কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

লতার কন্ঠে নতুন মাত্রা পেয়েছিল রবি ঠাকুরের এই গানগুলি

February 6, 2022 | 2 min read

ছ’টি গান মাত্র! লতা মঙ্গেশকরের রবীন্দ্র-যোগ বলতে এটুকুই। তবু সেখানেও লতার সাঙ্গিতীক নিপুণতা সৌকর্য লাবণ্য চিরকালের জন্য কী অমোঘ ছায়া যে ফেলে গিয়েছে! অন্তত ওই গানগুলি অন্য কারও কণ্ঠে শুনলে আজও আমাদের মনে না পড়ে পারে না যে, গানগুলি একদা লতাও গেয়েছিলেন! গানগুলি রবীন্দ্রসঙ্গীত গবেষকদের কাছেও এক অনন্য খনি হয়ে থেকে গিয়েছে।

রবীন্দ্রসঙ্গীতে লতা মঙ্গেশকরের শুরুটা হয়েছিল হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরেই। সেটাও ১৯৫০-এর দশক। ‘মধু গন্ধে ভরা’ গান রেকর্ড দিয়ে যাত্রা শুরু লতার। এ ছাড়াও তিনি গেয়েছেন ‘শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা’, ‘হৃদয় আমার নাচে রে আজিকে’, ‘তুমি রবে নীরবে’ (কুহেলী), ‘তোমার হল শুরু’, ‘সখী, ভাবনা কাহারে বলে’ (শ্রীমান পৃথ্বীরাজ)। 

এর অধিকাংশ গানই ১৯৫০-এর প্রথমার্ধেই রেকর্ড করা। মাত্র ২টি ১৯৭০-এর দশকে। তরুণ মজুমদারের ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ ছবির জন্য কবিতা কৃষ্ণমূর্তির সঙ্গে দ্বৈতকণ্ঠে ‘সখী, ভাবনা কাহারে বলে’ এবং একই পরিচালকের ‘কুহেলী’ ছবির জন্য ‘তুমি রবে নীরবে’। সন্দেহ নেই বাংলা ছবিতে এবং বাংলা ডিস্কে ছড়িয়ে থাকা লতার গাওয়া রবীন্দ্রনাথের এই ষড়-গান এক অনন্য উচ্চতার অবতারণা করেছে। ‘কুহেলী’ ছবির ‘তুমি রবে নীরবে’ এবং ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ ছবির ‘সখী, ভাবনা কাহারে বলে’ গানদুটি আজও শ্রোতাকে আবেগমথিত করে তোলে। হয়তো ফিল্মে ব্যবহৃত হয়েছে বলেই গানদুটি একটু বেশি চর্চিত।

সে সময়ে তো বাংলায় কম বড় বড় মহিলা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ছিলেন না, তা-ও কেন এ গানক’টি লতাকে দিয়েই গাওয়ানো হল? তিনি লতা মঙ্গেশকর বলেই গানগুলি অন্য কারও কাছে না গিয়ে তাঁর কাছে গিয়েছিল– এ জাতীয় মৃদু নীরব সমালোচনা তাই কখনও কখনও কোনও কোনও মহলে ঘুরত-ফিরত! কিন্তু প্রকৃত সঙ্গীতরসিকেরা কোনও দিনই পাত্তা দিতে চাননি এসব। তাঁর সময়ের অতি বিখ্যাত মহিলাশিল্পী ছিলেন বলেই লতা এই রবীন্দ্রগানগুলি রেকর্ড করার সুযোগ পেয়েছিলেন, এ কথা সত্যিই ধোপে টেকে না, যখন গানগুলির আত্মা লতার কণ্ঠে ক্রমশ নিজেকে মেলে ধরে, আর তার অভূতপূর্ব বর্ণিলতা নীরবে নিভৃতে স্পর্শ করে শ্রোতার মনকে। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Lata Mangeshkar, #Rabindranath Tagore, #rabindra sangeet

আরো দেখুন