প্যান-মোবাইল যোগ ছাড়া ডাকঘরে লেনদেন করা যাবে না
ডাকঘরের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে মোবাইল নম্বর ও প্যান সংযোগ না থাকলে আর লেনদেন করতে পারবেন না গ্রাহক। ২০ হাজার টাকা বা তার বেশি লেনদেনে মোবাইল নম্বর থাকা বাধ্যতামূলক। ৫০ হাজার বা তার উপরের অঙ্কের লেনদেন হলে প্যান সংযোগ থাকতেই হবে। যাঁরা ডাকঘরের সঞ্চয় প্রকল্পে টাকা রাখেন, মেয়াদ শেষে তাঁদের বড় অঙ্কের লেনদেন করতেই হয়। তাই তাঁদের মোবাইল ও প্যান নম্বর জমা করতেই হবে। সেভিংস অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। ভারতীয় ডাকবিভাগ সূত্রে খবর, অনেক গ্রাহক এর আগে প্যান ও মোবাইল নম্বর ডাকঘরে জমা করেছেন। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে তা ‘আপলোড’ হয়নি। অর্থাৎ গাফিলতি ডাকঘরের তরফে। এক্ষেত্রে যতক্ষণ ডাকবিভাগ নিজস্ব সিস্টেমে তা তুলছে, ততক্ষণ লেনদেন করতে পারবেন না তাঁরা। অন্যদিকে, যাঁরা মোবাইল নম্বর জমা করেছেন এবং পরবর্তীকালে তা বদলে ফেলেছেন, তাঁদেরও নতুন নম্বর আপডেট করতে হবে। না হলে লেনদেন বন্ধ। প্যান নম্বর জমা না করেই যাঁরা এতদিন লেনদেন করেছেন, তাঁদেরও দ্রুত সেই কাজ করতে হবে। ডাকঘরে আর্থিক প্রতারণা বাড়ছে। তাতে লাগাম টানতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে ডাকবিভাগ।
২০১৭ সালে এক নির্দেশিকার মাধ্যমে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ফোন নম্বর যোগের কথা ঘোষণা করে ডাকবিভাগ। অন্যদিকে, সরকারের ‘সেভিংস প্রোমোশন জেনারেল রুল’ অনুযায়ী ২০১৮ সালে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার সময় প্যান সংযোগ করতে হবে। সংযোগ না থাকলে গ্রাহককে ছ’মাস সময় দেওয়ার কথা বলা হয় তাতে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, হয় গ্রাহক তা জমা করেননি, অথবা জমা করলেও ডাকবিভাগ আপডেট করেনি।
খামতি ঢাকতে তাই এবার নতুন করে নির্দেশিকা জারি করল ডাকবিভাগ। সেখানে বলা হয়েছে, অ্যাকাউন্ট খোলা, বন্ধ, টাকা তোলা, জমা, ঋণ নেওয়া, ঋণের টাকা পরিশোধ প্রভৃতি ক্ষেত্রে গ্রাহকের প্যান ও মোবাইল নম্বর তাঁদের কাছে আছে কি না, তা ডাককর্মী যাচাই করে নেবেন। যদি তা থেকেও থাকে, সেগুলি বর্তমানে কার্যকর কি না, তাও তিনি যাচাই করবেন। মোবাইল নম্বর বদলে গেলে গ্রাহককে নতুন নম্বর আপলোড করার জন্য আলাদা করে আবেদন করতে হবে। যদি প্যান সংক্রান্ত তথ্য জমা না থাকে, তাহলে ডাককর্মীর দায়িত্ব সেই কাজ সম্পন্ন করা। গ্রাহকের প্যান কার্ড না থাকলে তাঁর থেকে ফর্ম ৬০ বা ফর্ম ৬১ নেওয়া যেতে পারে। যদি দেখা যায়, অ্যাকাউন্টের ‘কেওয়াইসি’ সঠিকভাবে জমা করা নেই, তাহলে তা সম্পন্ন করতে হবে ডাককর্মীকেই। যেসব পোস্ট অফিসে কোর ব্যাঙ্কিং সিস্টেম বা সিবিএস চালু হয়নি, সেক্ষেত্রেও ২০ হাজার টাকা ও ৫০ হাজার টাকার উপরের লেনদেনে যথাক্রমে মোবাইল নম্বর ও প্যান সংক্রান্ত তথ্য রাখা বাধ্যতামূলক। তা ভাউচারের উপর লিখে দিতে হবে। এরপরও যদি দেখা যায়, গ্রাহকের থেকে যথাযথভাবে প্যান ও মোবাইল সংক্রান্ত তথ্য নেওয়া বা আপডেট হয়নি, তাহলে দায়ী থাকবেন সংশ্লিষ্ট ডাককর্মী। এক্ষেত্রে তাঁকে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে বলে জানিয়েছে ডাকবিভাগ।