মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিদায় নেবে করোনা, আইসিএমআরের সমীক্ষায় নয়া দিশা
মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ, আরও নির্দিষ্টভাবে বললে ১১ মার্চই হতে চলেছে দেশবাসীর হাঁফ ছেড়ে বাঁচার দিন। ভারতে কোভিড মহামারীর স্থায়িত্ব আর বড়জোর দেড় মাস। বুধবার একথা জানিয়েছে দেশের শীর্ষ চিকিৎসা গবেষণা সংস্থা আইসিএমআর। লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজের সঙ্গে চালানো একটি যৌথ সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই তথ্য। এদিন আইসিএমআরের মহামারীবিদ্যার প্রধান ডাঃ সমীরণ পান্ডা জানান, ‘গত ১১ ডিসেম্বর দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে প্রথম আক্রান্তের খোঁজ মেলে। ওই দিন থেকেই কোভিড সংক্রমণের চলতি ঢেউয়ের সূত্রপাত বলা চলে। এই নিয়ে আমাদের সঙ্গে ইমপেরিয়াল কলেজের যৌথ সমীক্ষায় একটি ক্রমিক মডেল অনুসরণ করে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তার পূর্বাভাস বলছে, ওমিক্রনের স্থায়িত্ব মোটামুটি তিন মাস। সেদিক থেকে ধরলে আগামী ১১ মার্চ বা মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই মহামারী শেষ হতে চলেছে।’ নিজের সমর্থনে যুক্তিও দিয়েছেন সমীরণবাবু। তাঁর দাবি, সংক্রমণের গ্রাফ ইতিমধ্যেই নামতে শুরু করেছে। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর ‘এনডেমিক’ পর্যায়ে চলে যাবে করোনা। সীমিত এলাকায় সীমাবদ্ধ থাকবে সংক্রমণ। দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রে আরও আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
আইসিএমআরের বিজ্ঞানীরা আরও জানাচ্ছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে মোটামুটি তিনটি ঘটনা দেখা যাচ্ছে। এক, প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় আক্রান্তের হার বেশি। দুই, উপসর্গযুক্ত রোগী খুব কম। তিন, হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা নামমাত্র।
বাংলায় স্বাস্থ্যকর্তারা সমীক্ষা করে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, গত ৯ জানুয়ারি কলকাতা ও সংলগ্ন চার জেলায় সংক্রমণ শিখরে ওঠে। তারপর থেকে নিম্নমুখী আক্রান্তের হার। যদিও উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় আর কিছুদিন সংক্রমণ বাড়বে। কারণ, তীব্র সংক্রামক এই ভাইরাস রাজ্যের সর্বত্র ছড়িয়ে না পড়া পর্যন্ত এর হাত থেকে পুরোপুরি রেহাই নেই। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের দূরবর্তী জেলাগুলি অতটা ঘনবসতিপূর্ণ না হওয়ায় এক্ষেত্রে বিপদ কম। তারপর সেখানেও সংক্রমণ কমে যাবে। হয়তো মার্চের অনেক আগে বাংলাতে এনডেমিক পর্যায়ে চলে আসবে করোনা মহামারী। বাস্তবেও তাঁদের সেই সমীক্ষার পূর্বাভাস মিলে যাচ্ছে। সমালোচকদের আশঙ্কাকে অমূলক প্রমাণ করে লাগাতার এক সপ্তাহ রাজ্যে করোনার পজিটিভিটি রেট কমেছে। ১৪ জানুয়ারি থেকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যের পজিটিভিটির হার ছিল যথাক্রমে ৩২.১৩, ৩১.১৪, ২৯.৫২, ২৭.৭৩, ২৬.৪৩, ১৯.৩৮ এবং ১৬.৯৮ শতাংশ। স্বাস্থ্যদপ্তরের বুধবারের বুলেটিন অনুযায়ী, বাংলায় গতকালের চেয়ে ১৩ হাজার ৫৮০টি করোনা পরীক্ষা বেশি হয়েছে। তাতেও দেখা যাচ্ছে, পজিটিভিটি কমেছে। এদিন আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৪৪৭ জন। ৩৮ জন মারা গিয়েছেন।