করোনার জের, গঙ্গাসাগর মেলায় আগের মতো নেই পুণ্যার্থীদের ভিড়
করোনা আতঙ্ক, পৌষ সংক্রান্তির তিনদিন আগেও তেমন ভিড় নেই গঙ্গাসাগরে (Gangasagar)। ৪০ হাজারের বেশি মানুষ এসেছেন গত ক’দিনে। তবে তাঁরা দ্রুত স্নানের পর রওনা দিয়েছেন ঘরের পথে। সবমিলিয়ে একলপ্তে সাগর মেলা এলাকায় হাজার খানেকের বেশি মানুষের সমাগম নেই, তা স্পষ্ট। যে নাগা সন্ন্যাসীরা প্রতিবার আসেন, তাঁরা এবারের মেলা চত্বর দেখে খানিকটা অবাক। করোনা আবহে মানুষ যে ভিড়ের পথে পা বাড়াচ্ছেন না, সেটা যেমন সত্যি, তেমনই তারিফযোগ্য মেলার আয়োজন। পুণ্যার্থীদের যাতে ভিড়ের মধ্যে না পড়তে হয়, তা নিয়ে অত্যন্ত সাবধানী এবং তৎপর দক্ষিণ ২৪ পরগনা (South 24 Parganas) জেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকরা।
সোমবার সন্ধেবেলা আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছে এবছরের গঙ্গাসাগর মেলার। উদ্বোধন করেন জেলাশাসক পি উলগানাথন। প্রশাসনের তরফ থেকে সমস্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে মেলাকে কেন্দ্র করে। ইতিমধ্যেই সাগর মেলার জন্য সরকারি বাস নামানো হয়েছে ২২৫০টি। বেসরকারি বাস ৫০০টি। একুশটি জেটিকে মজুত রাখা হয়েছে দর্শনার্থীদের ভিড় সামাল দিতে। এই ২১টি জেটির মধ্যে ন’টি স্থায়ীভাবে বানানো হয়েছে এবং ১২টি অস্থায়ীভাবে। চারটি বড় বার্জ যা গাড়ি পারাপার করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। অন্যদিকে ৩২টি বড় ভেসেল এবং ১০০টি লঞ্চ যাত্রী পারাপারের জন্য মজুত আছে।
তবে এর মধ্যেই হাই কোর্টের নির্দেশের পর ডবল ডোজ ভ্যাকসিন (Corona vaccine) ছাড়া মেলায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। দুটি ডোজের ভ্যাকসিন নেওয়ার সার্টিফিকেট অথবা ৭২ ঘণ্টা আগে করা আরটি-পিসিআর (RT-PCR) টেস্টের রিপোর্ট ছাড়া কাউকে মেলায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এমনটাই জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে। আর ইতিমধ্যেই তা মেলা এলাকায় প্রচার করা হচ্ছে মাইকের সাহায্যে। শুধু মেলা এলাকাতেই নয়, যে সমস্ত রাস্তা দিয়ে সাগর মেলাতে প্রবেশ করতে হয়, বিশেষ করে কচুবেড়িয়া, নামখানা, কাকদ্বীপ, চেমাগুড়ি সমস্ত জায়গাতেই তার চলছে প্রচার। গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে করোনা বিধির উপর জোর দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। বুধবার দুপুর পর্যন্ত ১৫ হাজার করোনা পরীক্ষা হয়েছে। তার মধ্যে পজিটিভিটি রেট গড়ে ৪ শতাংশ। এমনই তথ্য জানিয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন কলস করে জল নিয়ে যাওয়া হয় দর্শনার্থীদের উদ্দেশে ও বিশেষ জায়গায় ছড়ানো হবে বলে। ই-দর্শন, ই-স্নান, ই-পূজায় জোর দেওয়া হয়েছে। নতুনভাবে একটি ধ্যানকেন্দ্র খোলা হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণে। যেখানে সকাল এবং সন্ধ্যায় সাধুরা ধ্যান করতে পারবেন। মঙ্গলবার বহু সাধুসন্ত এই ধ্যানকেন্দ্রে গিয়ে ধ্যান করেন। ৫১ কিলোমিটার এলাকাকে পুরোপুরি ব্যারিকেড করা হয়েছে। ২০টি ড্রোন, ১০৫০টি সিসিটিভি নজরদারির কাজে লাগানো হয়েছে।