একদিনে ১২ রোগীর বুকে ১৭টি স্টেন্ট বসিয়ে নজির গড়ল কল্যাণী হাসপাতাল
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ জন রোগীর মধ্যে একজনের মঙ্গলবার মৃত্যু হয়। তবে বাকি সকলেই ভালো আছেন।

একদিনে পরপর ১২ জন হৃদরোগীর বুকে ১৭টি স্টেন্ট বসালেন কল্যাণী গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ চন্দন মিশ্র। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার প্রায় নয় ঘণ্টা ধরে ক্যাথ ল্যাবে এই স্টেন্ট বসানোর কাজ চলে। চিকিৎসক মিশ্র ও তাঁর দশজন সহযোগীর চেষ্টায় এই কাজ হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ জন রোগীর মধ্যে একজনের মঙ্গলবার মৃত্যু হয়। তবে বাকি সকলেই ভালো আছেন। ওই হাসপাতলে ১৬ জন রোগীর অ্যাঞ্জিওগ্রাম করা হয়েছিল। তার মধ্যে ১২ জনকে স্টেন্ট বসানোর জন্য চিহ্নিত করা হয়। বিভিন্ন কারণে রক্তনালিতে চর্বি জমলে রক্ত যাতায়াতের পথ বাধাপ্রাপ্ত হয়। তখন কোনও কাটাছেঁড়া না করে রক্তনালির এই বাধা দূর করার জন্য সেখানে বিশেষ পদ্ধতিতে স্টেন্ট বা রিং বসিয়ে দেওয়া হয়। একে বলে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি। সরকারি হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে এই পরিষেবা পেয়ে খুশি রোগীর আত্মীয়রা।
চিকিৎসক মিশ্রের মতে, কম বয়সে, বিশেষ করে ৩৫-৫০ বছরের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। তার প্রধান কারণ মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, অনিয়মিত খাওয়াদাওয়া, রাত জাগা ও অতিরিক্ত নেশা করা। তবে কোনও নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এদিন ক্যাথ ল্যাবে যাইনি। পরপর অপারেশন করতে করতে নার্স, টেকনিশিয়ানদের সহযোগিতায় ১২ জন রোগীর বুকে ১৭টি স্টেন্ট বসাতে পেরেছি। হাসপাতাল সুপার ডাঃ গোপাল দাস বলেন, একদিনে এতগুলি না হলেও আমাদের হাসপাতালে এখন নিয়মিত এই অপারেশন হচ্ছে। বারাকপুর থেকে আসা এক রোগীর আত্মীয় সম্পূর্ণা সাহা বলেন, আমার বাবার ৬২ বছর বয়স। এখানে স্টেন্ট বসেছে। সরকারি হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে এই ধরনের উন্নত পরিষেবা পেয়ে আমরা ভীষণ খুশি।
দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে হার্টের চিকিৎসা করাতে মানুষ এখানে আসেন। শুধুমাত্র হার্টের চিকিৎসার জন্য সরকারি উদ্যোগে এই হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছিল। তবে সাফল্যের পরও এই হাসপাতালে কিছু অভাব রয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সেগুলি মিটে গেলে পরিষেবা আরও উন্নত করা যাবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালে ফান্ডের যেমন সমস্যা রয়েছে, তেমনই চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। এছাড়াও মাত্র দু’জন টেকনিশিয়ানকে দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।