চাকরির প্রস্তাবে ব্যাপক সাড়া, দেউচা-পাচামিতে জমি দেবে আরও ১১২টি পরিবার
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদন মেনে দেউচা পাচামি কয়লা খনি এলাকাতে আরও ১১২টি পরিবার চাকরির প্রস্তাবে রাজি হল। ওই পরিবারের একজন করে সদস্যকে পুলিসে কনস্টেবলের চাকরি দেওয়া হবে। ১১২ জনের রাজি হওয়ার খবর বীরভূমের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নবান্নের শীর্ষকর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হল। এর আগে ১৩৯ জন রাজি হয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যাঁদের জমি অধিগ্রহণ করা হবে, সেইসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের একজন সদস্যকে পুলিসে চাকরি দেওয়া হবে। সেইমতো গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৫১০০টি পুলিসের সিনিয়র ও জুনিয়র কনস্টেবল শূন্য পদ তৈরি করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন শুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি এগিয়ে আসায় খুশি নবান্ন।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, দেউচা পাচামির প্রস্তাবিত কয়লাখনির কাজ প্রথমে শুরু হবে দিওয়ানগঞ্জ-হরিণসিঙ্ঘা এলাকা দিয়ে। সেখানে ১০০ একর খাস জমি প্রথমে খনন করা হবে। ওই জমি নিয়ে কারও কোনও আপত্তির প্রশ্ন নেই। কারণ, সেই জমি সরকারের। এছাড়াও দরকার ৪৫০ একর জমি। তা অধিগ্রহণের জন্য আলোচনা শুরু করেছেন জেলাশাসক বিধান রায়। বিদ্যুৎ দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রকাশিত দশ দফা ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব নিয়ে জমিদাতাদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেছেন তিনি। সেই আলোচনার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দিয়ে অর্ধেক জমি অধিগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ ২২৫ একর জমি দিতে রাজি হয়েছেন জমিদাতারা। সেই বার্তাও নবান্নে পাঠিয়েছেন জেলাশাসক। বাকি জমিও জোরাজুরি বা উচ্ছেদ করে নয়, আলোচনার মাধ্যমে চলে আসবে বলে মনে করছেন নবান্নের শীর্ষকর্তারা।
জমিদাতাদের জন্য ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে,জমির বর্তমান মূল্যের চার থেকে পাঁচগুণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কাঠা প্রতি ৫০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘায় পাবেন ১০ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত জমিদাতাদের পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হবে। সেই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। বাড়িঘর সরানোর খরচ দেওয়া হবে পরিবার পিছু এক লক্ষ টাকা। গোয়ালঘরের জন্য দেওয়া হবে ২৫ হাজার টাকা। যাঁদের জমি নেওয়া হবে, বাড়িঘর ভাঙা পড়বে, তাঁদের উদ্বাস্তু কলোনিতে ৬০০ বর্গফুটের বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হবে। সেখানে দু’টি রুম, একটি রান্নাঘর ও একটি বাথরুম থাকবে। যাঁরা বাড়ি নেবেন না, তাঁদের পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। টিউবওয়েল খননের জন্য পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হবে। জীবিকা নির্বাহের জন্য ভাতা মাসে দশ হাজার টাকা। যাঁরা কৃষিকাজ করেন, তাঁরা এককালীন ক্ষতিপূরণ পাবে ৫০ হাজার টাকা। ১০০ দিনের কাজে ৫০০ দিনের কাজের গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাব নিয়ে জমিদাতাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বোঝানো হয়েছে।