হচ্ছে টা কী? বিভাগে ফিরে যান

বিতর্কে জেএনইউ-এর নতুন উপাচার্য; বিজেপিকে সমর্থনই কি নিয়োগের মাপকাঠি?

February 9, 2022 | 2 min read

মধ্যমেধার বিদ্যে প্রদর্শনের নজির গড়লেন জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য। পদ পেতে বিজেপিকে সমর্থন করা কি বাধ্যতামূলক? উঠছে প্রশ্ন! ভারত তথা এশিয়ার অন্যতম বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় হল জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়। কেবল জনপ্রিয়তায় নয়, শিক্ষার মানেও জে এন ইউয়ের অবস্থান প্রথম সারিতেই। সম্প্রতি জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বদল হয়েছেন। নতুন উপাচার্য হয়েছেন শান্তিশ্রী ধূলিপুতি পান্ডিত। তিনি ইতিমধ্যে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা উপাচার্য হিসেবে নজির গড়েছেন।

গতকাল দায়িত্ব গ্রহণের পরই দেশের প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রের উচ্চশিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এক প্রেস বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। ওই বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ও আগামীদিনের পরিকল্পনার কথা ব্যক্তও করেছেন অধ্যাপিকা, কিন্তু সেই বিবৃতি নিয়েই এবার ট্রোলের ঝড় উঠল সোশ্যাল মিডিয়ায়। অজস্র ভুলে ভরা ঐ বিবৃতি প্রকাশ করে দেশবাসীর হাসির খোরাক হলেন জেএনইউয়ের প্রথম মহিলা উপাচার্য। সামাজিক মাধ্যমে নানা মহল থেকে তাঁর বিরুদ্ধে কটাক্ষও ভেসে এসেছে। বানান থেকে শুরু করে ব্যাকরণ, প্রতি ক্ষেত্রেই অগুনিত ভুল রয়েছে ঐ প্রেস বিবৃতিতে। উপাচার্যের বিবৃতিতে will -এর বদলে would ব্যবহার হয়েছে যা ব্যাকরণগতভাবে ভুল। সাধারণ শব্দের বহুবচন করতে গিয়ে বাক্য গঠনও ভুল হয়েছে। এক্সিলেন্সস (Excellences) ইংরেজি ভাষায় ব্যবহার হয়না। এমন অজস্র শব্দের ভ্রান্ত ব্যবহার চোখে পড়ে।লেখায় নূন্যতম ভাষা জ্ঞানের প্রতিফলন হয়নি।

জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এই ভুল সত্যিই হতাশাব্যাঞ্জক এবং যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর কান্ডারির মান যদি এই হয়, তবে কী শিখবেন পড়ুয়ারা! – এই বলেই নেটনাগরিকেরা তাকে কটাক্ষ করছেন। উপাচার্যের এই মধ্যমেধার নমুনা প্রদর্শনের বিরুদ্ধে বিশিষ্ট নাগরিকেরাও সরব হয়েছেন। এমন উপাচার্য নিয়োগের বিরুদ্ধে তারা বিজেপি সরকারকে সরকারি আক্রমণ করছেনে।

প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিকবার নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন শান্তিশ্রী ধূলিপুতি পান্ডিত। নানান ইস্যুতে হিন্দুত্ববাদীদের সর্মথনে সরব হতে দেখা গিয়েছে তাকে। একাধিক ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে বিজেপিকে সমর্থন করতেও দেখা গিয়েছে, এককথায় বলতে হয় তিনি বিজেপিকে ভোট দেওয়ার অনুরোধও করেছেন। গণহত্যা সংক্রান্ত ইস্যুতে তিনি বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘকে সমর্থন করেছেন। বিজেপির হয়ে বিরোধী দলের নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, কাউকেই কটাক্ষ করতেও পিছপা হননি। প্রকাশ্যে বিজেপি বিরোধী মনোভাবাপন্নদের নকশাল, জেহাদি বলে দাগিয়ে দিয়েছেন অধ্যাপিকা। মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিংসাও ছড়িয়েছেন। এর আগে মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যুকে অখণ্ড ভারত গঠনের পদক্ষেপ বলে টুইট করেও অধ্যাপিকা পন্ডিত বির্তকে জড়িয়েছিলেন।

শান্তিশ্রী ধূলিপুতি পান্ডিত দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই দেশের সাংবাদিকেরা সরব হয়েছেন, নানা মাধ্যমে তারা অধ্যাপিকার পুরোনো টুইটগুলোর স্ক্রিন শট পোস্ট করছেন। কেবল এই নয় শান্তিশ্রী ধূলিপুতি পান্ডিতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। পুনে ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট সেন্টারের ডিরেক্টার পদে থাকাকালীন শান্তিশ্রী ধূলিপুতি পান্ডিতের বিরুদ্ধে পড়ুয়া ভর্তির আসন নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি করার অভযোগ ওঠে। এমন একজনের জেএনইউয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের উপাচার্য পদে আসীন হওয়ায় অনেকেই অবাক হয়েছেন। শান্তিশ্রী ধূলিপুতি পান্ডিতের নিয়োগকে কটাক্ষ করে কেউ কেউ বলছেন, চাটুকারীতাই বিজেপি সরকারের আমলে নিয়োগের প্রধান যোগ্যতা।

জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে সারা দেশের পড়ুয়ারা আসেন, সেখানে শুধু বিজেপির মতাদর্শে বিশ্বাসী বলে বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কাউকে নিযুক্ত করা হল, যা দেশের জন্য শঙ্কার। জে এন ইউয়ের উৎকর্ষতা এতে হ্রাস পাবে। এই মধ্যমেধার বাড়বাড়ন্ত দেশের যুব সমাজের ভবিষ্যতকে নষ্ট করে দেবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Santishree Dhulipudi Pandit, #JNU, #BHU, #VC

আরো দেখুন