রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

লকডাউনের জেরে পিএফের টাকা তোলায় হিড়িক

June 12, 2020 | 2 min read

করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং তার পরবর্তী লকডাউনের কারণে শিল্প সংস্থাগুলির বেহাল অবস্থা। জটিল এই পরিস্থিতি আরও জটিলতর হয়েছে কর্মী সঙ্কোচন এবং বেতন কমিয়ে দেওয়ার ফলে।

কোভিড-১৯-এর ফলে পরিস্থিতি যে কতটা জটিল হয়ে পড়েছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় আঞ্চলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড দপ্তর থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা তুলে নেওয়ার হিড়িক দেখলে। হাতে নগদের জোগান বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার আওতায় আংশিক টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা অবশ্যই রয়েছে। তবে, তার থেকেও বহু গুণ বেশি পিএফ অ্যাকাউন্ট থেকে জমা রাশি তুলে নিতে জমা হওয়া আবেদনের সংখ্যা।

কলকাতায় আঞ্চলিক প্রভিডেন্ট কমিশনার নবেন্দু রাই বলেন, ‘১ মে থেকে ১০ জুনের মধ্যে আমাদের কাছে প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্ট থেকে পুরো টাকা তুলে নেওয়ার জন্য মোট ৬,৬৯০টি আবেদন জমা পড়েছে এবং কর্মীরা মোট ৬৪.৮১ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। এর মধ্যে চাকরি ছাড়ার জন্য ৬,১৫৩টি আবেদন জমা পড়েছে। বাকি আবেদন অবসরকালীন পিএফের টাকা তোলার জন্য।’

একই সময়ে গোটা রাজ্যের চিত্র দেখা গেলে পরিস্থিতি কতটা জটিল তা বোঝা যাবে। ওই একই সময়ে পুরো টাকা তোলার জন্য মোট ১৫,৮৩৪টি আবেদন জমা পড়েছে, যার মধ্যে চাকরি ছাড়ার কারণে পুরো টাকা তুলে নেওয়ার জন্য জমা পড়া আবেদনের সংখ্যা ১৩,৯৬৬টি। এই ধরনের আবেদনের জন্য জমা দেওয়া আবেদন খাতে ৭৭.২২ কোটি টাকা মিটিয়েছে ইপিএফও। পুরো টাকা দিতে খরচ হয়েছে ১৬২.৮৩ কোটি।

পিএফে\

অন্য দিকে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সাধারণের হাতে নগদের জোগান দিতে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার আওতায় প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্ট থেকে গচ্ছিত আমানতের ৭৫ শতাংশ বা তিন মাসের মূল বেতন ও মহার্ঘ ভাতার মধ্যে যেটি কম সেই পরিমাণ অর্থ তোলায় কেন্দ্রের দেওয়া অনুমোদন কার্যকর করতে এবং এই সুবিধা আরও বেশি সংখ্যক গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতার আঞ্চলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড দপ্তর। যে সমস্ত সংস্থায় ১০০ পর্যন্ত কর্মী কাজ করেন, সেই সংস্থাগুলির অধিকাংশই প্রযুক্তিগত এবং বিভিন্ন কারণে এখনও কর্মীদের প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার সুবিধা দিতে পারছে না। আর এখানেই সাহায্যের হাত এগিয়ে দিচ্ছে আঞ্চলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড দপ্তর।

এ প্রসঙ্গে নবেন্দু বলেন, ‘এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে কর্মীদের নিজস্ব আধার নাম্বার ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নাম্বারের (ইউএএন) সঙ্গে যোগ করতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা হয়নি। রাজ্যে এ ধরনের প্রায় ২৪ হাজার কর্মীর আধার নাম্বার এবং ইউএএন নাম্বার এখনও যোগ হয়নি। এর মধ্যে ১৭ হাজার কর্মীর মোবাইল নাম্বার জোগাড় করা সম্ভব হয়েছে। আমরা আধার ও ইউএএন নাম্বার যোগ করার জন্য প্রতিনিয়ত তাঁদের কাছে মেসেজ পাঠাচ্ছি।’

চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ১০ জুন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শহরে প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্ট থেকে আংশিক টাকা তুলে নেওয়ার ৩৫,৮০৯টি আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। মোট ৯১.১৬ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন গ্রাহকরা। নবেন্দুর কথায়, ‘এর মধ্যে ২১,১৮৮টি আবেদন কোভিড-১৯ পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার আওতায় আংশিক টাকা তুলে নেওয়ার জন্য। ইতিমধ্যেই এই খাতে মোট ৪৭.১০ কোটি টাকা তুলেছেন গ্রাহকরা।’

গোটা রাজ্যে পিএফ অ্যাকাউন্ট থেকে আংশিক টাকা তোলার জন্য জমা পড়া ৭৩,২৯৩টি আবেদনের ১৮৭.৩৯ কোটি টাকা মেটানো হয়েছে। এর মধ্যে কোভিড পরবর্তী অধ্যায়ে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার সুবিধা নিতে ৪৪,৩১০টি আবেদনের ৯৪.৯২ কোটি টাকা মিটিয়েছে ইপিএফও।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kolkata, #central government, #provident Fund

আরো দেখুন