দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে মিলছে শিশুদের পুষ্টির খোঁজখবরও
সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মানুষের ঘর পর্যন্ত পৌঁছে দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেছিলেন ‘দুয়ারে সরকার’। তবে এবারের দুয়ারে সরকার একেবারে অন্যরকম। শুধু আবেদনপত্র জমা নেওয়ার কাজই নয়, দেখে নেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাচ্চাদের পুষ্টির ঘাটতি আছে কি না।
এবারের দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে রাখা হয়েছে স্বাস্থ্য শিবিরের ব্যবস্থা। পাশাপাশি মাপা হচ্ছে শিশুদের ‘বডি মাস ইন্ডেক্স’। এই পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করা হয় শরীরের উচ্চতা ও ওজনের আনুপাতিক হার, যা দিয়ে বোঝা যায় একটি শিশু ঠিকমতো পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছে কি না। এক আধিকারিক জানান, যদি কোনও এলাকায় একাধিক শিশুর অপুষ্টিজনিত সমস্যা ধরা পড়ে তবে সরকার দ্রুত প্রয়োজনীয় পরবর্তী পদক্ষেপ করবে। যদিও এমন রিপোর্ট এখনও মেলেনি।
প্রথম দিনেই ১,৩০০-র বেশি স্বাস্থ্যশিবির করা হয়েছে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে। যেখানে চক্ষু পরীক্ষা থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন সহ নানান পরীক্ষা করা হয়েছে। কোভিড টিকাকরণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে ক্যাম্পগুলিতে।
প্রথম দিনেই রাজ্যে মোট ৫,৭০২টি দুয়ারে সরকার ক্যাম্প হয়েছে। যেখানে ১২ লক্ষ ৫৬ হাজার ৪৭১-এর বেশি মানুষ এসেছেন। সবথেকে বেশি মানুষ এসেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যাম্পগুলিতে। ২ লক্ষ ৫১ হাজারের বেশি। তারপরেই হুগলি—প্রায় এক লক্ষ মানুষ এসেছেন। গতবারের মতো এবারও সর্বাধিক আবেদন জমা পড়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের জন্য। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী ও জাতিগত শংসাপত্রের জন্যও আবেদনপত্র জমা পড়েছে অনেক।
এবার বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়টিতে। রাজ্যে বাড়ছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা। প্রায় ছ’মাস হয়ে গেলেও অনেক নতুন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি। যাতে নতুন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা যায় সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে।
নবান্ন সূত্রের খবর, প্রত্যেক জেলাতেই খোলামেলা পরিবেশে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। তাতে আরও ভালো করে মেনে চলা হয়েছে কোভিড বিধি। কোনও ক্যাম্পে ভিড় উপচে পড়ার খবর আসেনি। সমস্ত ক্যাম্পে কোভিড বিধি মানতে হবে। সোমবার মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সমস্ত জেলাশাসকের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে এই নির্দেশ দেন। দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে আবেদনপত্র গ্রহণের কাজ চলবে দু’দফায়। প্রথম দফায় আবেদনপত্র জমা নেওয়া হবে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ১-৭ মার্চ পর্যন্ত চলবে দ্বিতীয় দফায় আবেদন গ্রহণের কাজ।