আনলকে সংক্রমণ,কেন্দ্র-রাজ্যের জবাব চাইল হাইকোর্ট
প্রায় আড়াই মাস সব বন্ধ রাখার পর করোনা সংক্রমণের গ্রাফ যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখনই অপরিকল্পিত ভাবে লকডাউন প্রায় তুলে দেওয়ায় সংক্রমণ আরও বাড়ছে অভিযোগে জনস্বার্থ মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে।
প্রায় আড়াই মাস সব বন্ধ রাখার পর করোনা সংক্রমণের গ্রাফ যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখনই অপরিকল্পিত ভাবে লকডাউন প্রায় তুলে দেওয়ায় সংক্রমণ আরও বাড়ছে অভিযোগে জনস্বার্থ মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে। এ নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। মামলাকারীর আরও অভিযোগ, ভিন রাজ্য থেকে শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানো হলেও তাঁদের কোয়ারান্টিনে রাখার পরিকল্পিত ব্যবস্থাও করা হয়নি। ফলে এক দিকে এই শ্রমিকদের করোনা আক্রান্ত হওয়া যেমন বাড়ছে, তেমনই তাঁদের থেকে এলাকাতেও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি টিবিএন রাধাকৃষ্ণন ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এ নিয়েও রাজ্যের বক্তব্য জানতে চেয়েছে। পৃথক একটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ৯০৭ জন শ্রমিককে কোনও রকম পরীক্ষা ছাড়াই পূর্ব বর্ধমানের ১২টি কোয়ারান্টিন সেন্টার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের থেকে এলাকায় সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এ নিয়েও রাজ্যকে বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

প্রথম মামলায় আবেদনকারী আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাসের অভিযোগ, মার্চে ৬১৮ জন যখন আক্রান্ত, তখন লকডাউন শুরু হয়। এখন তা বাড়তে বাড়তে দু’লাখ ছাড়িয়েছে। এখন কোন যুক্তিতে লকডাউন তুলে নেওয়া হচ্ছে? তাঁর বক্তব্য, কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার লকডাউন তুলে নেওয়ার হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে করোনা-আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। এখনও কেন্দ্র লোকাল ট্রেন বা মেট্রো চালু করেনি। কিছু রাস্তায় রাজ্য বাস নামিয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকলেও মানুষ ভিড় বাসেই গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। রাজ্যের আইনজীবী দাবি করেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের গাইডলাইন মেনেই যা করার করা হচ্ছে। এর পরেই আদালত দুই সরকারকে হলফনামা-সহ অভিযোগের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ১১ জুন সম্ভবত হবে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
অন্য মামলাটি পূর্ব বর্ধমানের ভাতার ব্লকের ঘটনা নিয়ে। সেখানকার মোট ১২টি কোয়ারান্টিন সেন্টার থেকে মোট ৯০৭ জন ভিন রাজ্য থেকে বাংলায় ফেরা শ্রমিককে বিনা পরীক্ষায় ব্লক প্রশাসন ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক, ভাতারের বিডিও, থানার ওসি, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে বিবাদী করে মামলা করেছেন বিপ্লব চৌধুরী। তাঁর আইনজীবী দেবপ্রিয় সামন্তের দাবি, যে সব শ্রমিককে বিনা পরীক্ষায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের টেস্ট করে রিপোর্ট জমা করতে হবে, পুনরায় তাঁদের কোয়ারান্টিন সেন্টারে রাখতে হবে এবং তাঁরা যে সব এলাকায় ঘুরেছেন–সেই সব এলাকা স্যানিটাইজ করতে হবে। আদালত ১১ জুনের মধ্যে রাজ্যের বক্তব্য জানতে চেয়েছে।