দেশ বিভাগে ফিরে যান

মোদীর ভাষণ বিভ্রাট! দিনভর টুইটারে চলল “টেলিপ্রম্পটার প্রধানমন্ত্রী” ট্রেন্ডের ঝড়

January 18, 2022 | 2 min read

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ বিভ্রাট, কাল থেকে টুইটারে ট্রেন্ড চলল #টেলিপ্রম্পটার প্রধানমন্ত্রী। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় যে অভিযোগ বারবার করছিলেন, তাই সত্যি হল। টেলিপ্রম্পটার ছাড়া এক মিনিটও কথা বলতে পারেন না দেশের প্রধানমন্ত্রী।

গতকাল সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই অনুষ্ঠান চলাকালীন মোদীর বক্তৃতা দেওয়ার সময়ই বাঁধে বিপত্তি, বক্তৃতার মাঝে হঠাৎ করেই থেমে যান প্রধানমন্ত্রী। এরপর কয়েক সেকেন্ডের জন্য একেবারে চুপ হয়ে যান প্রধানমন্ত্রী, এদিক ওদিক তাকাতে শুরু করেন। অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। আদপে টেলিপ্রম্পটারের বিভ্রাটের জন্যই থেমে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। গতকালের অনুষ্ঠানের ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, মোদী জিজ্ঞাস্যদৃষ্টি নিয়ে তাঁর পিএমও টিমের দিকে তাকিয়ে আছেন। তারপরেই দেখা যাচ্ছে পরিস্থিতি সামাল দিতে নিজের ইয়ারপিস তুলেনিচ্ছেন মোদী। তিনি জিজ্ঞাসা করেন তাকে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে কিনা, সেই উত্তর হ্যাঁ শুনে মোদী ফের জিজ্ঞাসা করেন তার অনুবাদককে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে কিনা। এরপরেই ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাদের সম্প্রচার কয়েক মিনিটের জন্য বন্ধ করে দেন। তারপর ঘোষণা করা হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য রাখবেন, তারপর ফের প্রথম থেকেই বক্তব্য শুরু করবেন মোদী। নানান মাধ্যমে প্রশ্ন উঠছে মোদী কী ভাষণ দেন তা কী তিনি নিজে আদৌ জানেন!

এরপরেই টুইটার জুড়ে ‘টেলিপ্রম্পটার প্রধানমন্ত্রী’ ট্রেন্ডের ঝড় ওঠে। নেটাগরিকেরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিভ্রাটকে নিয়ে ট্রোল করতে শুরু করেন। বিজেপি বরাবর নরেন্দ্র মোদীর বাগমীতা​ নিয়ে জাহির করে এসেছে, এই ঘটনা সেই মেকি বাগমীতার​ মিথ্যা প্রচারকে বিশ্বের সামনে বিবস্ত্র করে দিল। টেলিপ্রম্পটার ছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী এক মিনিটও কথা বলতে পারেন না। বিশ্ব মানচিত্রে এ জিনিস সত্যিই দেশের জন্য লজ্জার! একদা মোদী বিরোধীদের ট্রোল করতেন, আর আজ নিজের অক্ষমতার জন্যই টুইটার জুড়ে তিনি নেটিজেনদের ট্রোলের খোরাক।

গতকালের ওই ভিডিওতে মোদীর টেলিপ্রম্পটারকেও কথা বলতে শোনা গিয়েছে। স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে কেউ একজন বলছেন, “স্যার আপনি একবার বাকিদের জিজ্ঞাসা করেনিন, সবাই যুক্ত হয়েছেন তো?” (হিন্দি থেকে তর্জমা করা হল)। যদিও প্রধানমন্ত্রীর ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওতে ওই অংশটি সুস্পষ্টভাবে শোনা যাচ্ছে না। কিন্তু ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ভিডিওতে স্পষ্টভাবে শোনা যাচ্ছে কেউ পিছনে ওই কথাগুলো বলছেন। বলাইবাহুল্য মোদীর ইউটিউব চ্যানেলে ইচ্ছাকৃতভাবে ভিডিওর ওই অংশটিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।

মোদী যখন কালস সয়বকে জিজ্ঞাসা করছেন, তাকে শোনা যাচ্ছে কিনা তখন কালস মোদীর বক্তব্যের মাঝেই মোদীর বিস্তারিত পরিচয় দেন। এরপরে মোদীর ফের প্রথম থেকে আবার তার পুরো বক্তব্য রাখেন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ইউটিউব চ্যানেলের সম্প্রচারে তা দেখা গিয়েছে। এই ঘটনাই প্রমান করে, বিশ্বের দরবারে ভারতের প্রতিনিধি হয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বলছেন তা তিনি নিজেই জানেন না! ভিডিওতে দৃশ্যামন মোদীর শরীরী ভাষা বলে দিয়েছে, টেলিপ্রম্পটার তার সামনেই রয়েছে। মোদী মনসংযোগ হারিয়ে ফেলেন, এদিক ওদিক তাকাতে শুরু করেন। কেউ হয়ত মোদীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছিল, পিএমওর যে টিম এই পুরো অনুষ্ঠানটির আয়োজন করছিল মোদীর হয়ত তাদের দিকেই তাকাচ্ছিলেন।

এরপরেই ঝড় ওঠে টুইটারে। #টেলিপ্রম্পটার প্রধানমন্ত্রী ট্রেন্ডে বিরোধী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক, সকলেই ব্যাঙ্গাত্মক শ্লেষে মোদিকে বিদ্ধ করেছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#PM Narendra Modi, #Teleprompter PM, #twitter

আরো দেখুন