কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

যাদবপুর: শিক্ষাঙ্গন খোলা নিয়ে আন্দোলন করা পড়ুয়াদেরই দেখা মিলল না ক্লাসে

February 9, 2022 | 2 min read

ক্যাম্পাস খুলে অফলাইন ক্লাস চালুর দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। করোনা সংক্রমণ যখন বিপদসীমায়, তখনও শিক্ষাঙ্গণ খুলে দেওয়ার পক্ষেই ছিলেন তাঁরা। ৮বি বাসস্ট্যান্ডে আন্দোলনের সমর্থনে ক্লাসও নিয়েছিলেন বেশ কিছু শিক্ষক। তবে, বাস্তবে যখন ক্যাম্পাস খুলেছে, তখন উল্টো চিত্র। বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্লাসে পড়ুয়াদের দেখা মিলছে না। ছাত্র সংগঠনগুলি আবার শিক্ষকদের অনীহা এবং পরিকাঠামোর অব্যবস্থার দিকেই আঙুল তুলছে। তবে, এদিনই অনলাইন ক্লাস আর করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বেলা ১২টা নাগাদ কথা হচ্ছিল মূল ক্যাম্পাসের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জনৈক অধ্যাপকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ক্লাসে গিয়ে বসেছিলাম। তবে, কোনও পড়ুয়ার দেখা নেই। এভাবে সময় নষ্ট করার মানে হয় না। আমিও নীতিগতভাবে অনলাইন ক্লাস নিতে পারব না বলে জানিয়ে দিয়েছি। সল্টলেক ক্যাম্পাসের এক অধ্যাপক বলেন, পড়ুয়াদের উপস্থিতি একেবারে তলানিতে রয়েছে বললেই চলে। আমার ধারণা, তারা চাইছে অনলাইনে পরীক্ষা দিতে। কারণ, সেভাবে পরীক্ষা হলে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। তবে, এখনও তিনমাস ক্লাস হওয়ার কথা। সেটা অন-ক্যাম্পাস হলে পরীক্ষাও যে অফলাইনে হবে, সেটা কিন্তু পড়ুয়ারা বুঝেছে। তাই এটা পড়ুয়াদের পাল্টা কৌশল হতে পারে। সোমবার থেকে হস্টেল খুলে গিয়েছে। তাই থাকার সমস্যাও আর নেই।

এই অভিযোগ একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র সংসদ ফেটসুর সাধারণ সম্পাদক অরিত্র মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, ছ’-সাতটা বিভাগে রুটিন মেনে ক্লাসই হয়নি। পড়ুয়ারা গিয়ে দেখেছে, ক্লাসরুমে তালা ঝুলছে। কোথাও আবার ব্ল্যাকবোর্ড বা বেঞ্চ নেই। কোনও শিক্ষককে মেসেজ করলে তিনি অনলাইন ক্লাসের লিঙ্ক পাঠিয়ে দিচ্ছেন। অফলাইন ক্লাসের দাবিতে এদিনও বিক্ষোভ দেখিয়েছে ফেটসু। তার জেরেই ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা হয়েছে ১০ ফেব্রুয়ারি। অনলাইন ক্লাস বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক সমিতি জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, ছাত্র প্রতিনিধিরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে কোন কোন ক্লাস হয়নি, সেই তালিকা দিতে পারেনি। ছাত্রদের একটা বড় অংশই অনলাইন ক্লাসের পক্ষে আর্জি জানিয়েছিল। সেগুলিই অনলাইনে হচ্ছে তাঁদের কথা ভেবে। কারণ, অনেক পড়ুয়াই দূরে থাকেন। সেখান থেকে আসতে সময় লাগছে। তবে, দু’একজন শিক্ষক যে অনলাইন ক্লাস চালানোর জন্য অনুমতি চেয়েছিলেন, সেটাও ঠিক। শিক্ষকদের একটা অংশের মতে, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের কাছে টানতেই ফেটসুর এই অতিসক্রিয়তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, তৃতীয় এবং চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়াদের কিন্তু ক্লাসে আনা যাচ্ছে না।

ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তি ফ্যাকাল্টির ডিন অটল চৌধুরী বলেন, আমরাই প্রথম ক্লাস চালুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিই। বিভাগীয় প্রধানরাও সহযোগিতা করেছিলেন। তবে, এতদিন পরে অফলাইন ক্লাসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে অনেকের। পড়ুয়াদের একটা বড় অংশের পাশাপাশি কিছু শিক্ষকের জন্যই তা প্রযোজ্য। তবে, কর্তৃপক্ষের অফলাইন ক্লাস নেওয়ার নির্দেশটি এবার কাজে দেবে। বুধবার সমস্ত বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে এই নির্দেশ কার্যকর করার বিষয়টি নিশ্চিত করব।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Protest, #jadavpur university, #students

আরো দেখুন