শেষ কারখানাও বন্ধ করে দিল অ্যাটলাস
টিমটিম করে শহিদাবাদের (গাজিয়াবাদ) কারখানায় জ্বলছিল শিবরাত্তিরের শেষ সলতে। লকডাউন এসে কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিল।
‘ওয়ার্ল্ড বাইসাইকেল ডে’, ৩ জুন, আচমকাই শহিদাবাদে কারখানায় উৎপাদনে ব্রেক কষে দিলেন অ্যাটলাস সাইকেল কর্তৃপক্ষ। ছ’বছর আগে মালানপুর এবং ২ বছর আগে সোনেপতে সংস্থার বাকি দুই কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ১২০০-কর্মী নিয়ে চালু ছিল কেবল সংস্থার বৃহত্তম শাহিদাবাদ কারখানা। সেটাও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অ্যাটলাসের পথচলা শেষ হয়ে গেল বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
১ জুন থেকে দেশে আনলক-১ চালু হওয়ার পর সোমবার ও মঙ্গলবার সকালে যথারীতি কাজে এসেছিলেন হাজারখানেক কর্মী। বুধবার সকালে কাজে এসে দেখেন কারখানার বন্ধ গেটে নোটিশ ঝোলানো। তাতে লেখা, ‘গত বেশ কয়েক বছর বিপুল আর্থিক ক্ষতি মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছিল সংস্থাকে। লকডাউনে আরও সর্বনাশ হয়েছে। যা আর্থিক সংস্থান ছিল, তা দিয়ে কোনও মতে এতদিন চলেছে। কিন্তু এখন সাইকেল তৈরির কাঁচামাল কেনার ক্ষমতাও আমাদের নেই। আর্থিক সংস্থান না হওয়া পর্যন্ত কর্মীদের ‘লে-অফ’-এ রাখা হচ্ছে।’ অর্থাৎ, কারখানা না খুললেও আগের মতোই ছুটির দিন ছাড়া সবাইকে কারখানার গেটে এসে নিয়মমাফিক হাজিরা নথিবদ্ধ করাতে হবে। তা না হলে অবসরকালীন সুযোগসুবিধা পাওয়া যাবে না।
সাইকেল এমপ্লয়ি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মহেশ কুমারের বৃহস্পতিবার জানান, দু’বছর আগে একই ভাবে সোনপতের কারখানাও রাতারাতি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমরা বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’ ৫ জুন, মামলার শুনানি।
গত বছরেও ‘এশিয়াজ মোস্ট রিলায়েবল সাইকেল ব্র্যান্ড’ শিরোপা পায় অ্যাটলাস। এ হেন সংস্থার এ রকম আচমকা বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলেই।
শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। যেমন টুইট করে এর পিছনে যোগী সরকারের ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন কংগ্রেসের মহাসচিব (পূর্ব উত্তরপ্রদেশ) প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢড়া। তিনি লিখেছেন, রাজ্য সরকারের তরফে এত আর্থিক প্যাকেজ দেওয়া, বাস্তব হচ্ছে পরের পর কারখানা বন্ধ হচ্ছে, কর্মহীন হচ্ছেন অনেকে।’ বিরোধীদের পাল্টা দাবি, ‘২০১৪ সালে মালানপুর এবং ২০১৮ সালে সোনেপতের কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময় কেউ শোরগোল করেননি। হঠাৎ এখন রাজনৈতিক ফয়দা তোলার চেষ্টা করছে কংগ্রেস।’
সে যাই হোক। চাকা গড়ানো আপাতত বন্ধ হল অ্যাটলাসের। ফের তা চলবে কি না, সময়ই বলবে।