্য সতর্ক করেছি। বাকিটা এখন মানুষের হাতে।