স্কিল ইন্ডিয়ায় প্রথমবার অংশগ্রহণ করেই সোনা সহ ৩ পদক জয় বাংলার

প্রথমবার অংশ নিয়ে একেবারে ব্রোঞ্জ পদক এবং ৫০ হাজার টাকার পুরস্কার জিতে যাবেন তা স্বপ্নেও ভাবেননি সুমন।

January 13, 2022 | 2 min read

Authored By:

Drishti Bhongi Drishti Bhongi
কৃষ্ণপদ মাইতি

স্কিল ইন্ডিয়ার জাতীয় প্রতিযোগিতায় প্রথমবার সরাসরি অংশ নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। আর তাতেই বাজিমাত। সোনা, রুপো এবং ব্রোঞ্জ—তিনটি পদকই ঢুকেছে রাজ্যের ঝুলিতে। সফল প্রতিযোগীরা অক্টোবরে চীনের সাংহাই শহরে যাবেন আন্তর্জাতিক স্তরে লড়াই করতে।
পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের বাসিন্দা কৃষ্ণপদ মাইতি পেইন্টিং এবং ডেকরেশন বিভাগে সোনা পেয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজের ছাত্র কৃষ্ণপদ জানান, কলেজ অধ্যক্ষই এই প্রতিযোগিতা সম্পর্কে তাঁদের অবহিত করেছিলেন। শুধুমাত্র এই কলেজ থেকেই ১১ জন ছাত্রছাত্রী পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তবে জাতীয় স্তরে টিকে যান দু’জন। একজন ছাত্রী অবশ্য ব্যক্তিগত কারণে প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ান। দিল্লির প্রগতি ময়দানে অনুষ্ঠিত ওই প্রতিযোগিতায় একটি নির্দিষ্ট ডিজাইন বোর্ডের উপর তৈরি করতে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তা করেই বিচারকদের চমকে দিয়েছিলেন কৃষ্ণপদ। তালকাটোরা স্টেডিয়ামে দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদ্যোগ গ্রহণ মন্ত্রকের সচিব রাজেশ আগরওয়াল তাঁর হাতে এক লক্ষ টাকার চেক এবং মেডেল তুলে দেন। সাংহাইতে দেশের মুখ যাতে উজ্জ্বল হয় তার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন কৃষ্ণপদ। এরাজ্যে থ্রিডি ডিজিটাল গেমিং বিষয়টি কাজের ক্ষেত্র হিসেবে এখনও ততটা জনপ্রিয় নয়। সেখানেই তাক লাগিয়ে দিয়েছেন হুগলির রিষড়ার ছেলে শুভজিৎ দাঁ। জিতে নিয়েছেন রুপোর মেডেল এবং ৭৫ হাজার টাকা থ্রিডি গেমিং বিষয়টি অবশ্য এরাজ্যের অফিশিয়াল ক্যাটিগরিতে ছিল না। তার জন্য দিল্লির একটি সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন শুভজিৎ। 


তবে তার এই কৃতিত্ব পশ্চিমবঙ্গের কৃতিত্ব হিসেবে স্বীকৃত হবে। শুভজিৎ বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত প্রথাগত পড়াশোনার পরেই চৌরঙ্গির একটি সংস্থায় অ্যানিমেশন এবং মাল্টিমিডিয়া কোর্স করতে শুরু করি। তাতে ডিপ্লোমা শেষ হয়েছে। এতে অনেক খরচ। তাই ডিগ্রি কোর্স এখনও করতে পারিনি। তবে এই প্রতিযোগিতায় রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে মনে হয়েছে কোর্স করা সার্থক। পুনেতে এই ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির লোকজনের সঙ্গে আমাদের প্রশিক্ষণ হবে। সেখানে যিনি সবচেয়ে ভালো করবেন, তাঁরই কপালে জুটবে সাংহাই যাওয়ার সুযোগ। প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রের প্রতিযোগী এই বিভাগে স্বর্ণপদক জিতলেও তিন পদকধারীর কাছেই সাংহাই যাওয়ার সুযোগ এখনও রয়েছে। শুভজিৎ বলেন, গেমিং ইন্ডাস্ট্রি চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির চেয়ে অনেক বড়।

অ্যাভেঞ্জার্স-এর মতো সিনেমা কয়েকটি তৈরি হয় কিন্তু এ-ধরনের গেমস রয়েছে অসংখ্য তাই এরাজ্যের ছেলেমেয়েরা এই বিষয়ে কোর্স করলে অনেক উপকৃত হবেন বলে তাঁর মত। শুধু তাই নয়, রাজ্য তথা দেশের অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে। চেন্নাইতে গয়নার ডিজাইনের কাজ করা হাওড়া ডোমজুড়ের ছেলে সুমন পালের জীবনটাও এভাবে বদলে গিয়েছে। যে সংস্থার হয়ে কাজ করতেন সুমন, তাদের মাধ্যমেই হাতে তৈরি গয়নার যে প্রতিযোগিতা স্কিল ইন্ডিয়া করতে চলেছে, তার খবর পান তিনি। 


তারপর তিনি বিশেষ প্রশিক্ষণ নেন। চেন্নাইতে কাজ করলেও পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি হিসেবেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। প্রথমবার অংশ নিয়ে একেবারে ব্রোঞ্জ পদক এবং ৫০ হাজার টাকার পুরস্কার জিতে যাবেন তা স্বপ্নেও ভাবেননি সুমন। জীবিকার জন্যই হাতে তৈরি গয়নার কাজ শিখেছিলেন তিনি। অবশেষে তা রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen