ক্যানিং বাস টার্মিনাসের জন্যে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাজ্যের
কাজ প্রায় শেষের মুখে। মাত্র ৩ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকার জন্য আটকে ছিল ক্যানিং বাস টার্মিনাস নির্মাণ। সেই অসমাপ্ত বাস টার্মিনাসটি দ্রুত চালু করার লক্ষ্যে অর্থ বরাদ্দের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২৯ ডিসেম্বর গঙ্গাসাগরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি মুখ্য সচিবকে টার্মিনাসের কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন।
২০১৭ সালে এই টার্মিনাস নির্মাণের জন্য ৭ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। কাজ শুরু হয় পরের বছর ২০১৮ সালে। কিন্তু ৭০ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার পর দেখা যায় বরাদ্দের গোটা টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। তারপর বাকি অংশের কাজ শেষ করতে প্রয়োজনীয় টাকার জন্য শুরু হয় দৌড়ঝাঁপ। কিন্তু অর্থ পাওয়া যায়নি। ধীরে ধীরে টার্মিনাসটি আবর্জনা ফেলার ভ্যাটে পরিণত হচ্ছিল। নানা অসামাজিক কাজের আখড়াও হতে শুরু করেছিল। গত বছর নির্বাচনে জিতে এসে বর্তমান বিধায়ক পরেশরাম দাস টার্মিনাসটি শেষ করতে বিভিন্ন জায়গায় তদ্বির করেন। পরিবহণ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ও জেলাশাসককে একাধিকবার চিঠি লিখে আবেদন জানান। অবশেষে সেই দৌড়ঝাঁপের ফল মিলল। বিধায়ক জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি মুখ্যসচিবকে দেখে নিতে বলেছেন। আশা করছি অর্থের ব্যবস্থা হয়ে যাবে। তারপর কাজ শেষ করতে বেশি সময় লাগবে না। বাস টার্মিনাসটি হয়ে গেলে ক্যানিং বাসস্ট্যান্ড এলাকার যানজটও কমবে। কারণ, বর্তমানে বাসগুলি রাস্তার উপরেই দাঁড়িয়ে থাকে। ৫ একর জমির উপর তৈরি এই টার্মিনাসটিতে ৩০টি বাস দাঁড়াতে পারবে।
টার্মিনাস তৈরি দ্রুত শেষ হবে বলে আশাবাদী পরিবহণ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডলও। তিনি বলেন, আশা করছি, এই অর্থবর্ষেই টাকা চলে আসবে। ফাইল ইতিমধ্যেই চলে গিয়েছে। অর্থাৎ মাস দুয়েকের মধ্যে বরাদ্দ মঞ্জুর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, বাসের জন্য শুধু নয়, যানজট বাড়ছে অটোর জন্যও। ক্যানিং থেকে বারুইপুর, হেড়োভাঙা প্রভৃতি রুটের অটো রাস্তার উপরই দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে জ্যাট জট বাড়ায়। এই সমস্যাটির কথা বিধায়ক পরেশরামবাবুর কানেও গিয়েছে। তিনি ক্যানিং স্টেশনের পাশেই একটি ফাঁকা জমি দেখেছেন। যেখানে একটি অটোস্ট্যান্ড করতে চান তিনি।
অটো যাতায়াতের জন্য আলাদা একটি রাস্তাও করা হবে। তার জন্য কয়েকটি দোকান ভাঙার প্রয়োজন হতে পারে। তিনি সে কথা দোকানগুলিকে জানিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে স্টেশনের পাশের জমিটি রেলের। জমিটি জনস্বার্থে ব্যবহার করার জন্য তিনি শীঘ্রই রেলকে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন। ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক গোটা এলাকাকে জঞ্জালমুক্ত করে তোলার ক্ষেত্রেও উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, মাতলা ২ পঞ্চায়েতে কঠিন বর্জ্য ফেলার জন্য স্টেডিয়ামের কাছে নদীর চরে ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি জমি কেনা হয়েছে। ভবিষ্যতে অন্যান্য পঞ্চায়েতগুলি থেকেও গাড়ি গিয়ে বর্জ্য সংগ্রহ করে ওই জমিতে ফেলবে। এতদিন ক্যানিং মহকুমা শহরে কঠিন বর্জ্য ফেলার কোনও নির্দিষ্ট জায়গা ছিল না। এই উদ্যোগের ফলে সেই সমস্যার কিছুটা সমাধান হল বলে মনে করছেন বাসিন্দারা। পরেশরাম দাস জানিয়েছেন, তাঁর লক্ষ্য, ক্যানিং শহরের জন্য পুরসভার মর্যাদা আদায় করা। তার জন্য নাগরিক পরিষেবা সংক্রান্ত একাধিক পরিকল্পনা রূপায়ণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।এই মুহূর্তে