মোদী বিরোধী খবরের জের? বন্ধ মলয়ালম চ্যানেল মিডিয়া ওয়ান
ব্যবধানটা কয়েক মাসের। ইস্যু সেই একই। জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার দোহাই দিয়ে সেপ্টেম্বরে কলকাতা টিভিকে নোটিস পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। মোদী সরকারের বক্তব্য ছিল, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে অনুমোদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক দিয়ে থাকে, তা কলকাতা টিভির ক্ষেত্রে খারিজ হয়ে গিয়েছে। কেন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হবে না, তা জানতে চায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। যদিও কলকাতা হাইকোর্টে মুখ পোড়ে কেন্দ্রের। খানিকটা একই কায়দায় এবার আঘাত নেমে আসল জনপ্রিয় মলয়ালম চ্যানেল মিডিয়াওয়ানের উপর।
মিডিয়াওয়ানের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করেনি কেন্দ্র। তাই বাধ্য হয়ে সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। তবে কেরল হাইকোর্টের নির্দেশে আপাতত স্বস্তিতে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্র ‘নিরাপত্তার কারণ’ উল্লেখ করে মলয়ালম নিউজ চ্যানেল মিডিয়াওয়ান-এর সম্প্রচারে বাধা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে কেন্দ্রের নির্দেশে দু’দিনের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে কেরল হাইকোর্ট। বিচারপতি এন নাগরেশ জানিয়েছেন, পরবর্তী শুনানি বুধবার। আদালত অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস মনুর কাছে কেন্দ্রের জবাব তলব করেছেন।
এটাই অবশ্য প্রথম নয়। ২০২০ সালেও কেন্দ্রের রোষানলে পড়েছিল মিডিয়াওয়ান। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে দাঙ্গার বিষয়ে রিপোর্ট করার সময় কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক (নিয়ন্ত্রণ) আইন,১৯৯৮-এর বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে ৪৮ ঘণ্টার জন্য ব্যান করা হয় মিডিয়াওয়ানকে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক জানিয়েছিল, দিল্লির হিংসার বিষয়ে চ্যানেলের প্রতিবেদনটি পক্ষপাতদুষ্ট। তাতে ইচ্ছাকৃতভাবে সিএএ সমর্থকদের ভাঙচুরের দিকে মনোনিবেশ করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করে চ্যানেলটি। যা আপত্তিকর মনে হয়েছিল কেন্দ্রের।
মিডিয়াওয়ান-এর মালিক মধ্যমাম ব্রডকাস্টিং লিমিটেড। যাদের অনেক বিনিয়োগকারী জামাত-ই-ইসলামি হিন্দের কেরল শাখার সদস্য। চ্যানেলের সম্পাদক প্রমোদ রমন একটি বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক বলেছে যে নিরাপত্তার কারণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কেন্দ্র এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি। আমরা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি। প্রক্রিয়াটি শেষ হলে চ্যানেলটি ফিরে আসবে। ন্যায়বিচারের জয় হবে, এই আশায় আমরা সাময়িকভাবে সম্প্রচার স্থগিত করছি।’
এভাবে টিভি চ্যানেলের সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় কেরলে ক্ষমতাসীন সিপিআই(এম) এবং বিরোধী দল কংগ্রেস কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন। সিপিআই (এম)-এর বক্তব্য, মিডিয়াওয়ান-এর উপর কেন্দ্রে নিষেধাজ্ঞা আসলে ‘মিডিয়া হাউসগুলিকে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার বৃহত্তর পরিকল্পনার’ অংশ। কংগ্রেস নেতা ভিডি সতীসান কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘অগণতান্ত্রিক’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, মোদী সরকার মিডিয়ার প্রতি সঙ্ঘ পরিবারের অসহিষ্ণু দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়ন করছে।