রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

রূপশ্রী প্রকল্পে রেকর্ড, নয় মাসে আড়াই লক্ষ কন্যার বিয়ে বাংলায়

January 17, 2022 | 2 min read

‘রূপশ্রী’ দিয়েছে সামাজিক নিশ্চয়তা। ‌দিয়েছে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতাকে এগিয়ে চলার নতুন সাহস। মেয়ের বিয়ের জন্য অর্থ জোগাড়ে বাবাকে আজ দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে হচ্ছে না। মমতার স্পর্শে মেয়েরা সসম্মানে যাচ্ছেন শ্বশুরবাড়ি। প্রকল্প চালু হওয়ার মাত্র চার বছরেই ১২ লক্ষ পাত্রী আজ ‘রূপশ্রী’।

প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে মেয়ে। বিয়ের টাকা কী করে জোগাড় হবে, তা নিয়ে একটা সময় নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়ে যেত বাবার। সাহায্যের জন্য ঘুরতে হতো পাড়ার ক্লাব, সামাজিক প্রতিষ্ঠান কিংবা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দরজায়। তাই বাংলা অভিধানে এসেছিল একটি শব্দ, কন্যাদায়গ্রস্ত। পিতার এই সমস্যাটাই কোথাও যেন উপলব্ধি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাবার দুশ্চিন্তা দূর করা, আর মেয়েকে সামাজিক সুরক্ষা দিতে ২০১৮ সালে মমতা চালু করেন ‘রূপশ্রী’ প্রকল্প। পরিবারের বার্ষিক আয়ের দেড় লক্ষ টাকা বা তার কম হলে প্রাপ্তবয়স্ক কন্যা পাবেন এককালীন ২৫ হাজার টাকা। বিশ্ব দরবারে মমতার এই প্রকল্প প্রশংসা, সুনাম, স্বীকৃতি অর্জন করেছে। করোনা হোক বা ভোট, প্রকল্পের গতি থেমে যায়নি। বিয়ের জন্য পাত্রীর হাতে আজও পৌঁছে যাচ্ছে অর্থসাহায্য। নারী শিশু ও সমাজ কল্যাণ দপ্তরের দেওয়া তথ্য বলছে, ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পে উপভোক্তার সংখ্যা ২ লক্ষ ৩৪ হাজার। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পের জন্য দপ্তর খরচ করেছে ৭৯৫ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা।

‘রূপশ্রী’ প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সুবিধা পেয়েছেন ১১ লক্ষ ৭১ হাজার পাত্রী। দপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, সদ্য সমাপ্ত বছর পর্যন্ত এই প্রকল্পে সরকার খরচ করেছে ২ হাজার ৮৯৫ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে নথিভুক্ত হয়েছিল ২ লক্ষ ৯৬ হাজার পাত্রীর নাম। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে তা ছিল ৩ লক্ষ ৪ হাজার। ২০-২১ অর্থবর্ষে নাম নথিভুক্তি ৩ লক্ষ ৩৭ হাজার। আর ২০২১-২২ অর্থবর্ষের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ২ লক্ষ ৩৪ হাজারে। অর্থাৎ সর্বমোট ১১ লক্ষ ৭১ হাজার। ইতিমধ্যে কাগজপত্র সব খতিয়ে দেখে আর্থিক সাহায্য পৌঁছে গিয়েছে ১০ লক্ষ ৩৮ হাজার ‘রূপশ্রী’র হাতে। বাকিটাও শীঘ্রই পৌঁছে যাবে বলে দপ্তরের বক্তব্য।

নারী শিশু ও সমাজ কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের প্রত্যেকটি প্রকল্প জীবনে চলার পথে নতুন রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে। তেমনই রূপশ্রী প্রকল্প—রূপায়ণ করা হয়েছে সাফল্যের সঙ্গে। করোনা পরিস্থিতি এবং কলকাতা পুরভোটের সময়ও কমিশনের নির্দেশ মেনে এই প্রকল্প চলেছে। মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। এই প্রকল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য।’

ওয়াকিবহাল মহল বলছে, মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘সাধ থাকলেও সাধ্য ছিল না’—এই কথাটা এখন হয়তো আর বলতে হচ্ছে না কন্যাদায়গ্রস্ত পিতাকে!

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Rupashree Scheme

আরো দেখুন