রাজ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন দ্রুত কার্যকর করতে কেন্দ্রকে চিঠি দিচ্ছে মতুয়ারা
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) নিয়ে বিজেপির উপর চাপ বাড়াচ্ছে মতুয়ারা। এই আইন কার্যকর করতে দেরি হচ্ছে কেন, তা জানতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিতে চলেছে মতুয়া মহাসংঘের কমিটি। বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝানো হচ্ছে বলেও মনে করছেন মতুয়া প্রতিনিধিরা। সোমবার ঠাকুরনগরের মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানালেন মতুয়া মহাসংঘ অধিপতি তথা গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর। এদিন আবার ঠাকুরবাড়ি গিয়ে সুব্রতর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার।
এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে সুব্রত ঠাকুর বলেন, “সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর না হওয়ায় মতুয়াদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সেই অনিশ্চয়তা দূর করা আমাদের কর্তব্য। মতুয়া মহাসংঘ বৈঠক করে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাবে। জানতে চাওয়া হবে, আইন কার্যকর করতে সমস্যা কোথায় হচ্ছে?” পাশাপাশি অবশ্য গাইঘাটার বিধায়ক দাবি করেছেন, “একমাত্র বিজেপি সরকার উদ্বাস্তুদের নিয়ে চিন্তা করেছেন। কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল কিন্তু তারা কিছু করেনি। বিজেপি তো আইন পাস করেছে৷” এর পরই বিজেপি বিধায়ক আশ্বাস দিয়েছেন, “আমাদের আর কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে। সবই হয়ে গিয়েছে, শুধু ছোট্ট একটা মাইলস্টোন ছোঁয়া বাকি। সেটাও হয়ে যাবে।”
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে আগে মতুয়াদের নাগরিকত্বের আশ্বাস দিয়েছিল বিজেপি। ক্ষমতায় ফিরে সংসদে সেই আইনও পাস করা হয়। এর পরই দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। তার পর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার বদলে করোনা মহামারীর দোহাই দিয়ে হিমঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে আইনটিকে। এর পর থেকেই মতুয়াদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়তে শুরু করেছে। বিধানসভা ভোটের সময় প্রচারে এসে দ্রুত আইন কার্যকরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার পর প্রায় ১ বছর কেটে গেলেও আইন প্রণয়ন হয়নি। এবার সেই আইন কার্যকর করার জন্য গেরুয়া শিবিরের উপর চাপ বাড়াতে চলেছে মতুয়ারা।
এদিকে এদিন সন্ধেয় ঠাকুরবাড়িতে আসেন হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, “আমি কিছুদিন অসুস্থ ছিলাম। ওঁর (সুব্রত ঠাকুর) সঙ্গে আলোচনা করে জানতে পারব, এতদিন কী হয়েছে। আমরা চাইছি যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন তাড়াতাড়ি কার্যকর হোক। এই ইস্যুতে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ আন্দোলন করেছিল। তাই তারা চিঠি দিতেই পারে। কেউ ব্যক্তিগতভাবেও চিঠি দিতে পারে।” এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, “মতুয়াদের অনেকগুলি সংগঠন আছে। তাদের সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা অন্য কোনও সমস্যা নিয়ে তারা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতেই পারে।”