দেশ বিভাগে ফিরে যান

শিল্পে নিম্নমুখী মহিলা কর্মীদের অংশগ্রহণ, নির্মলার কাছে উদ্বেগ প্রকাশ বাণিজ্য মহলের

February 22, 2022 | 2 min read

কোভিড ঠেকাতে লকডাউনের প্রথম ধাক্কাতেই অফিস-কারখানা বা রোজগারের ক্ষেত্রে মহিলা কর্মীদের হার কমে গিয়েছিল। তার পরে কিছুটা বাড়লেও এখনও চাকরির বাজারে মহিলা কর্মীর অনুপাত বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মতো দেশের তুলনাতেও কম। মহিলাদের মধ্যে বেকারত্বের হারও বেড়েছে।

আজ দেশের শিল্পপতিরাই এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সামনে উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারের হস্তক্ষেপ চাইলেন। বাজেটের পরে আজ অর্থমন্ত্রী বাণিজ্যিক নগরী মুম্বইয়ের শিল্পমহলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানেই টাটা কেমিক্যালসের এমডি- সিইও আর মুকুন্দন, টাটা স্টিলের এমডি টি ভি নরেন্দ্রনের মতো কর্পোরেট কর্তারা এই সমস্যার কথা বলেন।

অর্থসচিব টি ভি সোমানাথন শিল্পপতিদের পাল্টা প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছেন, মহিলা কর্মীদের অনুপাত বাড়াতে শিল্পপতিরা কি মহিলাদের জন্য চাকরিতে সংরক্ষণের দাবি তুলছেন? তাঁর যুক্তি, এই বিষয়ে সরকারের কোনও বিধিনিয়ম নেই। তা করতে গেলে উল্টে শিল্পমহলই সমস্যায় পড়তে পারে।

দু’বছর আগে কোভিডের প্রথম ঢেউ ও লকডাউনের পরেই দেশে মোট চাকুরিরত কর্মী-শ্রমিকদের মধ্যে মহিলা কর্মীর অনুপাত সর্বনিম্ন হার ১৫.৫ শতাংশে নেমে গিয়েছিল।

পরে তা ধাপে ধাপে বেড়ে ২০২১-এর মার্চের শেষে ২১.২ শতাংশে পৌঁছেছে। কিন্তু এখনও ২০০৫-এর মহিলা কর্মীর হার যে পরিমাণ ছিল, সেই ২৬ শতাংশের তুলনায় অনেক কম। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কায় কর্মীদের মধ্যে মহিলাদের হার ৩০ শতাংশের বেশি। ২০২১-এর মার্চে শহরে মহিলাদের মধ্যে বেকারত্বের হারও বেড়ে ১১.৮ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২০-র মার্চে কোভিডের আগে তা ছিল ১০.৬ শতাংশ। সিএমআইই (সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি)-র হিসেবে, কোভিডের দু’বছরে কাজের খোঁজে আসা মহিলাদের সংখ্যাও ৩৩ শতাংশ কমেছে।

আজ অর্থমন্ত্রী মুম্বইয়ের শিল্পমহলের সামনে বলেছেন, ‘‘কোভিডের গ্রাস থেকে অর্থনীতিকে পাকাপাকি ভাবে বার করে আনাই কেন্দ্রীয় সরকারের লক্ষ্য। তার জন্যই পরিকাঠামোয় খরচের নীতি নেওয়া হয়েছে।’’ এর পরেই টাটা কেমিক্যালসের মুকুন্দন জানান, গত দু’বছরে মহিলা কর্মীর হার কমেছে। কী ভাবে মহিলাদের উৎসাহিত করা যায়, সে বিষয়েও সরকারের নীতিতে নজর দেওয়া দরকার। অর্থমন্ত্রী জানতে চান, এর কারণ কী হতে পারে। মুকুন্দন বলেন, ‘‘লকডাউন, তার পরে ছাঁটাই এর কারণ হতে পারে।’’

টাটা স্টিলের নরেন্দ্রন বলেন, ‘‘অনেক রাজ্য কারখানায় তিন শিফটে মহিলাদের কাজের অনুমতি দিতে চাইছে না। ছোট শিশুর মায়েদের জন্য কাজের জায়গায় ব্যবস্থা, পরিকাঠামো দরকার। কাজের জায়গায় নিরাপত্তাও গুরুত্বপূর্ণ।’’ আলোচনায় নিয়োগের ক্ষেত্রে মহিলা কর্মী নিয়োগের ন্যূনতম হার বেঁধে দেওয়া যায় কি না বা মহিলা কর্মী নিয়োগে কোনও উৎসাহভাতার বন্দোবস্ত করা যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা হয়।

অর্থসচিব সোমানাথন বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে সরকারের এখনও কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। কর্পোরেট জগত কি বেসরকারি চাকরিতে মহিলাদের সংরক্ষণ চাইছে? যদি শিল্পমহল তা চায়, তা হলে নির্দিষ্ট ভাবে বলতে হবে। না হলে শিল্পমহল যা চাইছে না, সরকারের দিক থেকে সে রকম পদক্ষেপ করা হয়ে যেতে পারে।’’

অর্থমন্ত্রী জানান, তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা হল অনেক মহিলাই কর্পোরেট সংস্থার বোর্ডে আসতে চান না। তিনি নিজে মন্ত্রী হিসেবে অনেককে ফোন করে বলেও সাড়া পাননি। আভানা ক্যাপিটালের প্রধান অঞ্জলি বনসল বলেন, ‘‘মহিলা ডিরেক্টরদের সংখ্যা ৩.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০ শতাংশ হয়েছে।’’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Nirmala Sitharaman, #industrialist, #Mumbai

আরো দেখুন