প্রতি তিন জনে একজনের মৃত্যুর আশঙ্কা! করোনার নতুন স্ট্রেন নিয়ে সতর্কবার্তা বিজ্ঞানীদের
তুলনামূলক ‘নির্বিষ’ ওমিক্রনেই করোনাভাইরাস (coronavirus-NeoCov) অতিমারির গঙ্গাপ্রাপ্তি হবে বলে ভাইরোলজিস্টদের একাংশ আশায় আছেন। তৃতীয় তরঙ্গে ওমিক্রনের গতিপ্রকৃতিই আশাবাদী করে তুলেছে জীবাণু বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু, তা যে হওয়ার নয়, করোনাভাইরাস (Covid new variant) যে আরও শক্তি নিয়ে তেড়েফুঁড়ে ‘মরণকামড়’ বসাতে চলেছে, এ নিয়ে সতর্ক করলেন চিনের উহান শহরের বিজ্ঞানীরা (Wuhan Scientists)। ২০১৯ সালে এই উহানেই প্রথম সন্ধান মিলেছিল কোভিড-১৯ ভাইরাসের। উহানের বিজ্ঞানীদের সতর্ক করার কারণ করোনাভাইরাসের নতুন আর একটি ভ্যারিয়েন্ট ‘নিয়োকভ’ (NeoCov)। দাবি, বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় ছড়াতে শুরু করেছে করোনাভাইরাসের নতুন এই স্ট্রেনটি।
উহানের বিজ্ঞানীদের উদ্ধৃত করে রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা স্পুটনিক (Sputnik) জানাচ্ছে, করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেন NeoCov হল PDF-2180-CoV এর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। মানুষকে সংক্রমিত করার ক্ষমতা রয়েছে। গবেষণায় সামনে এসেছে, নিয়োকভে সংক্রমণ শুধু নয়, মৃত্যুহারও অনেক বেশি। ওমিক্রন দ্রুত সংক্রমিত হলেও মৃত্যুহার সেই তুলনায় নগণ্য। কিন্তু NeoCov সংক্রমণে মৃত্যুহারের জন্যই স্বস্তিতে থাকার উপায় নেই।
বিজ্ঞানীদের দাবি, করোনাভাইরাসের নয়া এই রূপটিকে একেবারে নতুন কিন্তু বলা যাবে না। এটি মূলত MERS-CoV ভাইরাসের সঙ্গে যুক্ত। এর আগে এই ভাইরাসটি ২০১২ এবং ২০১৫ সালে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে আবিষ্কৃত হয়েছিল এবং এটি SARS-CoV-2 এর অনুরূপ। এই নিয়োকভ কতটা ভয়ংকর হতে চলেছে, তার একটা আভাসও দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। MERS-CoV-এর মতো এর মৃত্যুহার। গড়ে প্রতি তিন জন আক্রান্তের মধ্যে একজনের মৃত্যুর আশঙ্কা। আবার বর্তমান করোনাভাইরাস SARS-CoV-2 এর মতো সংক্রমণ ক্ষমতা।
গবেষকদের দাবি, করোনাভাইরাস বা শ্বাসকষ্টের মতো অসুখে শরীরে যে অ্যান্টিবডি বা প্রোটিন অণু তৈরি হয়, তা দিয়ে কিন্তু নিয়োকভকে ঠেকানো সম্ভব নয়। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই রূপটি SARS-CoV-2-এর মতো একইরকম ভাবে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। হুঁশিয়ারি, মানুষের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে আর একটাই মাত্র মিউটেশন বাকি রয়েছে। bioRxiv ইলেকট্রনিক লাইব্রেরিতে এই গবেষণার বিশদ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, অপ্রত্যাশিত ভাবেই নিয়োকভের সন্ধান পেয়েছেন।
NeoCoV দক্ষিণ আফ্রিকার একটি বাদুড় প্রজাতির মধ্যে সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত হয়। NeoCoV এবং এর নিকটাত্মীয় PDF-2180-CoV মানুষকেও সংক্রামিত করতে পারে। উহান ইউনিভার্সিটি ছাড়াও চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট অফ বায়োফিজিক্স এ বিষয়ে আরও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ান স্টেট ভাইরোলজি এবং বায়োটেকনোলজি রিসার্চ সেন্টারের বিশেষজ্ঞরাও নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের ক্ষতিকারক দিকগুলি খতিয়ে দেখছেন।