মাইগ্রেনের ইতি বৃত্তান্ত
মাইগ্রেনের মাথা ব্যাথা খুবই সাধারণ একটি অসুখ হলেও অসাধারণ ভাবে জ্বালিয়ে তোলে। মাসে তিন চার দিন হবেই কখনো বা তারও বেশি। এদিকে সেই ব্যাথায় কাজ করারও জো নেই।
উপসর্গ
- মাথা দপদপ করে। মনে হয়, ভিতর দিক থেকে ব্যথা হচ্ছে।
- মাইগ্রেনের ব্যথা সাধারণত মাথার এক দিকে হয়। মাথার দু’দিকেও এ ব্যথা হতে পারে।
- বমি-বমি ভাব থাকতে পারে।
- ব্যথা শুরু হওয়ার আগে চোখেও অস্বস্তি হয়।
- অনেকের ক্ষেত্রে, চোখের সামনে আলোর ঝিলিক ওঠে।
এই ব্যথার উৎস কী?
- এটি জিনঘটিত রোগ। পরিবারের কারও থাকলে, হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
- মস্তিষ্কের ট্রাইজেমিনাল নার্ভ উত্তেজিত হলে এই ব্যথা হয়।
- সেরেটোনিন নামক কেমিক্যালের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে এই ব্যথা হয়।
কারা এই রোগের শিকার?
- পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের হরমোন জনিত কারণে মাইগ্রেনের সমস্যা বেশি দেখা যায়।
- মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের উপস্থিতিই মাইগ্রেনের কারণ।
- যে মহিলারা ওরাল কনট্রাসেপটিভ পিল খান, তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
- মহিলাদের জরায়ুতে অস্ত্রোপচার হলে, অনেক সময় হরমোন থেরাপির কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। সে কারণেও মাইগ্রেনের সমস্যা নতুন করে দেখা দিতে পারে।
ওষুধ
মাইগ্রেনের ব্যথায় একমাত্র দাওয়াই পেনকিলার। কিন্তু তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। প্রেশার, টেনশনের রোগীদের সংশ্লিষ্ট ওষুধের ডোজ় কমিয়ে দেওয়া হয়। এতে আরাম পাওয়া যায়।
• খাদ্যাভ্যাস বদলে মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অতিরিক্ত কফি মাইগ্রেনের রুগীর জন্য ক্ষতিকর। তবে মাইগ্রেনের অনেক ওষুধে কফির উপাদান থাকে। তাই পরিমিত কফি মাইগ্রেনের ব্যথায় উপশম দেয়। চকলেট, রেড ওয়াইন, ড্রাই ফ্রুটস, চিজ় জাতীয় খাবারও তাঁরা এড়িয়ে চললে ভাল।
• ইউক্যালিপটাস অয়েল, মিন্ট অয়েল দিয়ে মাথায় মাসাজ করলে আরাম পাওয়া যায়।
• অনেক সুগন্ধী রোগীর যন্ত্রণা বাড়িয়ে দেয়। এগুলো সব সময়ে ব্যক্তিভিত্তিক। তাই রোগীকে বুঝতে হবে, কোন খাবারে সমস্যা হচ্ছে, কোন গন্ধে ব্যথা বাড়ছে।
• কাজুবাদাম, ওয়ালনাট ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ হয় বলে খাওয়া যেতে পারে। আদা কুচি চিবোলে উপকার পাওয়া যায়।
•মাইগ্রেনের রোগীরা চোখে আলো সহ্য করতে পারেন না। সানগ্লাস ব্যবহার করা যেতে পারে।
ব্যথার উপশমে
• মাইগ্রেনের ব্যথায় বমি-বমি ভাব থাকে। কিন্তু বেশি বমি হয় না।
• মাইগ্রেনের ব্যথা পিরিয়োডিক। যখন হয় টানা তিন-চার দিন থাকে। তার পরে পুরোপুরি সেরে গিয়ে আবার নতুন করে হয়।। তীব্রতা বাড়লে চিকিৎসকের সাহায্য নিন।
• খাদ্যাভাস বদলে, জীবনধারণের পদ্ধতিতে বদলে ব্যথাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।