দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

মাংস থেকে সবজি, বাজার আগুন দক্ষিণবঙ্গে

June 9, 2020 | 2 min read

লকডাউনে সব্জির জোগানে অভাব ছিলই। অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে আম্পানের পরে। যেটুকু সব্জি পাওয়া যাচ্ছে, তার দামও বেশি। মাছের সরবরাহ লকডাউনের সময় থেকে কমতির দিকে। দামও বেড়েছে। গেরস্তের ভরসা ছিল মুরগির মাংস। লকডাউনের সময় এই মুরগিই অনেকটা স্বস্তি দিয়েছিল মধ্যবিত্তকে। রাতারাতি সেই মুরগির দাম ৩০০ টাকা ছুঁয়েছে। ফলে আম বাঙালির হেঁসেলে এখন হাঁসফাঁস অবস্থা। শুধু মুরগিই নয়, দাম বেড়ে গিয়েছে আলুরও। অর্থাৎ, বাজারে সব্জির অভাবে যে আলু দিয়ে কোনওক্রমে এটা-ওটার ব্যবস্থা করা যাচ্ছিল, তাতেও ছেঁকা লাগছে।

ব্রয়লারের মাংসের দাম চড়তে চড়তে পৌঁছে গিয়েছে কিলো প্রতি ২৮০-৩০০ টাকায়। দেশি মুরগি ৩৮০ টাকা। খাসির মাংসের দাম ৭৫০-৮০০ টাকা। তবে এই দুর্দিনে মানুষকে কিছুটা হলেও ভরসা জোগাচ্ছে রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থা হরিণঘাটা চিকেন। হরিণঘাটার স্টলে এখনও ফ্রোজেন চিকেন পাওয়া ১৪০ টাকা কিলো দরে। অগত্য সেখানেই লাইন দিচ্ছেন অনেকে।

রাজ্য প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কলকাতায় এখন হরিণঘাটা মিটের সাতটি স্টল চালু রয়েছে। এগুলি যথাক্রমে সল্টলেকের করুণাময়ী, বেলগাছিয়া, সল্টলেক ১৬ নম্বর ট্যাঙ্ক, গড়িয়াহাট, পাইকপাড়া, যোধপুর পার্ক এবং ধর্মতলায় অবস্থিত। এ ছাড়াও হাওড়ার মন্দিরতলায় ও নদিয়া জেলার হরিণঘাটায় সেলস কাউন্টার রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থাকলেও আপাতত সেটি বন্ধ।

বাজার আগুন দক্ষিণবঙ্গে

পশ্চিমবঙ্গ পোলট্রি ফেডারেশনের অন্যতম কর্মকর্তা সর্বজিৎ বিশ্বাস জানান, লকডাউনের শুরুতে গুজবের কারণে পোলট্রি মুরগির দাম তলানিতে এসে ঠেকেছিল। একটি দু’কেজি ওজনের মুরগি উৎপাদন করতে গড়ে ১৮০ টাকা খরচ হয়। সেই মুরগি চাষিদের বিক্রি করতে হয়েছে ৭০ টাকায়। তার জেরে চাষিদের বিপুল আর্থিক লোকসান হয়েছে। ক্ষতির আশঙ্কায় ছোট ও মাঝারি চাষিরা মুরগি চাষ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তার উপর আম্পানের জেরে দক্ষিণ ও উত্তর চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ-সহ মোট পাঁচটি জেলায় পোলট্রি খামার পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই মুরগির জোগান কমেছে। লকডাউন একটু শিথিল হতেই চিকেনের চাহিদাও বেড়েছে। সে জন্য মুরগির মাংসের দাম এতটা চড়া। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, সপ্তাহখানেকের মধ্যে মুরগির মাংসের দাম দুশোর নীচে নেমে আসবে।

শুধু মুরগির মাংসই নয়, বাজারে আলুর দামও উর্ধ্বমুখী। পেঁয়াজের দামকে টপকে সোমবার কলকাতার বিভিন্ন খুচরো বাজারে জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে কিলোপ্রতি ২২-২৪ টাকা দরে। ৩০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে চন্দ্রমুখী আলু। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে মুখ্যমন্ত্রীর গঠিত স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের সদস্য তথা ফেডারেশন অফ ট্রেডার্স অর্গানাইজেশনের সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, ‘আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে আমরা চিন্তিত। বাজারে আলুর অভাব নেই। আমরা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের সঙ্গে কথা বলব।’

রাজ্য কৃষি বিপণন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন পাইকারি বাজারে জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে কিলোপ্রতি ১৪-১৫ টাকা দরে। সেই হিসাবে খুচরো বাজারে আলুর দাম হওয়া উচিত সর্বোচ্চ ১৮-১৯ টাকা। অথচ খুচরো বাজারে আলুর দাম এখন ২২-২৪ টাকা কিলো।

রাজ্যের হিমঘর মালিকদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি পতিতপাবন দের দাবি, ‘এ বার ১০ শতাংশ আলু কম উৎপাদন হয়েছে। চাষিরা শুরু থেকেই ১২-১৩ টাকা কিলো দরে আলু বিক্রি করেছেন। ফলে এ বার এর নীচে আর আলুর দাম নামবে না। বরং দাম আরও বাড়বে।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Lockdown, #market Price increased, #West Bengal

আরো দেখুন