ইউক্রেনে হামলার আশঙ্কার মাঝেই পরমাণু ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা রাশিয়ার, আতঙ্কে বিশ্ব
ইউক্রেন সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যেই সামরিক মহড়া রাশিয়ার। একযোগে পরীক্ষা চলল হাইপারসনিক, ক্রুজ ও পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের। শনিবার ক্রেমলিন বলল, এটি ‘পরিকল্পিত’ মহড়া। সব ক্ষেপণাস্ত্রই লক্ষ্যে আঘাত হানতে সফল হয়েছে। প্রত্যাশিত ফল মিলেছে। এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে টিইউ-৯৫ বোম্বার, সাবমেরিনও। রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্রেমলিনের সিচুয়েশন রুমে বসে মহড়ার সরাসরি ভিডিও দেখেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাশিয়া সফরে আসা বেলারুস প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো।
ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে রাশিয়া দাবি করলেও তাতে ইতিমধ্যেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। উল্টে তাঁর দাবি, যে কোনও মুহূর্তে ইউক্রেনে হানা দিতে পারে রুশ সেনা। সমুদ্রপৃষ্ঠে রাশিয়ার এদিনের সামরিক মহড়া ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা সেই জল্পনাকে আরও জোরালো করল। রাশিয়া দাবি করলেও সীমান্তে উত্তেজনা কমার যে নাম নেই, মিলছে সেই ইঙ্গিতও। এদিন ইউক্রেন দাবি করল, শুক্রবার দেশের পূর্বাঞ্চলে লুগানস্ক ও ডোনেটস্কে জোড়া মর্টার হামলা চলেছে। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক সেনার। জখম হয়েছেন দু’জন। ইউক্রেন সেনার দাবি, হামলার নেপথ্যে রয়েছে রাশিয়ার মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। এধরনের হামলার উদ্দেশ্য স্পষ্ট। ইউক্রেনের পাল্টা জবাবকে হামলা বলে চালাতে সুবিধা হবে মস্কোর। অন্যদিকে, রুশ সংবাদ মাধ্যমগুলির দাবি, রস্তভ অঞ্চলে সীমান্তের এক কিলোমিটারের মধ্যে এসে পড়েছে ইউক্রেনের ছোড়া শেল। এই মিডিয়া রিপোর্টের ভিত্তিতেই ঘটনাটি নিয়ে শনিবার তদন্ত শুরু করল রাশিয়া। উত্তেজনা প্রশমনে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রবল কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চললেও পরিস্থিতি যে ঘোরলো, তা একপ্রকার নিশ্চিত। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলতি সংঘাতের ধাক্কায় ভারতে সূর্যমুখী তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, ইউক্রেন থেকেই ভারত সবচেয়ে বেশি সূর্যমুখী তেল আমদানি করে। সূর্যমুখী আমদানির ৬৪ শতাংশ হয় ইউক্রেন থেকে।
সঙ্কটের এই মুহূর্তে শনিবার রাশিয়াকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। এদিন মিউনিখে হ্যারিসের হুমকি, ‘পরিষ্কার বলে রাখছি, ইউক্রেনে হামলা চালালে সহযোগী দেশগুলিকে সঙ্গে নিয়ে আমেরিকা বেনজির আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপাবে রাশিয়ার উপর। শুধু তাই নয়, বিশাল ন্যাটো বাহিনী রাশিয়ার দুয়ারে পৌঁছে যাবে। কূটনৈতিকভাবে ইউক্রেনের উপর আমেরিকার যে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে, এদিন তাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমেরিকার পাশে থাকার বার্তা হিসেবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমর জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন কমলা হ্যারিস।