পূর্ব রেলে প্রায় ৫৮ শতাংশই পুরনো রেক! ফের দুর্ঘটনার আশঙ্কা
ময়নাগুড়ি দুর্ঘটনার জেরে দেশের সর্বত্র পুরনো (আইসিএফ) রেক বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। দেশের সমস্ত জোনে অত্যাধুনিক, যাত্রীবান্ধব ও নিরাপদ (এলএইচবি) নয়া রেক চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, পূর্ব রেলে এই মুহূর্তে প্রায় ৫৮ শতাংশ পুরনো রেক দিয়েই চলছে পরিষেবা। হাওড়া, শিয়ালদহ, আসানসোল ও মালদহ—এই চারটি ডিভিশন নিয়ে গঠিত পূর্ব রেল জোন। যাত্রী পরিবহণের নিরিখে দেশের মধ্যে অন্যতম ব্যস্ত এই জোন। সূত্রের দাবি, এই মুহূর্তে পূর্ব রেলের হাতে মোট ১৫৬টি রেক রয়েছে। যার মধ্যে ৯১টি পুরনো রেক। মাত্র ৬৫টি নতুন রেক চলছে পূর্ব রেলে। অর্থাৎ মাত্র ৪২ শতাংশ এলএইচবি রেক রয়েছে ব্যস্ততম এই জোনের কাছে। পুরনো রেক বেশি থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও এক্ষেত্রে বেশি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রেলমন্ত্রী রেক বদলের নির্দেশ দিলেও বাস্তব চিত্র কিন্তু অন্য কথা বলছে। ১২ বগির একটি ট্রেনে বিভিন্ন ধরনের কোচ থাকে। যেমন স্লিপার, ওয়ান এসি, টু এসি, থ্রি এসি ইত্যাদি। কোচগুলিকে রেলের নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী পরপর জুড়ে দিয়ে তৈরি হয় একটি রেক। সূত্রের খবর, পূর্ব রেলের হাতে এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত থ্রি এসি এবং স্লিপার এলএইচবি কোচ নেই। তবে টু এসি, ওয়ান এসি সহ আধুনিক একাধিক এলএইচবি কোচ রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত স্লিপার এবং থ্রি এসি কোচ না থাকায় পূর্ণাঙ্গ একটি এলএইচবি রেক তৈরি করা যাচ্ছে না। তাই পুরনো রেক দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে পূর্ব রেলকে।
এ প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, আমরা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নয়া এলএইচবি কোচ তৈরি করছি। এ সংক্রান্ত আমাদের চাহিদার কথা দিল্লিতে জানিয়েছি। আশা করছি, কিছুদিনের মধ্যেই পূর্ব রেলের সব ট্রেনই এলএইচবি রেকযুক্ত হয়ে যাবে। এখনই পুরনো রেক বদলে নতুন রেক নামানোর কাজ চলছে পুরোদমে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কলকাতা-জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেসের পাঁচটির মধ্যে চারটি ইতিমধ্যেই এলএইচবি রেকে পরিবর্তন করা হয়েছে। বাকি একটি রেক খুব শীঘ্রই এলএইচবিতে বদল করা হবে। পাশাপাশি হাওড়া-অমৃতসর মেলও শীঘ্রই এলএইচবি রেক দিয়ে চালানো হবে। প্রসঙ্গত, এলএইচবি রেকের প্রধান বৈশিষ্ট্য, কোনও দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি কম হয়। দুর্ঘটনায় কোনও কোচ অন্য একটি কোচের উপর উঠে পড়ে না। ময়নাগুড়ি ট্রেন দুর্ঘটনায় যেমনটি ঘটেছিল, তেমন আশঙ্কা কম থাকে। নয়া প্রযুক্তির এলএইচবি রেক থাকলে ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানি অনেকটাই কমত বলে মনে করেন রেলকর্তারাও।