কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

কলকাতা জুড়ে বৃক্ষ রক্ষণাবেক্ষণের অভিনব সিদ্ধান্ত পুরসভার

June 10, 2020 | 2 min read

শহরজুড়ে যে সব গাছ লাগানো হচ্ছে, তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও এ বার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। গাছগুলির আয়ু বাড়ানোর লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত। পুরসভার উদ্যান বিভাগ এবং বন দপ্তরই মূলত শহরের গাছের যত্ন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

পুরসভা সূত্রে খবর, আম্পানের পরে যে ৫০ হাজার গাছ লাগানো হচ্ছে, সেগুলি পরিচর্যার দায়িত্ব বিভিন্ন সরকারি সংস্থার পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও ভাগ করে দেওয়া হবে। দায়িত্ব বণ্টন হবে মূলত রাস্তা ধরে ধরে। পুর অফিসাররা ইতিমধ্যেই এই কাজ শুরু করেছেন বলে খবর।

বিশ্বভারতীর উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বুম্বা দাম বলছেন, ‘গাছ তো অনেকেই লাগান। কিন্তু কিছুদিন পর দেখা যায়, অনেকগুলিই মারা গিয়েছে। সেটা যাতে না হয়, তার জন্য সঠিক পরিচর্যা দরকার।’ তাঁর মতে, গাছের পরিচর্যার দায়িত্ব বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে বণ্টনের যে সিদ্ধান্ত পুরসভা নিয়েছে, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এতে সুষ্ঠু ভাবে কাজ সম্পন্ন হবে বলে মনে করেন ওই অধ্যাপক।

পরিসংখ্যান বলছে, আম্পানের জেরে কলকাতায় গাছ পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় কী করণীয়, তা নিয়ে পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই গাছ লাগানো হলেও সেগুলির মৃত্যুর ব্যাপারে বৃষ্টি আকর্ষণ করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। গাছের যত্নের জন্য সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সামিল করার পক্ষে সওয়াল করেন তাঁরা।

সেই বৈঠকের পর গত সপ্তাহে বন দপ্তর, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সঙ্গেও আলোচনা করেন পুর প্রসাশক। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র সেখানে গাছের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ভাগ করার পক্ষে সওয়াল করেন। সূত্রের খবর, তিনি প্রস্তাব দেন — কলকাতার বড় দু’টি রাস্তার গাছ দেখভালের দায়িত্ব তাঁদের দেওয়া হোক। আবার, পুর প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমার শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকেও কিছু গাছ দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী। কোনও কোনও অফিসার আবার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে কয়েকটি পার্ক এবং বড় রাস্তার গাছ দেখভালের ভার দেওয়ার কথা বলেন। বিদেশে গাছ দত্তক নেওয়ার ব্যবস্থা আছে। সেই সব গাছের গায়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থার নাম লেখা থাকে। বিনিময়ে গাছের যত্ন নেয় তারা।

রবীন্দ্র সরোবরে কয়েক বছর আগে গাছের দত্তক চালু হয়। কিন্তু কাজ বিশেষ এগোয়নি। নতুন উদ্যোগে এই ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব উঠে আসে। যাদবপুর, রবীন্দ্রভারতীর মতো ক্যাম্পাসে উম্পুনে ক্ষতিগ্রস্ত গাছ পুনরুজ্জীবনে ইতিমধ্যেই হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রাক্তনীরা। গাছ লালনপালনেও বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সব প্রস্তাব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন ফিরহাদ। শহরজুড়ে নতুন করে যে ৫০ হাজার গাছ লাগানো হবে, তার দেখভালের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়ার জন্য অফিসারদের নির্দেশ দেন তিনি। সোমবার তিনি বলেন, ‘কলকাতাকে ফের সবুজ করাই আমাদের লক্ষ্য। সে জন্য সকলে একজোট হয়ে গাছ বাঁচানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#KMC, #government organizations, #maintenance of trees

আরো দেখুন