বিধাননগর, চন্দননগরে শূন্য রইল বিজেপির ঝুলি
তর্জন গর্জনই সার। চার পুরভোটের ফলাফলের (WB Civic Polls result) মধ্যে চন্দননগর ও (Chandanagar) বিধাননগরে শূন্য পেল বিজেপি। ফের একবার প্রমাণ হল মোদি-শাহ ছাড়া রাজ্য বিজেপি (State BJP) নখদন্তহীন। চড়া সুরে জেতার দাবি করে আসা বিজেপি বিধাননগরের (Bidhannagar) মতো গেরুয়া প্রভাবিত এলাকাতেও একটি ওয়ার্ডও পায়নি। বিধাননগরের একটি বিরাট অংশে সংখ্যালঘু মুসলমানরা বাস করেন। আবার একটি অংশে প্রভাব রয়েছে মতুয়াদের। এছাড়া অসংখ্য অবাঙালি মানুষের বসবাস বিধাননগর পুর এলাকায়। তাও বিজেপি এই পুরসভায় দাঁত ফোটাতে পারেনি।
অন্যদিকে প্রাচীন পুরশহর চন্দননগরে অধিকাংশই হিন্দু বাঙালি ভোটার। অবাঙালি ভোটার কিছু থাকলেও মুসলিম ভোটারের (Voter) সংখ্যা নগণ্য। এর আগে বিজেপি চন্দননগরে ভালো ফল করলেও এই পুরভোটে খালি হাতে ফিরেছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, দুটো পুরসভায় বিজেপি একটি ওয়ার্ডও পেল না কেন? প্রথমত, বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি বা হিন্দুত্বের সুড়সুড়ি আর ধোপে টিকছে না। শিলিগুড়ি (Siliguri), আসানসোল (Asansol), চন্দননগর কিংবা বিধাননগর যেখানেই হোক শহুরে মানুষের মনে ধর্মের খোঁচা কাজে আসেনি। দ্বিতীয়ত, বিধানসভা ভোটে পর্যুদস্ত হওয়ার পর থেকে দলের অভ্যন্তরে ব্যাপক কোন্দল ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ ভোটারের মনে তা বিরূপ প্রভাব ফেলেছে বলে রাজনৈতিক তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মত। প্রার্থীপদ নিয়ে তো বটেই জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বে বদল নিয়েও কাদা ছোঁড়াছুড়ি শুরু হয় দলের অভ্যন্তরে। তৃতীয়ত, প্রচারের ক্ষেত্রেও বিজেপি শুরু থেকেই পিছিয়ে ছিল। শাসকদলের বিরুদ্ধে বস্তাপচা অভিযোগের তির, আদালতে মামলা নির্ভর প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন নেতারা। ফলে মানুষের কাছে গিয়ে প্রচার কিংবা পুরসভা পরিচালনায় তৃণমূলের ব্যর্থতা তুলে ধরার অবকাশ পাননি তাঁরা।
সে কারণে জোর গলায় পুরসভা দখলের দাবি করা সত্ত্বেও দুটো পুরসভায় খাতা খুলতেই পারল না গেরুয়া শিবির। বিজেপির এই ব্যর্থতার মূল কারণই হলেন তৃণমূলের অবিসংবাদী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁর দিকে তাকিয়েই রাজ্যের আপামর ভোটার এখনও তৃণমূলেই আস্থা রেখে চলেছেন। এখন দেখার হারের ময়নাতদন্তে বিজেপি নেতৃত্ব কী জবাব দেয়!