নেতৃত্বে না থেকেও দলের ‘লিডার’ হওয়া যায়, ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য বিরাটের
টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর প্রথমবার মুখ খুললেন বিরাট কোহলি। এখন কোনও ফরম্যাটেই জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন নন তিনি। তবুও নিজেকে দলের ‘লিডার’ মনে করেন ভিকে। তাঁর কথায়, ‘লিডার হওয়ার জন্য নেতৃত্বের প্রয়োজন পড়ে না।’ এই ব্যাপারে মহেন্দ্র সিং ধোনিকেই উদাহরণ হিসেবে দেখছেন তিনি।
‘ফায়ারসাইড চ্যাট উইথ ভিকে’ নামে এক অনুষ্ঠানে বিরাট বলেছেন, ‘সব কিছুরই একটা মেয়াদ থাকে। তারপর এগিয়ে যেতে হয়। এখন ব্যাটসম্যান হিসেবে আরও বেশি করে অবদান রাখতে চাই। আর লিডার হতে গেলে সবসময় ক্যাপ্টেন থাকতে হবে বলে মনে করি না।’ ধোনির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘লিডার হিসেবেই দলে ছিল এমএস। আমরা ক্রমাগত ওর কাছে যেতাম পরামর্শের জন্য। আসলে মাহি ভাই একটা সময়ে বুঝেছিল যে স্বাভাবিক ভাবেই এবার নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার সময় এসেছে। যাতে আমি ভারতীয় ক্রিকেটকে নিজের মতো করে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি । আমার নিজেরও মনে হয়েছে যে এবার সরে দাঁড়ানো উচিত। প্রয়োজন অন্য ভাবে এগনোর চিন্তাভাবনা। আমি একজন ক্রিকেটার হিসেবে ধোনির নেতৃত্বে খেলেছি। আবার দীর্ঘসময় ধরে নেতৃত্বও দিয়েছি। এবং সবসময়ই অধিনায়কের মতোই ভেবেছি। দলকে জেতানোর লক্ষ্যেই নেমেছি।’
কোহলি যে ব্যাখ্যাই দিন না কেন, তাঁর সিদ্ধান্ত অবাক করেছে রিকি পন্টিংকে। তবে এর ফলে ব্যাট হাতে বেশ কিছু রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হল বলেও মনে করছেন প্রাক্তন অজি ক্রিকেটার। ‘দ্য আইসিসি রিভিউ’-এর প্রথম এপিসোডে পন্টিং বলেছেন, ‘স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিলাম। গত আইপিএলের প্রথম পর্বের সময় বিরাটের সঙ্গে অনেক কথা হয়েছিল। সাদা বলের ক্রিকেটের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে কথা বলছিল ও। টেস্টের নেতা হিসেবে ওর প্যাশনও উপলব্ধি করেছিলাম। অধিনায়কের দায়িত্ব উপভোগ করত বিরাট। ভালবাসত কাজটাকে। তাই ওর ক্যাপ্টেন্সি ছাড়ার সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছি।’ তবে সবদিক বিচার করেই যে কোহলি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, তা মনে করছেন বিশ্বের অন্যতম সফল অধিনায়ক পন্টিং। তাঁর মতে, ‘বিরাট প্রায় সাত বছর অধিনায়ক ছিল। আর ভারতেই অধিনায়কের উপর সবচেয়ে বেশি চাপ থাকে। ওদেশে প্রত্যেকেই বিশেষজ্ঞ। এখন বিরাটের বয়স ৩৩। ও নিশ্চয়ই আরও কয়েক বছর খেলতে চাইবে। চাইবে বেশ কিছু রেকর্ড ভাঙতেও। মনে রাখবেন, বিরাট কিন্তু যা ভাঙার থেকে বেশি দূরেও নেই। নেতৃত্বের বাড়তি বোঝা কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেললে সেই লক্ষ্যে ওর সুবিধাই হবে।’
৭৭ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে পন্টিং জিতেছেন ৪৮টিতে। এহেন পন্টিং অবশ্য নিজের চেয়েও বড় করে দেখছেন নেতা কোহলির সাফল্যকে। তাঁর যুক্তি, ‘বিশ্ব ক্রিকেটকে শাসন করে এমন একটা দলের নেতা ছিলাম আমি। কিন্তু বিরাট নেতা হওয়ার আগে ভারত বিদেশে সেভাবে ম্যাচ জিতত না। ভিকে’র অধীনেই সেই হাওয়া বদলেছে। টেস্টকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া এবং দেশের পাশাপাশি বিদেশেও ম্যাচ জিততে ঝাঁপিয়ে পড়ার ব্যাপারে ওর বড় ভূমিকা ছিল।’ ৬৮টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে বিরাট জিতেছেন ৪০টিতে। পন্টিংয়ের মতে, ২০১৮-১৯ মরশুমে অস্ট্রেলিয়ায় ২-১ ফলে জেতাই বিরাটের নেতৃত্বের সেরা সাফল্য।